থিয়েটার আমার প্রথম ভালোবাসা: মারিও ভার্গাস য়োসা
Published: 16th, April 2025 GMT
পেরুর ঔপন্যাসিক-নাট্যকার-প্রাবন্ধিক-সমালোচক-সাংবাদিক মারিও ভার্গাস য়োসা জন্মেছিলেন এরিকুইপা শহরে, ১৯৩৬ সালে। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর মা ও নানির কাছে বড়ো হন। ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত বলিভিয়ার কোচাবাম্বায়, ১৯৪৫ থেকে ১৯৪৬ পর্যন্ত পেরুর উত্তরাঞ্চলীয় শহর পিউরায় এবং পরবর্তী বছরগুলো রাজধানী লিমায় বাস করেন। ৮ বছর বয়সের সময় তাঁর বাবা পুনরায় তাঁর মায়ের কাছে ফিরে আসেন। ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত য়োসা সাহিত্য ও আইন বিষয়ে সান মার্কোস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। এর মধ্যেই ১৯৫৫ সালে তিনি জুলিয়া আরকুইদিকে বিয়ে করেন। ১৯৬৪ সালে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।
গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের ওপর তাঁর ডক্টরেট অভিসন্দর্ভ (১৯৭১)-এর পর সাহিত্য সমালোচনা নিয়ে তাঁর একাধিক বই প্রকাশিত হয় যার মধ্যে ফ্লবেয়ারের ‘মাদাম বোভারি’র মতো বইও ছিল। হুলিও কোর্তাজার, কার্লোস ফুয়েন্তেস ও গার্সিয়া মার্কেজ-এর সঙ্গে সঙ্গে য়োসার নামও একইসঙ্গে উচ্চারিত হয়। কারণ লাতিন আমেরিকার সাহিত্য এগিয়ে নিয়ে যেতে এঁদের ভূমিকা অগ্রগণ্য।
পঞ্চাশের দশকে ছাত্র থাকাকালীন য়োসা ‘লা ইন্দ্রান্ত্রিয়া’ পত্রিকায় সাংবাদিকের কাজ করেন। সাহিত্য পত্রিকা ‘কুয়েদারনস্ দ্য কনভারসেসিয়া অ্যান্ড লিটারেচুরা’র সহ-সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর ছোটগল্পের সংকলন ‘লস জিফস’ প্রকাশিত হয় ১৯৫৯ সালে। সে বছরই তিনি প্যারিসে অভিবাসী হন কারণ তাঁর ধারণা ছিল সৃষ্টিশীল লেখক হিসেবে পেরুতে তিনি জীবন চালাতে পারবেন না। যদিও লাতিন আমেরিকান সাহিত্যের অকস্মাৎ জনপ্রিয়তা ও বাজার কাটতি অনেক লেখকের কপাল খুলে দিয়েছিল। ফ্রান্সে য়োসা স্প্যানিশ ভাষার শিক্ষক এবং সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের সাংবাদিক হিসাবে কাজ করেন। ষাটের দশকের শুরুতে বেশ কয়েকটি আমেরিকান ও ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক হিসাবেও তিনি কাজ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি প্যাট্রিসিয়া য়োসাকে বিয়ে করেন।
বর্তমানে তাঁদের দুই পুত্র ও এক কন্যা। ১৯৭০ সালে তিনি বার্সেলোনা চলে যান, সেখানে ৫ বছর থাকার পর পেরু ফিরে আসেন। ১৯৭৭ সালে তিনি ‘আন্তর্জাতিক পেন ক্লাব’-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের প্রার্থী হিসাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এবং জাপানী বংশোদ্ভূত কৃষি প্রকৌশলী আলবার্তো ফুজিমোরির কাছে পরাজিত হন।
২০১০ সালে নোবেল সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত য়োসা লাতিন আমেরিকার শ্রেষ্ঠ লেখকদের একজন। জীবনে তিনি অনেক সম্মানজনক সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেছেন। গত ১৪ এপ্রিল রাজধানী লিমায় ৮৯ বছর বয়সে তিনি মারা যান। এই সাহিত্যিকের প্রয়াণের মধ্য দিয়ে লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের সোনালি যুগের প্রজন্মের অবসান হলো। য়োসার এই সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছিলেন এম এলভিরা এসকুদেরো এলিমুন। অনুবাদ করেছেন শরীফ আতিক-উজ-জামান।
প্রশ্ন: এখনও পর্যন্ত লেখক হিসাবে আপনার আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা কী? অসন্তুষ্টিই বা কী যা না ঘটলে ভালো হতো বলে মনে হয়?
মারিও ভার্গাস য়োসা: সত্যি কথা বলতে, আমার আনন্দদায়ক অনুভূতির ঘটনা অনেক। যখন আমি কোনো উপন্যাস লেখার কাজে হাত দেই এবং একসময় তা শেষ করি তখন ভীষণ আনন্দিত হই। যদিও এটা নেহায়েতই একান্ত ব্যক্তিগত অনুভূতি, কিন্তু শেষমেষ আমার মনে হয়, এই কাজের জন্যই লোকে আমাকে বেশি বেশি করে ধন্যবাদ দেয়। আর অসন্তুষ্টি বা বাজে অভিজ্ঞতার কথা যদি বলি, তাহলে অনেকের মতো আমার জীবনেও সেগুলো যথেষ্ট আছে। তবে তা আমার সাহিত্যের সাথে নয়, কর্মপন্থার সাথে সম্পৃক্ত। আর কর্মপন্থা হলো সক্রীয়তা যা কোনো দেশের নাগরিক এড়িয়ে চলতে পারেন না। আমি মনে করি, রাজনীতিতে অংশগ্রহণ একজন নাগরিকের জন্য অপরিহার্য। কিন্তু সেইসাথে মনে রাখা দরকার কর্মপন্থা খুব প্রীতিপ্রদ কিছু নয়। কারণ প্রায় সময়ই তা খারাপ দিকগুলো মানুষের কাছ থেকে আড়াল করে রাখে, আর এই ব্যাপারগুলোই গত কয়েক বছর ধরে আমি খেয়াল করে আসছি। যখন কোনো কাজ শুরু করি, রাষ্ট্রীয় কর্মপন্থা (পলিসি) আমাদের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। আমার মতো পরিস্থিতিতে যারা পড়েছে তাদের সবার একই রকমের অভিজ্ঞতা হয়েছে.
প্রশ্ন: আপনার মতো অনেককেই এখন বলতে শোনা যায় প্রতিবাদ করতে ‘নিজের পাশব-সত্তাকে ব্যবহার কর’; আপনি বলেছেন যে, একমাত্র লেখকই সবসময় প্রতিবাদ করেন, সমালোচনা করেন। আপনি একজন সফল, সর্বজন সম্মানিত ও অতিপ্রজ লেখক, আপনার কাছে আমার জানতে ইচ্ছে করছে- এত লেখার পরও আপনার মাঝে ব্যবহার করার মতো দানবীয় শক্তি অবশিষ্ট আছে কি? লেখকের দায়িত্বের কি কোনো শেষ নেই, তার দায়িত্ব কি অন্তহীন?
মারিও ভার্গাস য়োসা: দেখো, সব লেখকের ক্ষেত্রে এমনটা হয় না, কিছু কিছু লেখক আছেন যারা হঠাৎ করে মৌন হয়ে যান; তখন আমার মনে হয়, যে কারণেই হোক, তাদের এই অকস্মাৎ নীরবতার মানে হলো, তারা পার্থিব জগৎ, সময়, সমকালীনতার সঙ্গে সম্পর্ক সঙ্গতিপূর্ণ করে নিয়েছেন। কারণ প্রতিবাদ করাটা তারা আর প্রয়োজন মনে করছেন না। তাই কে কী লিখছেন বা কোন শিল্পী কী আঁকছেন তা নিয়ে তারা আর মাথা ঘামাতে চাইছেন না, তাই নয় কি? কিন্তু আমার বেলায় অন্তত এখনও পর্যন্ত এমনটি ঘটেনি, আমার প্রচুর পরিকল্পনা রয়েছে যা থেকে আরো পরিকল্পনা মাথায় আসতে পারে, তবে সেগুলো শেষ করার মতো যথেষ্ট সময় পাবো কিনা কে জানে, তবে নিশ্চিত এতে করে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাওয়ার একটা প্রবণতা তৈরি হয়। জীবনে মৃত্যুর ধারণা ঠিক তেমন হবে, যা এখনও পরিকল্পনা করিনি বা তীব্র আকাঙ্ক্ষার আন্তর তাগিদও অনুভব করিনি।
প্রশ্ন: মাঝে মাঝে আপনি বলতেন যে, থিয়েটার আপনার প্রথম ভালোবাস, আপনি কি তাতে ফিরে যেতে চান?
মারিও ভার্গাস য়োসা: হ্যাঁ, তোমাকে তো বলেছি, আমার অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। এত পরিকল্পনা যে সব শেষ করার সময় পাবো কিনা জানি না। আর এগুলোর মাঝে থিয়েটারও রয়েছে, কারণ থিয়েটার আমার প্রথম ভালোবাসা। প্রথম এই কারণে যে, কম-বেশি আন্তরিকতার সাথে প্রথম আমি নাটকই লিখেছি এবং যথেষ্টই লিখেছি, কিন্তু কখনও এর জন্য কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারিনি। সাহিত্যের এই মাধ্যমটি আমি পছন্দ করি, বর্ণনাত্মক ফর্ম থেকে আলাদা; দীর্ঘদিন উপন্যাস লেখার পর আবার নাটকে ফিরে যাওয়া নতুনভাবে উজ্জীবিত হওয়ার মতো একটা ব্যাপার, কি বলো? আমার একটা পরিকল্পনা আছে নাটকে আরো বেশি সময় দেওয়ার এবং এই উপন্যাসটা শেষ হওয়ার পর একটা নাটক লিখব ভাবছি।
প্রশ্ন: গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ আপনাদের মাঝে যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল তা মিটিয়ে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন, সেক্ষেত্রে আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
মারিও ভার্গাস য়োসা: দেখো, এটা বেশ আগের ঘটনা এবং ব্যক্তিগতও, লেখকের সাহিত্য-জীবন বা জনজীবনের সঙ্গে এর তেমন কোনো সম্পর্ক নেই, আমার মনে হয় এ বিষয়ে আর না এগুনোই ভালো।
প্রশ্ন: ভাবুক চরিত্রে আপনার আকর্ষণ বেশি, এরা আপনাকে প্রভাবিতও করে, আপনার উপন্যাস ও নাটকে এদের প্রচুর সমাবেশ দেখা যায়। যাদের কথা এখন মনে পড়ছে যেমন-মেটা, এলদো ব্রনেলি, কনসেলহেইরো, জাভালিটা, প্যান্টালিও, লিতুমা, চুঙ্গা এবং একই কথা খাটে ফ্লোরা ট্রিশান ও পল গগ্যাঁর ক্ষেত্রে। কীভাবে আপনি এসব চরিত্রদের পছন্দ করেন, নাকি তারা আপনাকে পছন্দ করে?
মারিও ভার্গাস য়োসা: আমি বিশ্বাস করি, একজন লেখক নির্দিষ্ট কিছু বিষয় ও নির্দিষ্ট কিছু চরিত্র বেশি করে পছন্দ করে থাকেন, এরা বারংবার তাঁর লেখায় এসে পড়ে, তবে তাদের দ্বারা প্রভাবিত হলে ভুল ধারণা জন্মায়। আমার ধারণা হলো, লেখার জন্য একটা বিষয় নির্বাচন অকারণ নয়, কারণ আমি বিশ্বাস করি যখন একটি বিষয় লেখার জন্য নির্বাচন করা হয় তা কোনো না কোনোভাবে হৃদয়কে স্পর্শ করে, অথবা এটা এমন কোনো সমস্যা-সম্পর্কিত যা গুরুত্বপূর্ণ কোনো কিছুকে থামিয়ে দেয় অথবা কোনো শূন্যতা পূরণ করে, কারণ ওই বিষয়ের সাথে, ওই চরিত্রের সাথে আরো অনেক কিছু চেনা হয়ে যায়, যাদের না চিনেই একজন তার সাথে পথ চলে, সামনে থেকে খুঁজতে থাকে। অন্তত আমার কথা আমি বলতে পারি যে, যখনই আমি কোনো বিষয় নির্বাচন করি আমার ওই ধরনের অনুভূতি কাজ করে এবং যে বিষয় বেছে নেই তা আগে থেকে আমাকেই বেছে নিয়ে বসে থাকে।
প্রশ্ন: প্রবাদ আছে প্রত্যেক মহান পুরুষের পিছনে একজন মহান নারীর অবদান থাকে, প্যাট্রিসিয়ার প্রতি আপনার শ্রদ্ধা দেখে আমার এ বিষয়ে নিশ্চিত প্রতীতী জন্মেছে; বিষয়টা একটু খুলে বলবেন কি?
মারিও ভার্গাস য়োসা: কোনো সন্দেহ নাই, সত্যি বলতে কি আমার স্ত্রী আমাকে দারুণভাবে সহযোগিতা করে, ত্রিশ বছরের কিছু বেশি হবে আমরা বিয়ে করেছি, আমার অনেক কাজে সে প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রেখেছে; কিন্তু আমি যেন বেশী করে লেখায় সময় দিতে পারি আমাকে সেই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সমস্ত অপ্রিয় কাজের দায়ভার সে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে, সংসারের ভিতর বাইরের সমস্ত কাজকর্ম থেকে আমাকে রেহাই দিয়েছে, আমার সময়টা যেন আমি ঠিকঠাক মতো ব্যবহার করতে পারি, বেশি সময় লিখতে পারি সেজন্য আমার দেওয়া নানা প্রতিশ্রুতিও সে-ই রক্ষা করে থাকে। আসলে সত্যি বলতে কি প্যাট্রিসিয়াকে ধন্যবাদ দেওয়ার মতো ভাষা আমার জানা নেই।
প্রশ্ন: যে ধরনের সরকার পদ্ধতি, সংস্কৃতি বা ব্যক্তি আপনি পছন্দ করেন তা কেমন?
মারিও ভার্গাস য়োসা: আহ্, আমি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি স্বাধীনতা। বিশ্বাস করি স্বাধীনতা এতই মৌলিক যে, জীবন অর্থবহ হয়ে ওঠে, একজন ব্যক্তি তার সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারে, নিজের বৃত্তি অনুযায়ী নিজের পছন্দসই জীবন গড়ে নিতে পারে। সাধারণতঃযখন আমরা স্বাধীনতার কথা বলি তখন আমরা কোনমতেই বৈধতার কথা ভুলতে পারি না যা ছাড়া গণতন্ত্র অর্থহীন হয়ে পড়ে। আমি বিশ্বাস করি, গণতন্ত্র ও বৈধতার মণিকাঞ্চন যোগ হলো সভ্যতার চালিকাশক্তি। আমি মনে করি, সমাজ জানে কীভাবে এই দুইয়ের সম্মিলন ঘটাতে হয়। কারণ সমাজ আজ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে যথেষ্ট এগিয়েছে, যথেষ্ট শিল্পায়ন হয়েছে, মানবাধিকার স্বীকৃতি পেয়েছে এবং তার নাগরিকদের জন্য ভালো সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করতে পেরেছে। অবশ্য একবারে উৎকৃষ্ট সমাজ খুঁজে পাওয়া যাবে না, তারপরও আমি বিশ্বাস করি, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই সর্বপেক্ষা উৎকৃষ্ট এবং ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় সব সমাজ-ব্যবস্থার মধ্যে গণতন্ত্রই বেশীমাত্রায় এগিয়েছে, গণতন্ত্রই বেশি করে নৈরাজ্য, অবিচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে, তাই না?
প্রশ্ন: এখন মন্তেসিনোস ক্যালাওয়ে বন্দী এবংফুজিমোরির কাজে ভালো কিছুর ব্যাপক প্রত্যাশা রয়েছে, মন্তেসিনোস ও ফুজিমোরির স্বৈরশাসন সম্পর্কে আপনার সমালোচনাকে পক্ষপাতিত্বমূলক বলে যারা বালখিল্য যুক্তি দেখিয়েছিল তার বিরুদ্ধে আপনার মন্তব্যের যথার্থতা প্রমাণিত হয়েছে বলে আপনি মনে করেন, ফুজিমোরির চেয়ে কম ভোট পাওয়ার ক্ষত এখনও অনুভব করেন কি?
মারিও ভার্গাস য়োসা: কিছুটা তো করি। পেরুতে বিগত কিছু বছর ধরে যারা স্বৈরতন্ত্রের সমালোচনা করে তারা সংখ্যায় অল্প। পেরুর বেশিরভাগ মানুষ যে ধারণা পোষণ করত তা হলো এই মহাশক্তিধর ব্যক্তি তাদের সব সমস্যার সমাধান করতে পারবে। এখন মনে হয় তারা দুঃখজনকভাবে হলেও উপলব্ধি করেছে, একজন স্বৈশাসককে সমাদর করে ক্ষমতায় বসানোর ফল কত খারাপ হতে পারে। বিগত বছরগুলোতে যে ধরনের সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে, ভয়ংকর রকমের অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে, মানুষ ন্যায়বিচার বঞ্চিত হয়েছে পেরুর ইতিহাসে তার কোন নজির নেই। পেরুবাসী এই দুঃসহ স্মৃতি কখনো ভুলবে না এটা আশা করা যায়। আর তাই এখন গণতান্ত্রিক পদ্ধতি সমর্থন করার সময় এসেছে, সময় এসেছে অতীতের ক্ষতি পুষিয়ে নেবার এবং সবাই আশা করে পেরুবাসীর জীবনে এইরকম সংকটকাল যেন আর না আসে।
তারা//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ত ন আম র ক ব শ ব স কর গণতন ত র উপন য স ব দ কর ক জ কর র জন য প রথম র সময় আপন র গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষটি এতো দ্রুত চলে যাবেন ভাবিনি: বুবলী
বাংলা সিনেমা ও নাটকের পরিচিত মুখ অভিনেত্রী গুলশান আরা আহমেদ মারা গেছেন। মঙ্গলবার ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিচালক এম রাহিম।
তিনি বলেন, ‘অভিনেত্রী শুলশান আরা আহমেদ আজ সকালে ইন্তেকাল করেছেন। সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত জংলি সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। শুলশান আরা আজীবন আমাদের পরিবারেরই একজন হয়ে থাকবেন।’
সবশেষে ‘জংলি’ সিনেমার নায়িকা শবনম বুবলীর মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন শুলশান আরা। পর্দার মায়ের মৃত্যুর খবরে বাকরুদ্ধ এই অভিনেত্রী।
শোক প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বুবলী লিখেছেন, “গুলশান আরা আন্টি আর নেই। কত স্মৃতি আন্টি আপনার সঙ্গে। এমনকি সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জংলি’ সিনেমাতেও আপনি পর্দায় আমার মা এর ভূমিকায় ছিলেন। কত স্নেহ করতেন আমাকে সবসময়। এতো তাড়াতাড়ি চলে গেলেন আন্টি। যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন আন্টি। সবাই তাঁর আত্মার মাগফেরাতের জন্য দোয়া করি। আল্লাহ যেন আন্টিকে বেহেশত নসিব করেন।”
গুলশান আরা ২০০২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় শুরু করেন। তিনি নিজেকে একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। সেই ইচ্ছা থেকেই গুলশান আরা প্রথম অভিনয় করেন প্রয়াত এনায়েত করিম পরিচালিত ‘কদম আলী মাস্তান’ চলচ্চিত্রে।
এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ‘চরিত্র’, ‘ডনগিরি’, ‘ভালোবাসা আজকাল’, ‘পোড়ামন’ এর মতো জনপ্রিয় সব ছবি। সবশেষে এবার ঈদে মুক্তি পায় তার অভিনীত সিনেমা ‘জংলি’।