মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, যান চলাচল বন্ধ
Published: 16th, April 2025 GMT
পর্যাপ্ত ওয়ার্ড সুবিধা না দেওয়ার প্রতিবাদে ও দ্রুত হাসপাতাল চালুর দাবিতে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মদনপুর এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। এর আগে, গতকাল একই দাবিতে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষা-কার্যক্রম চালু হলেও হাসপাতাল চালু না হওয়ার ক্লিনিক্যালি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস করতে হয়। কলেজের নিজস্ব হাসপাতাল চালু না থাকায় এই ক্লাসগুলো জেলা সদর হাসপাতালে সপ্তাহে দুদিন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু, কলেজ থেকে হাসপাতালটির দূরত্ব প্রায় ১৩ কিলোমিটার। যাতায়াতের জন্য কলেজের কোনো বাস নেই। ফলে নিয়মিত ক্লাসে অংশ নিতে সমস্যা হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
অপহরণের ৩ দিন পর স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
শেরপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সেবায় ছাত্রদল
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ভবন প্রস্তুত হলেও চালুর ক্ষেত্রে গড়িমসি চলছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দাবি মেনে না নিলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এদিকে মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে সদর উপজেলার পার্শ্ববর্তী শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুকান্ত সাহা ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে অবরোধ প্রত্যাহারে অনুরোধ জানালেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো.
ঢাকা/মনোয়ার/রাজীব
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন মগঞ জ কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
ইউএপিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল জামিলুর রেজা চৌধুরী স্মরণে আন্তবিশ্ববিদ্যালয় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিযোগিতা
প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী স্মরণে প্রথমবারের মতো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-বিষয়ক প্রতিযোগিতা─‘জেআরসি মেমোরিয়াল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনটেস্ট: CENOVUS 1.0’ গত শনিবার (১২ এপ্রিল ২০২৫) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) পুরকৌশল বিভাগের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্টস ফোরাম (সিইএসএফ) এ আয়োজন করেছিল। আয়েোজনে অ্যাসোসিয়েট পার্টনার হিসেবে ছিল প্রথম আলো। দিনব্যাপী এই আয়োজনে সারা দেশের ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ধাপ ও পর্বে নিজেদের নিবন্ধন অনুযায়ী অংশগ্রহণ করেছেন। এই আয়োজনে দেশব্যাপী পুরকৌশল শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় মুখর ছিল ইউএপির নিজস্ব ক্যাম্পাস।
শনিবার সকাল ৯টায় এই চমৎকার আয়োজনের পর্দা ওঠে এবং বিকেলে পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দেশের স্বনামধন্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যক্তিত্ব ও ইউএপির ইমেরিটাস অধ্যাপক এম শামীম জামান বসুনিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রথম আলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মুনির হাসান। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান স্থপতি মাহবুবা হক, উপাচার্য কামরুল আহসান, স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন জি আর আহমেদ জামাল, পুরকৌশল বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নেহরীন মাজেদসহ অন্য সম্মানিত ফ্যাকাল্টি সদস্যরা। পুরো অনুষ্ঠানের থিমজুড়ে এবং আলোচনা সভায় প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর স্মরণে বিশেষ আলোকপাত করা হয়।
CENOVUS 1.0 পুরকৌশল দক্ষতাবিষয়ক মোট সাতটি পর্ব—ট্রাসেল ম্যানিয়া, গণিত অলিম্পিয়াড, পোস্টার বোর্ড, মেকানিকস মাস্টার, ক্যাড সুপারিয়র, ফটোনোভাস ও কুইক বাজ আয়োজিত হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন পর্ব মিলিয়ে সম্পূর্ণ প্রতিযোগিতার মোট প্রাইজমানি নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই আয়োজনে ভিন্ন ভিন্ন পর্বে অসামান্য দক্ষতা দেখিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন যথাক্রমে ডুয়েটের মো. জামিল মাহমুদ আবদুল্লাহ (মেকানিকস মাস্টার-সিনিয়র) ও টিম ট্রাফিক ট্রেকটিসিয়ানস মো. জাকির হোসেন (পোস্টার বোর্ড), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইফতেখারুল ইসলাম মুন্না (ফটোনোভাস), কুয়েটের আবিদ হাসান (গণিত অলিম্পিয়াড), সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের টিম ব্রিজ ব্লিন্ডার্স মো. এহসানুল হক, মো. হৃদয় হোসেন ও মো. শাফিউল আলম শুভ (ট্রাসেল ম্যানিয়া) এবং ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের সাইদুর রহমান (অটোক্যাড), সাইমুম হাসান (মেকানিকস মাস্টার-জুনিয়র), টিম নো ব্রেইনারসের মো. কামরুল হাসান হৃদয় ও মো. মিজানুর রহমান (কুইজ)। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিরা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার ও প্রাইজমানি তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা বিশেষ আলোচনা সভা ও শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী স্যারকে স্মরণে রেখে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। প্রধান অতিথি ও দেশবরেণ্য পুরকৌশল ব্যক্তিত্ব, ইউএপি সিভিলের ইমেরিটাস অধ্যাপক শামীম জামান বসুনিয়া বলেন, আন্তবিশ্ববিদ্যালয় পুরকৌশল প্রতিযোগিতার চিন্তাভাবনা জে আর সি স্যার দেন আরও ৮-১০ বছর আগে। সেই অনুসারেই তাঁর স্মরণে ইউএপিতে এ ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। জে আর সি স্যার বলে গেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কেউ নোবেল পুরস্কার পাবেন গবেষণালব্ধ কাজের জন্য। CENOVUS-এর মতো প্রতিযোগিতার কোনো এক বিজয়ীই হয়তো দেখা গেল সেই সম্মানের অধিকারী হতে পেরেছেন। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি এ ধরনের প্রতিযোগিতা খুবই প্রয়োজনীয়তা বহন করে।
অনুষ্ঠানটির বিশেষ অতিথি প্রথম আলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মুনির হাসান বলেন, ‘জে আর সি স্যার যখন বুয়েট কম্পিউটার সেন্টারের পরিচালক, তখন থেকেই স্যারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। স্যার বলে গিয়েছেন, “If you have integrity, nothing else matters.” প্রতিযোগিতাও একই অর্থ বহন করে। যত বেশি নিজেকে এগিয়ে রাখা যায়, ভবিষ্যতের জন্য তত তৈরি হওয়া যায়।’
ইউএপির স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন জি আর আহমেদ জামাল বলেন, জে আর সি স্যার মারা যাওয়ার পাঁচ বছর পর এসেও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট তাঁর রেখে যাওয়া ঐতিহ্য ও পদচিহ্নকে ধারণ করেছে। গুরুকে অনুসরণ করার এই দৃষ্টান্ত বর্তমান সময়ে নজিরবিহীন বটে। Cenovus নামের সঙ্গে 1.0 সংখ্যাটি একটা লক্ষ্য প্রকাশ করছে, যা আগামী বছরগুলোতেও ধারাবাহিকভাবে এই আয়োজনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় বহন করে।
CENOVUS 1.0-এর আয়োজন ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে কাজ করেছে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক কর্তৃপক্ষ ও ইউএপি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্টস ফোরাম (সিইএসএফ) এবং সহযোগী হিসেবে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়টির পুরকৌশল বিভাগের সহশিক্ষা কার্যক্রমের সহায়ক ৯টি ক্লাব, যথাক্রমে ACI-UAP স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার, এনভায়রনমেন্ট ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ক্লাব, জিওটেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ক্লাব, সিই ম্যাথ ক্লাব, স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং ক্লাব, ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ক্লাব, আর্ট ও ফটোগ্রাফি ক্লাব, সিই কালচারাল ক্লাব-চিহ্ন, সিই স্পোর্টস ক্লাব।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা ও পুরকৌশল বিষয়ে অর্জিত জ্ঞান ভাগাভাগি করে নেওয়ার লক্ষ্যে প্রয়াত জামিলুর রেজা চৌধুরীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রথমবারের মতো আয়োজনটি সফল হয়েছে, যা আগামী বছরগুলোতেও ধারাবাহিকভাবে চলমান থাকবে।