কুয়েটে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল
Published: 16th, April 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে তাঁরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দুর্বার বাংলা’ ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে আবাসিক হলসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেছে।
মিছিল থেকে শিক্ষার্থীরা—‘দফা এক, দাবি এক, কুয়েট ভিসির পদত্যাগ’; ‘কুয়েট ভিসির গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’; ‘স্বৈরাচারের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’; ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’; ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়; ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’; ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’; ‘সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত, মানি না, মানব না’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা কুয়েটের প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিসংবলিত পোস্টার সাঁটান।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে কুয়েট স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা দেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন ঘোষণাপত্রটি পড়ে শোনান। ঘোষণাপত্রটি পাঠ করার পর শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হলের তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করার ঘোষণা দেন। এরপর বেলা আড়াইটা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা কুয়েটের ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে ফেলেন। এ সময় ১০০ থেকে ১৫০ শিক্ষার্থী হলগুলোতে অবস্থান নেন।
এর আগে সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। তবে গতকাল কুয়েটের দাপ্তরিক কর্যক্রম শুরু হয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এদিকে আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে আন্দোলন আবারও দানা বাঁধতে থাকে। গত সোমবার রাতেও শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে রাত্রি যাপন করেন। সর্বশেষ গতকাল দুপুরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন এবং তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুয়েটের ভিসির পদত্যাগের এক দফা ঘোষণা, হলগুলোর তালা ভাঙছেন আন্দোলনকারীরা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটার সময় কুয়েট স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন। এদিকে আজ কুয়েটের দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন ঘোষণাটি পড়ে শোনান। ওই ঘোষণায় বলা হয়, ‘যেহেতু ভিসি কুয়েট শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যেহেতু ভিসি ব্যর্থতার দায় নিতে অস্বীকার করেছে, যেহেতু ভিসি নেট পানি অফ করে হল থেকে বের করে দিয়েছে, যেহেতু ভিসি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে ইন্ধন জুগিয়েছে, যেহেতু ভিসি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করেছে, সেহেতু আমরা ছয় দফা থেকে এক দফা ঘোষণা করছি। এই ভিসিকে অপসারণ আমাদের একমাত্র দাবি। একই সঙ্গে নতুন ভিসির অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’
ঘোষণাপত্রটি পাঠ করার পর শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হলের তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করার ঘোষণা দেন। এরপর পরপরই শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে খান জাহান আলী হলের দিকে যান। সেখানকার প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ফেলেন। এরপর তাঁরা অন্য হলের তালা ভাঙছিলেন।
এর আগে ক্যাম্পাসের ভাস্কর্য দুর্বার বাংলার পাদদেশে বেলা একটার দিকে সমাবেশ করে ‘মেক কুয়েট, ফ্রি এগেইন’ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা হল খুলে দেওয়ার দাবি জানান। হল খুলে দেওয়ার দাবিসংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। তাঁরা এখনই প্রশাসনের কাছে বহিষ্কার হওয়া ৩৭ শিক্ষার্থীর সবার নাম প্রকাশ করার দাবি জানান। বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে স্লোগান দিতে দিতে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবনগুলোর সামনে গিয়ে হ্যান্ড মাইকে শিক্ষকদের কাছে হলে ঢোকার সহায়তার আহ্বান জানান।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলায় প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী রক্তাক্ত হন। আমাদের ওপর গুলি চালানো হয়। এর প্রতিবাদে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা বিচারের দাবি করলে বিচারের নামে নাটক করে দুই মাস পর কুয়েটের ৪২ জন প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। এরপর গতকাল সোমবার সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তেও বহিষ্কারের নামে নাটক করে প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদেরও বহিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এসব নাটক আর সহ্য করা হবে না। আমাদের ধৈর্যের সীমা পার হয়ে গেছে। আজ তিন দিন ধরে আমরা খোলা আকাশের নিচে মশার কামড় খেয়ে কষ্ট সহ্য করছি।’
এর আগে গতকাল সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনায় প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করাসহ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য গঠিত কমিটি গত রোববার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নগরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোসেন আলী নামের এক ব্যক্তি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলা করেন।