সুদানে প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার ঘোষণা করেছে আধা সামরিক বাহিনী আরএসএফ
Published: 16th, April 2025 GMT
সুদানে সামরিক সরকারের প্রতিদ্বন্দ্বী আরেকটি সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। আফ্রিকার দেশটিতে প্রায় দুই বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে আরএসএফের ওই লড়াই সেখানে চরম মানবিক সংকট তৈরি করেছে।
প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার গঠনের ঘোষণার পর আরএসএফ প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বলেছেন, কেবল তাঁরাই সুদানের জন্য একটি বাস্তবসম্মত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ করতে পারবেন। মোহাম্মদ হামদান দাগালো সবার কাছে জেনারেল হেমেদতি নামে পরিচিত।
সুদানে গৃহযুদ্ধের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে লন্ডনে গতকাল মঙ্গলবার উচ্চপর্যায়ের একটি সম্মেলন হয়েছে। সেখানে সুদানে লড়াইরত সব পক্ষকে শান্তির পথে হাঁটার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি। জেনারেল হেমেদতি বলেছেন, আরএসএফ এমন একটি দেশ নির্মাণ করছে, যেখানে কোনো ব্যক্তির শাসন নয়; বরং আইনের শাসন থাকবে।
আরও পড়ুনদুই বছর পর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের আবার নিয়ন্ত্রণ নিল সুদানের সেনাবাহিনী২২ মার্চ ২০২৫টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে হেমেদতি আরও বলেন, ‘আমরা ঐক্য চাই, আধিপত্য নয়। সুদানি সত্তার ওপর কোনো জাতি, অঞ্চল বা ধর্মের একক আধিপত্যে আমরা বিশ্বাস করি না।’
হেমেদতি বলেন, তাঁর সরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো জরুরি পরিষেবা দেবে এবং সেটা শুধু তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকার মানুষের জন্য নয়; বরং পুরো দেশের মানুষের জন্য।
সুদানে দুই বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে সামরিক বাহিনী ও আরএসএফ উভয়ের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং ব্যাপকভাবে যৌন নিপীড়ন চালানোর মতো যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুনসুদানে জেনারেলদের এই যুদ্ধে কেউ কি জয়ী হবে?৩০ এপ্রিল ২০২৩সুদানের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের সঙ্গে একসময়ে তাঁর সহকারী আরএসএফের প্রধান জেনারেল হেমেদতির ক্ষমতার দ্বন্দ্বে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। দুই বছরে যুদ্ধে দেড় লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুহারা হয়েছেন ১ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ।
আরও পড়ুনদুই জেনারেলের ক্ষমতার দ্বন্দ্বে রক্তাক্ত সুদান২৪ এপ্রিল ২০২৩.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ বন দ ব দ ই বছর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যাত্রী সংখ্যায় ২০১৯ সালকে ছাড়াল বিমান পরিবহন খাত, করোনার পর এই প্রথম
অবশেষে মহামারির প্রভাব কাটিয়ে উঠেছে বিশ্বের বিমান পরিবহন খাত। ২০২৪ সালে বিমানে চলাচল করা যাত্রীর সংখ্যা ২০১৯ সালের স্তর অতিক্রম করেছে।
এয়ারপোর্ট কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনাল (এসিআই) ওয়ার্ল্ডের প্রকাশিত প্রাথমিক তথ্যানুসারে, গত বছর প্রায় ৯৫০ কোটি যাত্রী উড়োজাহাজে ভ্রমণ করেছে। ২০১৯ সালের কোভিড-১৯ মহামারি সময়ের তুলনায় যা ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালের তুলনায় যা ৯ শতাংশ বেশি। খবর সিএনএন।
প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত ১০ বিমানবন্দরের তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে। সেই তালিকায় এবারও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন আটলান্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য জর্জিয়ার রাজধানী আটলান্টায় অবস্থিত ডেলটা এয়ারলাইনস হাবটি ২৭ বছরের মধ্যে ২৬ বার শীর্ষস্থান দখল করেছে। গত বছরের মতো এবারও দ্বিতীয় স্থানে আছে আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তৃতীয় স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস ফোর্ট ওয়ার্থ।
চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে জাপানের রাজধানী টোকিওর হানেদা ও যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর। যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে ষষ্ঠ স্থানে।
সপ্তম ও অষ্টম স্থানে আছে যথাক্রমে তুরস্কের ইস্তানবুল ও যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো ও’হেয়ার বিমানবন্দর। নবম স্থানে আছে ভারতের নয়াদিল্লি বিমানবন্দর। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজ বহরের সম্প্রসারণ, অবকাঠামোর উন্নয়ন ও বৈশ্বিক সংযোগ বৃদ্ধির কারণে ইস্তানবুল ও নয়াদিল্লি বিমানবন্দরের দ্রুত সম্প্রসারণ হচ্ছে।
বিমানবন্দরগুলোর প্রবৃদ্ধির বিষয়ে এসিআই ওয়ার্ল্ডের মহাপরিচালক জাস্টিন এরবাচি বলেন, ‘ভবিষ্যতে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হবে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে; ভারত, চীন, লাতিন আমেরিকা ও কিছুটা আফ্রিকায়। উন্নত দেশগুলোয় (উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপ) প্রবৃদ্ধির গতি কিছুটা কমবে। শিল্পটি এখনো অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, উড়োজাহাজ কোম্পানিগুলোর উৎপাদন বিলম্বের মতো কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বিশ্বব্যাপী উড়োজাহাজ চলাচল ২০৪৫ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হবে বলে প্রত্যাশা এসিআই ওয়ার্ল্ডের।
নজরে পড়ার মতো অগ্রগতি হয়েছে ১০ম স্থানে থাকা চীনের সাংহাই পুডং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। ২০২৩ সালে ২১তম স্থান থেকে ৪১ শতাংশ যাত্রী বৃদ্ধির মাধ্যমে একলাফে ১০ম স্থানে উঠে এসেছে এই বিমানবন্দর।
২০২৪ সালে বিমানের যাত্রী বাড়লেও এসিআই বলছে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ভূরাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, বিমান কোম্পানিগুলোর উৎপাদনে বিলম্বসহ আরও কিছু কারণে এই খাত গত বছর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। চলতি বছর যেভাবে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ছে, তাতে এবার কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তা দেখার অপেক্ষায় আছে এই খাত।
করোনা মহামারির সময় মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে সবচেয়ে আক্রান্ত হয় বিমান চলাচল খাত। ২০২০ সালে এই খাতের ক্ষতি হয় ১৭৫ বিলিয়ন বা ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। এরপর ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে এই খাত। টিকাদান ও পরবর্তী পর্যায়ে কোভিড-১৯ আর বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে বিবেচিত না হওয়ায় বিমান চলাচল বেড়েছে।