সাবেক দুই এমপি-আইজিপি-ওসি রিমান্ডে
Published: 16th, April 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকেন্দ্রিক পৃথক তিন মামলায় ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) নবী নেওয়াজ, ভোলা-৪ আসনের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসানের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান তাদেরকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর ভাটারা থানাধীন নতুন বাজার এলাকায় হোটেলের কর্মচারী রোহানকে হত্যাচেষ্টার মামলায় আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক হাফিজুর রহমান তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আদালত তার উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। বুধবার শুনানিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। জ্যাকবের পক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে জামিন আবেদন করেন। পরে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকালে রাজধানীর রমনা এলাকায় গৃহকর্মী লিজা আক্তারকে গুলি করে হত্যার মামলায় ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক এমপি নবী নেওয়াজের (৫৯) পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
১২ এপ্রিল মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। তবে, মামলার মূল নথি না থাকায় আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে ১৬ এপ্রিল রিমান্ড শুনানির তারিখ রাখেন। বুধবার শুনানিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। নবী নেওয়াজের পক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। গত ১১ এপ্রিল নবী নেওয়াজকে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষমবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই রাজধানীর রমনা থানাধীন এলাকায় গৃহকর্মী লিজা আক্তার গুলিতে আহত হন। ২২ জুলাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় ৫ সেপ্টেম্বর লিজা আক্তারের বাবা মো.
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে শাওন তালুকদার নামের এক ব্যক্তি গুলিতে নিহত হওয়ার মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের তিন দিন এবং যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসানের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আদালত তাদের উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। এদিন শুনানিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। তবে আবুল হাসানের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। পরে আদালত চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের তিন দিন এবং আবুল হাসানের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ৫ আগস্ট বিকেলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন শাওন তালুকদার। পরে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়।
ঢাকা/মামুন/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ জ র কর আইনজ ব ন কর ন তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
আদালতের ভেতরে পুলিশকে মারধর, বিএনপির ৬ নেতাকর্মী আটক
পাবনায় আদালতের ভেতরে শুনানি চলাকালে ভিডিও ধারণ করতে বাধা দেওয়ায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিএনপির ৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃতরা হলেন- ঈশ্বরদী উপজেলা সদরের ফতে মোহাম্মদপুর নিউ কলোনী এলাকার মৃত আব্দুল ওহাবের ছেলে আওয়াল কবির (৩৮), হাবিবুর রহমানের ছেলে সরোয়ার জাহান শিশির (৩৩), দাশুড়িয়া গ্রামের মৃত আমজাদ খানের ছেলে কালাম খান (৪০), এম এস কলোনী এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে রুবেল হোসেন (৩৩), লোকোসেড গাউছিয়া মসজিদ এলাকার মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে সবুজ হোসেন (৩৫) এবং ভাঁড়ইমারী বাঁশেরবাদা গ্রামের মৃত আব্দুল গাফফার সরদারের জহুরুল ইসলাম (৩৫)।
তাদের মধ্যে আওয়াল কবির ঈশ্বরদী পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক, সরোয়ার জাহান শিশির পৌর ছাত্রদলের সভাপতি পদ প্রত্যাশী, কালাম খান দাশুড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, রুবেল হোসেন পৌর ৪নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এবং জহুরুল ইসলাম ডালিম সলিমপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের সদস্য।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর ঈশ্বরদীতে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সময় নাশকতা একটি মামলার শুনানি ছিল। সেই মামলায় আটককৃতরা হাজিরা দিতে এসেছিলেন। হাজিরা চলা অবস্থায় তারা এজলাসে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে থাকেন। এসময় সেখানে থাকা পুলিশ সদস্য শাহ আলম তাদের ছবি তুলতে বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই পুলিশ সদস্যকে মারধর করেন ওইসব নেতাকর্মীরা।
এসময় আদালতের আইনজীবী ও উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করেন এবং হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে আদালতের শুনানি শেষে তাদের আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিদর্শক ( কোর্ট ইন্সপেক্টর) রাশেদুল ইসলাম জানান, সঙ্গে সঙ্গে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে পাবনা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আইনজীবী মাসুদ খন্দকার বলেন, “আদালতের এসলাসে এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়ার মত নয়। বিএনপির কেউ যদি সত্যিই এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/শাহীন/এস