ঢাকার জিগাতলায় পার্ক করে রাখা একটি প্রাইভেটকারের মালিকের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় এক যুবককে আটক করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে তাকে আটক করা হয়।

বুধবার (১৬ এপিল) সকালে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, “আটক ওই যুবকের নাম নাম আশরাফুল আলম। তার বাসা হাজারীবাগ এলাকায়।” 

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা শার্ট পরিহিত আশরাফুল রশিদ বই হাতে একটি প্রাইভেটকারের মালিকের কাছ থেকে টাকা দাবি করছেন। এরপর তার সঙ্গে গাড়িতে থাকা যাত্রীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।

প্রাইভেটকারে থাকা যাত্রীদের একজন চাঁদাবাজি নিয়ে প্রশ্ন তুললে আশরাফুল খুব জোরালোভাবে উত্তর দেন, “হ্যাঁ, করতেছি। কোনো সমস্যা?”

এক পর্যায়ে এক নারী যাত্রী তার নাম জানতে চাইলে তিনি জবাব দেন, “আমার নাম দিয়ে কী করবেন?”

ভিডিওতে আরো দেখা যায়, আশরাফুল যখন দেখেন এ ঘটনার ভিডিও করা হচ্ছে তখন তিনি আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখান।

পরে তিনি টাকা নেন এবং ঘটনাস্থল ত্যাগ করার আগে গাড়ির যাত্রীকে একটি রসিদ দেন।

ঢাকা/এমআর/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আশর ফ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিপাকে চীনের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা, দেশেই বিকল্প বাজার সৃষ্টির চেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কের চাপে পড়েছেন চীনের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা। লাঞ্চ বক্স (খাবারের বাক্স) থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামগ্রীর নির্মাতারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রেডনোটের দ্বারস্থ হচ্ছেন। মার্কিন ক্রেতাদের হারিয়ে তাঁরা স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে ছাড়ে পণ্য বিক্রির প্রস্তাব দিচ্ছেন।

এক সপ্তাহ ধরে চীনের এই উদ্যোক্তারা রেডেনাটে লাইভ স্ট্রিম করছেন। সেটা হলো, তাঁরা মার্কিন ক্রেতাদের জন্য যেসব পণ্য তৈরি করেছিলেন, সেই সব পণ্য স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে বিক্রির জন্য এই কৌশল অবলম্বন করেছেন তাঁরা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে চীনের পণ্যে ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, সেই শুল্কের কোপে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এ রকম এক লাইভস্ট্রিমে দেখা যায়, ডিংডিং ক্লাউড ফরেন ট্রেড ওয়্যারহাউস রাইস কুকার থেকে শুরু করে জুসার ও টোস্টার বিক্রি করছে। ক্রেতাদের উদ্দেশে তাঁদের আহ্বান: যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি ভঙ্গ করেছে। এসব পণ্য আর জাহাজীকরণ করা যাবে না। ফলে সবকিছু এখন ৯০ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি করা হবে।

মুজি হ্যাস গুডস শীর্ষক আরেকটি অ্যাকাউন্ট থেকে বলা হচ্ছে, তাদের গুদামে আর কোনো খালি জায়গা নেই। অনেক ক্রয়াদেশের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো যাচ্ছে না। আবার কোনো বিক্রেতা কোস্টা কফি মগের মতো পণ্য বিক্রি করছেন, যদিও বেশির ভাগ ব্র্যান্ড আন্তর্জাতিক বাজারে অতটা পরিচিত নয়, যেমন ওস্টমার্স ও এপিএলএক্স; এসব পণ্য অ্যামাজনে বিক্রি হয়।

চীন সরকার ইতিমধ্যে জানিয়েছে, যেসব বিক্রেতাদের পণ্য জাহাজীকরণ হচ্ছে না, সেই সব পণ্য দেশের বাজারে বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে। ট্রাম্পের শুল্কের পর তারা এখন দেশীয় বাজারকে মার্কিন বাজারের বিকল্প হিসেবে প্রচার করছে।

এই বিক্রেতাদের তালিকায় আরও আছে জেডি ডটকম ও আলিবাবার মালিকানাধীন সুপারমার্কেট ফ্রেশিপো চীন সরকারের প্রচারণায় যুক্ত হয়েছে। জেডি ডটকম নতুন ট্যাব খুলে জানিয়েছে, দেশের রপ্তানিকারকদের সহায়তায় ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৭৩৫ কোটি ডলারের তহবিল গঠন করা হবে। এই বিক্রেতারা যেন দেশের বাজারে এসব পণ্য বিক্রি করতে পারেন, সে লক্ষ্যে এই প্রচারণা।

চীনের পণ্য বিক্রির বার্ষিক বৃহত্তম মেলা হলো ক্যান্টন ফেয়ার। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের গুয়াংজু শহরে বছরে দুবার এই মেলা হয়। মঙ্গলবার চীনের এই রপ্তানিকারকেরা রয়টার্সকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজার তাঁদের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে।

চীনের এই রপ্তানি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কয়েকটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, এই রোডনোটের লাইভস্ট্রিমের বিষয়ে কিছুটা সন্দিহান। তারা মনে করে, এসব নিছক বিপণন। এক রপ্তানিকারক বলেন, রপ্তানিকারকদের হাতে তো একাধিক বাজারের সন্ধান থাকা উচিত। বিষয়টি হলো, এখন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তাঁরা পণ্য পাঠাতে না পারলে তাঁদের অন্য বাজারে যেতে হবে।

রেডনোটে লাইভস্ট্রিম করা ১২ জন বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে রয়টার্স; কিন্তু তাঁদের কেউই সাড়া দেননি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই প্রচারণা নিছক বিপণন বা যা–ই হোক না কেন, এটা কার্যকর হবে।

ডিজিটাল পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চোজানের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাশলে দুদারেনক রয়টার্সকে বলেন, ‘চীনের এমন একধরনের মনোভাব তৈরি হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই নিপীড়ন বন্ধে আমাদের এক হতে হবে। এই পরিস্থিতিতে চীনের সামাজিক মাধ্যমে “রেসিস্ট” বা “প্রতিরোধ করুন”; “চীন এটা বানাতে পারে” বা “সেভ ফ্যাক্টরি” বা “কারখানা বাঁচাওয়ের” মতো হ্যাশট্যাগ তৈরি হয়েছে।’ ২ এপ্রিল ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করার পর এসব হ্যাশট্যাগের জন্ম।

এর মধ্যেও কেউ কেউ বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপ শেষমেশ ভালো হতে পারে। এ ঘটনায় চীনের ভোক্তাদের মনোভাব চাঙা হতে পারে। এ ঘটনায় যেটা হতে পারে সেটা হলো, মানুষ কেন বেশি বেশি কিনবে, তার যুক্তি তৈরি হবে। কারণ, বিষয়টি এখন আর নিছক ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের মধ্যে সীমিত নয়; বিষয়টি জাতীয় রূপ নিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ