স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি বা এসএমএ নামের দুরারোগ্য বিরল রোগটি নির্ণয়ের পরীক্ষা (টেস্ট) দেশে হতো না। ব্যয়বহুল পরীক্ষাটি ভারতসহ অন্য দেশ থেকে করিয়ে আনতে হতো। প্রথমবারের মতো দেশেই সফলতার সঙ্গে পরীক্ষাটি সম্পন্ন করা গেছে।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের উদ্যোগ ও আন্তরিকতায় এবং রোগটি নিয়ে কাজ করা দেশের একমাত্র সংগঠন 'কিউর এসএমএ বাংলাদেশ' এর সহযোগিতায় অনেকটা অসাধ্যই সাধন হয়েছে দেশে। এতে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ল্যাবরোটারি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার।

টেস্টের রিপোর্ট প্রদান উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে একটি বিশেষ ক্লিনিক অনুষ্ঠিত হয়। এদিন এসএমএ টেস্টের রিপোর্ট রোগীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এই রোগের ক্লিনিক্যাল টেস্ট করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিরল এই রোগের চিকিৎসায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হলো দেশে।

‘নিউরোমাসকুলার ডিজিজ ট্রিটমেন্ট সেন্টার’ বা ‘এসএমএ ক্লিনিক’ নামের এই আয়োজনে বিরল এসএমএ রোগীদের চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ প্রদান করা হয়।

ক্লিনিকে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা.

মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. বদরুল আলম, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ল্যাবরোটারি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ডা. মোহম্মদ শাহেদ আলি জিন্নাহ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের শিশু নিউরোলজির বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. নারায়ণ সাহা, পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জুবাইদা পারভিন, রোশ বাংলাদেশ লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজার মার্ক হীব, কিউর এসএমএ বাংলাদেশের প্রতিনিধিসহ শিশু হাসপাতাল এবং ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ল্যাবরোটারি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকবৃন্দ।

এসএমএ আক্রান্ত রোগীদের কল্যাণে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে প্রথম এই বিশেষ ক্লিনিকটির যাত্রা শুরু হয়। এসএমএ রোগের চিকিৎসায় মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচ প্রয়োজন হয়। তেমনি প্রয়োজনীয় প্রায় সব ডিসিপ্লিনের চিকিৎসাসেবাকে এক ছাতায় এনে আয়োজন করা হয় এই বিশেষ এসএমএ ক্লিনিকের।

এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত এসএমএসহ মোট ২০ জনের বেশি জেনেটিক রোগে আক্রান্ত রোগী বিনামূল্যে সেবা গ্রহণ করেন। ক্লিনিকে চিকিৎসকদের পরামর্শের পাশাপাশি থেরাপি, নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় ডিভাইসের বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়।

এসএমএ বা স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি একটি দুরারোগ্য বিরল রোগ। পেশির সঞ্চালনকে নিয়ন্ত্রণ করে যে মোটর নিউরোন, তা নষ্ট হওয়াই জিনঘটিত এই বিরল রোগের কারণ। রোগের তীব্রতা অনুযায়ী, টাইপ ওয়ান থেকে টাইপ ফোর পর্যন্ত হয় এসএমএ। এর ওষুধ বাজারে এলেও তা সাধারণের কেনা সাধ্যাতীত।

ঢাকা/হাসান/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রথমবারের মতো ইউআইইউ’তে হার্ভার্ড এইচএসআইএল হ্যাকাথন অনুষ্ঠিত

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ইউআইইউ) দুই দিনব্যাপী ‘হার্ভার্ড এইচএসআইএল হ্যাকাথন ২০২৫’ এর বাংলাদেশ রাউন্ডের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকাল ৫টায় ইউআইইউ এর ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ, ইনোভেশন, ইনকিউবেশন অ্যান্ড কমার্শিয়ালাইজেশন (আইরিক) এবং হার্ভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথের হেলথ সিস্টেমস ইনোভেশন ল্যাবের (এইচএসআইএল) যৌথ সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ইউআইইউ এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়ার সভাপতিত্বে এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম আমিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ডিইআইইডি প্রকল্প পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার প্রমুখ।

এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য ও আইসিটি বিশেষজ্ঞ, শিক্ষার্থী এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

হার্ভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথের এইচএসআইএল হ্যাকাথনটি এ বছর ষষ্ঠ সংস্করণটি পরিচালনা করেছে। এর মূল প্রতিপাদ্য ছিল- ‘উচ্চ-মূল্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার’। এতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র), সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় (অস্ট্রেলিয়া), কিংস কলেজ লন্ডন (যুক্তরাজ্য), কোচ বিশ্ববিদ্যালয় (তুরস্ক), সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় (চীন), এনটিইউসহ (সিঙ্গাপুর) ২০টি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৩ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। 

ইউআইইউ এর ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ, ইনোভেশন, ইনকিউবেশন এবং কমার্শিয়ালাইজেশন (আইরিক) এই মর্যাদাপূর্ণ বৈশ্বিক প্রোগ্রামের জন্য বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র আঞ্চলিক কেন্দ্র, যা বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি অভিজাত নেটওয়ার্কে যোগদান করেছে এবং সফলভাবে বাংলাদেশ রাউন্ড ফাইনাল আয়োজন করেছে।

বাংলাদেশ রাউন্ডের বিজয়ী দল দুইটি হলো- মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা  সনাক্তকরন ও সমাধানে ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেস প্রযুক্তি ব্যবহার করার স্মার্ট পদক্ষেপের জন্য টিম ‘নিউরিক্স’ এবং নারী রোগীদের মধ্যে এন্ডোমেট্রিওসিস-জনিত উদ্বেগ এবং জটিলতা এড়াতে  বাস্তবসম্মত সমাধানের জন্য টিম ‘স্মার্ট-এন্ডো’।

উভয় বিজয়ী দলই সম্মানসূচক পুরষ্কার হিসেবে নগদ অর্থ, সনদ এবং হার্ভার্ড এইচএসআইএল ভেঞ্চার ইনকিউবেশন প্রোগ্রামে আরো ১৯টি দেশের বিজয়ীদের সঙ্গে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন। তারা তাদের আইডিয়ার পরামর্শ, তহবিল কৌশল এবং বাজারজাতকরন বিষয়ে সহায়তা প্রদান করবে।

বাংলাদেশ রাউন্ডের জুরি প্যানেলে ছিলেন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. রুই লিউ, অ্যাডকমের পরিচালক ফাহিমা চৌধুরী, এভারকেয়ার হাসপাতালের গ্রুপ মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. আরিফ মাহমুদ, এমআইএস এর পরিচালক ডা. শাহ আলী আকবর আশরাফী, সুইডেন দূতাবাসের উন্নয়ন সহযোগিতা বিভাগের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, ইউআইইউ এর আইরিক পরিচালক অধ্যাপক ড. খন্দকার এ মামুন।

হার্ভার্ড এইচএসআইএল হ্যাকাথন ২০২৫ বাংলাদেশ রাউন্ডের বিস্তারিত তথ্য ওয়েবসাইটে ক্লিক করলেই পাওয়া যাবে, ।

বিগত কয়েক বছর ধরে, এইচএসআইএল হ্যাকাথন বিশ্বব্যাপী রূপান্তরমূলক স্বাস্থ্যসেবা সমাধান গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। পূর্ববর্তী সংস্করণগুলি আফ্রিকায় ডিজিটাল স্বাস্থ্য এবং এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকায় ডায়াবেটিস যত্নের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছে।  ফলে প্রভাবশালী স্টার্টআপগুলির উদ্ভাবন ঘটেছে, যা পরিবর্তনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ম্যাক্সওয়েল আর কত টাকা নষ্ট করবেন
  • প্রথমবারের মতো বৈশাখী মেলার আয়োজন করেছে জবি
  • প্রথমবারের মতো ইউআইইউ’তে হার্ভার্ড এইচএসআইএল হ্যাকাথন অনুষ্ঠিত