ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণাধীন একটি পিলারের পিয়ারক্যাপের সাটার (নির্মাণ সামগ্রী) ভেঙে পড়েছে। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মহাসড়কের আশুলিয়ার বলিভদ্র বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একটি কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই গাড়ির ওপরেই সাটারের একাংশ এবং বাকি অংশ ফুটওভার ব্রিজের ওপর পড়ে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী পথচারী আমজাদ মিয়া বলেন, ‘‘হঠাৎ বিকট শব্দে ওপর থেকে সবকিছু ভেঙে পড়ে। আমরা শব্দ শুনে দৌড়ে যাই। দেখি সব ভেঙে পড়ছে। তখন এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। এ ঘটনায় শুধু কাভার্ডভ্যানের চালক একটু আহত হয়েছেন।’’

আরো পড়ুন:

অটোরিকশা চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত ২

গাইবান্ধার সাবেক সংসদ সদস্য সারওয়ার দিনাজপুরে গ্রেপ্তার

ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) মো.

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘একটি কাভার্ডভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে ফুটপাতে ধাক্কা লাগে। পরে বিমের পাইপে ধাক্কা লাগলে সাটারের একটা পার্ট খুলে কাভার্ডভ্যানের ওপর পড়ে। আমাদের ক্রেন আছে ওখানে। সব রেসকিউ করা হচ্ছে। এতে বিম কিংবা রাস্তা অথবা কোনো মানুষের ক্ষতি হয়নি।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘ওই পিলারের পিয়ারক্যাপ ঈদের আগে ঢালাই করা হয়েছে। ঢালাই করার আগে যে সাটারিং করা হয় সেটাকে ফর্মওয়ার্ক বলে। সেই ফর্মওয়ার্কগুলো এক দিনে খোলা যায় না। পার্ট পার্ট করে জোড়া দিয়ে কাজ করতে হয়। আজকের মতো কাজ করে শ্রমিকরা চলে গিয়েছে। এই অবস্থাতেই ছিল। সেখানেই কাভার্ডভ্যানের ধাক্কা লাগে। এরপর দুর্ঘটনা ঘটে।’’

ঢাকা/সাব্বির/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল

মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।

গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।

এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।

মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ