বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এক ছাত্রীসহ তিন শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক তিনজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে টিকলী শরীফের বাড়ি খুলনায়। ছাত্রদলের দাবি, তিনি খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের উপছাত্রীবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। অন্য দুই শিক্ষার্থী হলেন মো.

তরিকুল ও মো. মামুন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সোনিয়া খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘কিছু শিক্ষার্থী আমাকে জানান, তাঁরা কয়েকজনকে আটক করেছেন। পরে আমি ঘটনাস্থলে যাই এবং পুলিশ এসে তাঁদের থানায় নিয়ে যায়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, টিকলী শরীফ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলার আসামি হিসেবেও তাঁর নাম আছে। তবে আটক অন্য দুজন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বলে অনেকে জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থী বলেন, টিকলী শরীফ যে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, তা সবারই জানা। তবে অন্য দুজনকে ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। তাঁদের দাবি আটক তিনজন গোপনে কোনো বৈঠক করছিলেন নাকি সাধারণ আড্ডা দিচ্ছিলেন, তা নিশ্চিত নয়।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রী টিকলী শরীফ গোপন বৈঠক করছিলেন—এমন খবর পেয়ে আমরা তাঁদের আটক করে পুলিশে দিই।’ অন্য দুজন ছাত্রলীগ করেন কি না, এমন প্রশ্নে মিনহাজুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো বৈধ কমিটি নেই। তাই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে টিকলীর সঙ্গে থাকা একজন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকতে পারেন।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের সাবেক সদস্য মোশারফ হোসেন অভিযোগ করেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে নানা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। টিকলী শরীফও গোপন বৈঠক করছিলেন। আমরা তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করেছি।’ তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুর্বলতার সুযোগে ছাত্রলীগ পার পেয়ে যাচ্ছে। তবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল ছাত্রলীগের সব কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে বদ্ধপরিকর।

বরিশাল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, কিছু শিক্ষার্থী তিনজনকে আটক করেছেন, এমন খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে তাঁদের থানায় আনা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র বর শ ল ব অন য দ

এছাড়াও পড়ুন:

সৎ মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় সৎ মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক সাবেরা সুলতানা খানম এ রায় ঘোষণা করেছেন।

রায় ঘোষণার আগে আনোয়ার হোসেনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিমের মাকে তালাক দেন তার বাবা। এরপর ২০১৫ সালে আনোয়ার হোসেনকে বিয়ে করেন ভিকটিমের মা। দুই সন্তানকে নিয়ে মাদারীপুরে বাবার বাড়িতে থাকতেন তিনি। আনোয়ার হোসেন একা সংসার চালাতে পারছিলেন না। ভিকটিমের মা ঢাকায় এসে গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন। তার দ্বিতীয় সংসারে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। তাকে দেখাশোনার জন্য কেউ ছিল না। আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বলে ভিকটিমকে ঢাকায় নিয়ে আসেন তার মা। হঠাৎ ভিকটিমের মাকে আনোয়ার হোসেন জানিয়ে দেন, তিনি সংসারের খরচ দিতে পারবেন না। সন্তানদের কথা চিন্তা করে আনোয়ার হোসেনকে ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তালাক দেন ভিকটিমের মা। ৪ আগস্ট বাসায় এসে আনোয়ার হোসেন ভয় দেখিয়ে সৎ মেয়েকে ধর্ষণ করেন।

এ ঘটনায় ভিকটিমের মা ২০ সেপ্টেম্বর আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্ত করে ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ছয় জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

ঢাকা/মামুন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ