প্রায় ৩০০ একর জায়গায়জুড়ে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছে মূর্তাবাগান। সম্প্রতি বাগানটির স্থানে স্থানে আগুন ধরিয়ে কয়েক হাজার মূর্তাগাছ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুড়ে যাওয়া স্থানের একটি অংশে পুকুর বানাতে মাটি খুঁড়ে তৈরি করা হয়েছে লম্বা নালা। সে নালায় ঢালা হয়েছে পানিও। কিছু অংশে আবার ধানি জমি তৈরির প্রস্তুতিও চলছে।

সিলেট সদর উপজেলার কেওয়াছড়া চা-বাগানের আওতাধীন জায়গায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) অধীন থাকা লাক্কাতুরা চা-বাগানের ফাঁড়ি বাগান এটি। বাগানের জায়গা দখল করে নিজেদের কবজায় নিয়ে পুকুর ও ধানি জমি তৈরির এমন অভিযোগ উঠেছে বিএনপির দুজন নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হচ্ছেন সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো.

কছির উদ্দিন ও খাদিমনগর ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি সুরমান আলী। তবে এই দুই নেতা বাগানের জায়গা দখলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।

মূর্তার বেত শীতলপাটি তৈরির প্রধান কাঁচামাল। এ ছাড়া মূর্তার বেতের ভেতরের নরম অংশ দিয়ে মণ্ড বা পাল্প তৈরি করা হয়।

৯ এপ্রিল সরেজমিনে দেখা গেছে, টিলাপাড়া আর টুকেরগাঁও গ্রামের মাঝামাঝি অংশে মূর্তাবাগানটি অবস্থিত। বাগানের পাশেই একটি মরা গাং। এর ঠিক পাশে চেঙেরখাল নদী। কয়েক শ একরের বাগানটির অন্তত ১৫টি স্থানে আগুন লাগিয়ে কয়েক হাজার মূর্তাগাছ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া টিলাপাড়া হয়ে যে রাস্তাটি বাগানে চলে গেছে, এর শুরুর দিকে অন্তত আধা কিলোমিটার অংশের মূর্তাবাগান পুড়ে মাটি খুঁড়ে দীর্ঘ নালা তৈরি করা হয়েছে। পুকুর প্রস্তুতের জন্য নালাটি এক্সকাভেটর দিয়ে খনন করা হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাগানের যেসব স্থানে মূর্তাগাছ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, সেখানে মূলত ধানি জমি আর খেত তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে দখলদারদের। এরই মধ্যে বাগানের পাশের কিছু ধানি জমির পাশের মূর্তাগাছ পুড়িয়ে ফেলে পাশের ধানি জমির মতো করে বাগানের জায়গাটিকে রূপান্তরের জন্য বেষ্টনী দিয়ে রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে যে পুকুরটি খনন করা হয়েছে, সেখানেও পানি ঢেলে পুকুরে রূপ দেওয়া হচ্ছে।

থানায় অভিযোগ বাগান কর্তৃপক্ষের

বাগানের জায়গা দখলের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে লাক্কাতুরা চা-বাগানের ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী জায়গা দখলের প্রচেষ্টার তথ্য নিশ্চিত করেন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সোয়া পাঁচটার দিকে মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’

এরপর মঙ্গলবার রাতেই সিলেট মহানগরের বিমানবন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন লাক্কাতুরা চা-বাগানের উপব্যবস্থাপক সৈয়দ তানজিদ রুবাইয়াত। এতে এক্সকাভেটর চালক মুরাদ মিয়ার (৩৭) নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও চার–পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন সৈয়দ তানজিদ রুবাইয়াত।

মূর্তাবাগানের স্থানে স্থানে আগুন দিয়ে গাছ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ৯ এপ্রিল সিলেট সদর উপজেলার কেওয়াছড়া চা-বাগানে

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সিএপিএম আইবিবিএল ফান্ডের আর্থিক হিসাবে নিরীক্ষকের আপত্তি

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মিউচুয়াল ফান্ড বিধান লঙ্ঘন করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড। এছাড়া, বোনাস শেয়ার বিক্রি থেকে অর্জিত মুনাফাকে সঠিকভাবে আর্থিক হিসাবে দেখায়নি ফান্ডটির অ্যাসেট ম্যানেজার। এ ফান্ডের সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক হিসাবে এমন অডিট আপত্তি জানিয়েছে নিরীক্ষক।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মিউচুয়াল ফান্ড রুলস-২০০১ এর ৫৬ ধারা অনুযায়ী, যে কোনো ফান্ড থেকে মোট সম্পদের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ কোনো একটি খাতে বিনিয়োগ করা যাবে বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক। কিন্তু, সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড থেকে ওষুধ ও রসায়ন খাতে ৩০.১০ শতাংশ বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ড বিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে।

নিরীক্ষক জানিয়েছে, এ ফান্ড ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইউনিলিভার কনজুমারের ৬ হাজার বোনাস শেয়ার পেয়েছে, যা ফান্ডের নীতিমালা (পলিসি) অনুযায়ী আগে থেকেই পোর্টফোলিওতে থাকা ইউনিলিভারের শেয়ারের দরের সঙ্গে সমন্বয় করে গড় ক্রয় মূল্য কমিয়ে আনা হয়। তারা একই বছরে ৮ হাজার ৫০০টি ইউনিলিভারের শেয়ার বিক্রি করে। তবে, এক্ষেত্রে তারা ওই পলিসি অনুসরণ করেনি। যদি ফান্ডটির নীতিমালা অনুযায়ী বোনাস শেয়ার বিবেচনা করা হতো, তাহলে সিকিউরিটিজ বিক্রি থেকে নিট লাভ এবং প্রভিশনের আগে নিট মুনাফা ৯৪ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেত।

২০১৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া সিএপিএম আইবিবিএল ফান্ডের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৬৬.৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণির (উদ্যোক্তা বা পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৩৩.৪৪ শতাংশ। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) কোম্পানির ইউনিট দর দাঁড়িয়েছে ৮.১০ টাকায়।

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ