ইউক্রেন ও গ্রিনল্যান্ড নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় মার্কিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক সিবিএসের ওপর আবার চটেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিবিএসের সংবাদ সম্প্রচার ম্যাগাজিন ‘৬০ মিনিটস’–এ সম্প্রচারিত ওই প্রতিবেদনের জন্য গণমাধ্যমটিকে ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি।

স্থানীয় সময় গত রোববার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ইউক্রেন যুদ্ধ ও গ্রিনল্যান্ড ইস্যুতে দুটি প্রতিবেদন সম্প্রচার করে ৬০ মিনিটস।

প্রতিবেদনটি সম্প্রচারের পরপরই ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ওই প্রতিবেদনের তীব্র সমালোচনা করে পোস্ট দেন। প্রতিবেদনে তাঁকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ট্রাম্প বলেন, প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ট্রাম্প নামটি অবমাননাকর ও অসম্মানজনকভাবে উপস্থাপন করে ৬০ মিনিটস। এবার তো তারা সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এ কাজের জন্য তাদের কড়া মাশুল গুনতে হবে।

এ ধরনের বেআইনি ও অবৈধ কার্যকলাপের জন্য চ্যানেলটিকে জরিমানা ও শাস্তির আওতায় আনতে ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের (এফসিসি) চেয়ারম্যান ব্রেনডান কারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প বলেন, ৬০ মিনিটস এখন আর কোনো সংবাদ প্রচারের অনুষ্ঠান নয়। এটি রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য সংবাদ মাধ্যমের ‘লেবাসধারী’। আগে যা করেছে কিংবা এখন যা করছে, সবকিছুর জন্যই তাদের জবাবদিহি করতে হবে।

তবে ট্রাম্পের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানায়নি সিবিএস নেটওয়ার্ক।

এর আগে গত বছরের ৩১ অক্টোবর সিবিএসের বিরুদ্ধে এক কোটি ডলারের মামলা করেছিলেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নির্বাচনে প্রচারের সময় তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসের বক্তব্য সম্পাদনা করে সম্প্রচার করায় এই মামলা করেছিলেন তিনি।

ট্রাম্পের দাবি, কমলাকে ‘ভালো’ দেখাতে ইচ্ছাকৃতভাবে সম্পাদনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সিবিএস। যদিও ট্রাম্পের এই দাবি নাকচ করে এসেছে নেটওয়ার্কটি।

এই মামলার বিষয়ে একটি সমঝোতায় আসতে ট্রাম্পের আইনজীবী ও নেটওয়ার্কটির কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার কানাঘুষা চলছে। এরই মধ্যে আবার চটে গেলেন ট্রাম্প।

মামলার সুরাহা না হলেও দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রতিনিয়তই ট্রাম্প প্রশাসন সম্পর্কে নানা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে ৬০ মিনিটস নামের প্রোগ্রামে। বিশেষত সাংবাদিক স্কট পেল্লি একের পর এক সংবাদ প্রকাশ করেই যাচ্ছেন।

সম্প্রতি ইউক্রেন সফরে যান স্কট। রাশিয়ার হামলায় ৯ শিশু নিহত হয়েছে—এমন একটি জায়গা পরিদর্শন করে সেখানেই ভলোদিমির জেলেনস্কির সাক্ষাৎকার নেন তিনি।

সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপর তাঁর তীব্র ঘৃণার কথা জানান জেলেনস্কি। এ সময় ইউক্রেনে এসে রাশিয়ার বর্বরতা দেখে যেতেও ট্রাম্পকে আহ্বান জানান তিনি।

গ্রিনল্যান্ডে গিয়ে রোববার আরেকটি প্রতিবেদন সম্প্রচার করেন সাংবাদিক জন ওরথহেইম। ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড দখল করা সম্পর্কে দ্বীপটির কয়েকজনের বক্তব্য প্রকাশ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন টওয় র ক ইউক র ন স ব এস র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

আজ সারাদেশে বিক্ষোভ করবে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা

ছয় দফা দাবিতে আজ রোববার সারাদেশে সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করবেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল শনিবার কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের ফেসবুক পেজে এই কর্মসূচি ঘোষণার কথা জানানো হয়।

ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, রোববার (২৭ এপ্রিল) সারাদেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে একযোগে বিক্ষোভ মিছিল পালিত হবে। পূর্বে প্রদানকৃত সব নির্দেশনা অব্যাহত থাকবে বলে ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-
প্রথমত, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

দ্বিতীয় দাবি, ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।

তৃতীয় দাবি, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

চতুর্থ দাবি, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোয় অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের পঞ্চম দাবি, স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।

আর ষষ্ঠ দাবি, পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে পদোন্নতিতে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ কোটার রায় বাতিলসহ ছয় দাবি আদায়ে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করছেন চার লাখের বেশি পলিটেকনিক শিক্ষার্থী। প্রথম দিকে স্মারকলিপি, মানববন্ধন, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করলেও গত ১৬ এপ্রিল রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। একই দিন সারাদেশেও অবরোধ হলে আলোচনায় আসে আন্দোলন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ