কুয়েট শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের প্রতিবাদে বুয়েটে মানববন্ধন
Published: 15th, April 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা ও ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ১টায় বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় কুয়েট প্রশাসনের বিতর্কিত ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার, প্রকৃত দোষীদের শাস্তি এবং প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানান বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
আবরার আগ্রাসনবিরোধী লড়াইয়ের জার্নি, যার অর্জন জুলাই-অভ্যুত্থান: আসিফ
আবরার ফাহাদকে দেওয়া হচ্ছে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক
মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বুয়েটের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফারাবি। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে বিএনপিপন্থি ও ছাত্রদল সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীদের হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। হামলার প্রকৃত তদন্ত শেষ না হতেই দুই মাস পর কুয়েট প্রশাসনের সহযোগিতায় আন্দোলনে অংশ নেওয়া নিরীহ ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। যা সম্পূর্ণভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত।”
তিনি বলেন, “এ মামলা শুধু ২২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নয়, এটি দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের অধিকার হরণের চেষ্টা। রাজনৈতিক স্বার্থে শিক্ষাঙ্গনের নিরীহ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের দমন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
তিনি আরো বলেন, “মামলার পাশাপাশি আন্দোলন দমন করতে প্রশাসন একের পর এক দমনমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হল বন্ধ ঘোষণা, বিদ্যুৎ,পানি ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক হল ছাড়তে বাধ্য করা, ঈদের সময় বহিরাগতদের প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হলেও শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে না দেওয়া এবং আন্দোলনকারীদের নিয়ে অপপ্রচার চালানো।”
প্রশাসনের এমন আচরণকে অমানবিক উল্লেখ করে ফারাবি বলেন, “এর ফলে অনেক শিক্ষার্থীকে রাতের আঁধারে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করতে হয়েছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। কুয়েট সিন্ডিকেট সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের দমন করতে গৃহীত পদক্ষেপকে অন্যায় হিসেবে দেখছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।”
সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে ফারাবি আরো বলেন, “আমরা কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে আছি। প্রশাসনের সদর্থক পদক্ষেপ না এলে ছাত্রসমাজ বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবে।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মানববন্ধন শেষে আসামির বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে আসামি গ্রেপ্তার ও তার বিচার দাবি করে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে আসামির বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিকেলে উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের সোনালিয়া চকবাজার গ্রামে গিয়াস উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বিক্ষুব্ধরা। পরে সন্ধ্যার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার গিয়াস উদ্দিনের কলা বাগানে তারই চাচা আকবর আলীর ছাগল যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুইজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে হামলার শিকার হন আকবর আলী (৬৫)। মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
এই ঘটনার জেরে গত শনিবার গিয়াস উদ্দিনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় মামলা হয় এবং ওই রাতে দুইজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক রাশেদুজ্জামান।
তবে সোমবার বিকেলে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে এলাকার ৫ শতাধিক মানুষ অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে উত্তেজিত জনতার একটি অংশ গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে হামলা হামলার পর অগ্নিসংযোগ করে। অগ্নিসংযোগের সময় ওই বাড়িতে নারী ও শিশুরা অবস্থান করছিলেন। তবে তারা নিরাপদে সরে যান বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার সকালে মির্জাপুর থানার ওসি বলেন, পুলিশ-সেনাবাহিনীর যৌথ অবস্থানে পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।