বিল গেটসের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ‘প্রয়োজনীয়’ ছিল: সাক্ষাৎকারে মেলিন্ডা
Published: 15th, April 2025 GMT
মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের সাবেক স্ত্রী মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস ২০২১ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি তাঁদের এই বিচ্ছেদকে ‘প্রয়োজনীয়’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন।
সাবেক ধনকুবের ব্যবসায়ী স্বামী বিল গেটসের একটি মন্তব্যের কয়েক সপ্তাহ পর মেলিন্ডা ফেঞ্চ এই প্রথম মুখ খুললেন। ওই মন্তব্যে বিল গেটস তাঁদের এই বিচ্ছেদকে তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় অনুতাপের বিষয় বলে মন্তব্য করেছিলেন।
দ্য টাইমসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মেলিন্ডা গেটস এ কথা করেন। ওই সাক্ষাৎকার গত রোববার প্রকাশিত হয়। সেখানে বিল গেটসের মন্তব্য সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা এমন কিছু, যা ‘প্রয়োজনীয়’ ছিল।
মেলিন্ডা ফেঞ্চ বলেন, ‘আপনি যদি আপনার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মধ্যে নিজের মূল্যবোধ নিয়ে বেঁচে থাকতে না পারেন, তাহলে সেটা ছেড়ে যাওয়াই প্রয়োজনীয় ছিল।’
অবশ্য মেলিন্ডা মানবহিতৈষী তাঁর সাবেক স্বামী বিল গেটসের মন্তব্য সম্পর্কে স্পষ্টভাবে কিছু বলেননি। তবে তিনি যোগ করেন, ‘আমি আসলে জানি না, তিনি ওই বক্তব্য দিয়ে ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছেন। সুতরাং তাঁর বক্তব্য নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করছি না।’
মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ বলেন, ‘তাঁর নিজের জীবন আছে, আমার নিজের জীবন আছে। আমি এখন অনেক সুখী।’
মেলিন্ডা গেটস আরও বলেন, এই বিচ্ছেদ তাঁর ওপর আবেগপূর্ণ গভীর প্রভাব ফেলেছিল। তাঁদের আলাদা থাকা অবস্থায় তিনি ‘প্যানিক অ্যাটাক’–এর শিকারও হয়েছেন।
বিল গেটসের সাবেক স্ত্রী বলেন, একটা বিবাহবিচ্ছেদ খুবই কঠিন। আর আলোচনা-সমঝোতাও খুব কঠিন।’
মেলিন্ডা বলেন, ২০১৪ সালে বিল গেটসের সঙ্গে এক মধ্যাহ্নভোজের সময় তিনি প্রথম ‘প্যানিক অ্যাটাক’ অনুভব করেন। তার পর থেকেই তিনি থেরাপিস্টের কাছে যাওয়া শুরু করেন। তখনো তাঁরা স্বামী–স্ত্রী হিসেবে একসঙ্গে ছিলেন।
শুরুর দিকে মেলিন্ডা থেরাপি নিয়ে সন্দিহান থাকলেও পরে এর উপকারিতা বুঝতে পারেন। তিনি বলেন, ‘এর অর্থ এই নয় যে আমি ভেঙে পড়েছি। এর অর্থ, আমি কঠিন বিষয়ের মধ্য দিয়ে গেছি, যেগুলো নিয়ে আমাকে বোঝাপড়া করতে হয়েছে।’
গত ফেব্রুয়ারিতে এনবিসির ‘টুডে’ অনুষ্ঠানে নিজের নতুন বই ‘সোর্স কোর্ড’ নিয়ে কথা বলতে গেলে বিল গেটসকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন তিনি এই বিবাহবিচ্ছেদকে নিজের ‘সবচেয়ে বড় অনুশোচনা’ বলে মনে করছেন।
জবাবে বিল বলেছিলেন, ‘বিবাহবিচ্ছেদটা ভালো কিছু ছিল না। কিন্তু আমাদের তিনটি সন্তান, আমরা একসঙ্গে যেসব কাজ করতে পেরেছি—এমনকি আমি যদি জানতাম যে এই সংসার চিরস্থায়ী হবে না, তবু আমি আবারও সেটাই করব।’
বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটস ২০২১ সালে ২৭ বছরের বিবাহিত জীবনের ইতি টানেন। তাঁদের তিন সন্তান রয়েছে—ফিবি গেটস (২২), ররি গেটস (২৫) ও জেনিফার গেটস নাসার (২৮)।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ল গ টস র স ব ব হব চ ছ দ
এছাড়াও পড়ুন:
একসঙ্গে উঠলেন নাগরদোলায়, হঠাৎ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা
পারিবারিক কলহের জেরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নাগরদোলায় উঠিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে সাকিব হোসেন (২৫) নামে এক ব্যক্তি। নিহতের নাম লাকি বেগম (১৯)। তিনি ওই উপজেলার কালাপুল এলাকার বেদে পল্লীর মনছুর আলীর মেয়ে। সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের হাফেজ মহিন উদ্দিনের মাজরের ওরসের মেলায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় লোকজন সাকিবকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তিনি নোয়াখালী সদর উপজেলার এওজবালিয়া বেদে পল্লীর মঙ্গল মিয়ার ছেলে।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি লিটন দেওয়ান সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হত্যার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নিহতের মা শেফালী বেগম জানান, এক বছর আগে পারিবারিকভাবে সদর উপজেলার এওজবালিয়া ইউনিয়নের মান্নান নগরের বেদে পাড়ার মঙ্গলের ছেলে শাকিবের সঙ্গে লাকীর বিয়ে হয়। লাকী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। গত ১৫ দিন আগে তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে স্বামীসহ বাবার বাড়িতে আসেন। রোববার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শাকিব স্ত্রীকে মারধর করে জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলেন। পরে নিজের ব্যবহৃত একটি মুঠোফোনে ভেঙে ফেলেন এবং নিজের মাথা নিজে ফাটান। সোমবার সন্ধ্যার দিকে লাকীর স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা একলাশপুর ইউনিয়নের মহিন উদ্দিন হাফেজের ওরসের মেলায় ঘুরতে যান। সেখানে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে নাগরদোলায় ওঠেন।
শেফালী বেগম নাগরদোলায় থাকা প্রত্যক্ষদর্শী এক নারীর বরাত দিয়ে জানান, একপর্যায়ে নাগরদোলায় শাকিব তার স্ত্রী গলায় ছুরিকাঘাত করে গুরুত্বর আহত করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় স্ত্রীকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক লাকীকে মৃত ঘোষণা করেন।
বেগমগঞ্জ থানার ওসি লিটন দেওয়ান বলেন, অভিযুক্ত সাকিব হোসেনকে আটক করা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের মরদেহ ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। নিহতের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।