স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ডিবি প্রধানকে সরিয়ে দেওয়ার সঙ্গে মডেল মেঘনা আলমের ঘটনার সংশ্লিষ্টতা নেই। ডিবি প্রধান রেজাউল করিম মল্লিকের বদলি একটি রুটিন প্রক্রিয়া।

মঙ্গলবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকশ চৌধুরী। মেঘনার গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মডেল মেঘনাকে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করা হয়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে গ্রেপ্তার হননি মেঘনা। এ ঘটনা এখন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। তাই এটা নিয়ে কথা বলা ঠিক হবে না।

মেঘনার গ্রেপ্তার নিয়ে আইন উপদেষ্টার বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আইন উপদেষ্টা কী প্রেক্ষিতে বলেছেন, সেটা তো আমরা জানি না। সেটা তো উনাকেই জিজ্ঞাসা করতে হবে। এছাড়া উনি তো আমাদেরও বলেননি যে এই কারণে আমি ওটা বলেছি। এটা আপনারা জানেন। আপনার (সাংবাদিক) কথা থেকে উত্তরটা দিলে তো সঠিক প্রেক্ষাপট জানা যাবে না, উত্তরটাও সঠিক হবে না।

বিশেষ ক্ষমতা আইনে মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তা‌রের বিষয়ে সমালোচনা হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মো.

খোদা বখস চৌধুরী বলেন, এই (বিশেষ ক্ষমতা আইন) আইন তো ব্যবহার হচ্ছে। এই আইন যে ব্যবহার হচ্ছে না, তা তো নয়। এই একটি ক্ষেত্রে আইনটি ব্যবহার হয়েছে তাও তো নয়। বেআইনি কাজ তো না।

তিনি বলেন, তবে আপনি যদি বলেন এক্ষেত্রে কী হয়েছে- একটা ঘটনা ঘটেছে, একটা অভিযোগ এসেছে, এটা নিয়ে কাজ হচ্ছে। বিষয়টি হাইকোর্টে গেছে। হাইকোর্টে গেলেই এটা বিচারাধীন বিষয়। সাব-জুডিস ম্যাটারে তো কথা বলা ঠিক হবে না। দেখি কী আসে ওখান থেকে।

খোদা বখস চৌধুরী বলেন, তবে একটা জিনিস নিশ্চিত। প্রচলিত আইনে ব্যবস্থাটা নেওয়া হয়েছে, এখানে কারও প্রতি বেআইনি কোনো আচরণ করা হয়নি। হাইকোর্টে এটা নিয়ে বিচার চাচ্ছে, আমরা জবাব দেব। আপনারা সব পাবেন, অগ্রিম এই বিষয়গুলো নিয়ে তো আলোচনা ঠিক না।’

মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী মডেল মেঘনা আলমকে ঢাকায় তার বাসা থেকে পুলিশ আটক করার দুদিন পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালত তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ হ ঙ গ র আলম চ ধ র স বর ষ ট র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের বিভিন্ন স্থানে ফ্যাসিস্টদের গলার স্বর শুনতে পাওয়া যাচ্ছে: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পলাতক কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিস্টদের গলার স্বর শুনতে পাওয়া যাচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দেশের জনগণের পাচার করা টাকা পতিত স্বৈরাচারের ‘টনিক’ হিসেবে কাজ করছে। শেখ হাসিনার একটি ভরসা হচ্ছে পাচার করা টাকা। সেই টাকার জোরে দেশে নানা ঘটনা ঘটিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে। একটি প্রবাদ আছে ‘টাকায় কথা কয়’ শেখ হাসিনা এই প্রবাদটি কাজে লাগাতে চাচ্ছে।

অপরাধী আওয়ামী নেতাদের জামাই আদরে আদালতে হাজির করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছর বিভিন্ন পাতানো মামলায় বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতা ও আলেম-ওলামাকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে তোলা হয়েছিল। আর এখন কারাগারে ভয়াবহ অপরাধী আওয়ামী নেতাদের জামাই আদরে আদালতে হাজির করা হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হাসিনার অলিগার্করা ‘শর্ষের ভিতর ভূত’ হয়ে থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই নেতা বলেন, ভারতে পলাতক হাসিনা একের পর এক হুংকার দিচ্ছেন। জুলাই-আগস্টের শাজাহান খান গংরা আদালতে এসে সরকারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। আদালতকে ভেংচি কাটছেন। পুলিশকে থোড়াই কেয়ার করছেন। হাসিনার দোসররা আসামি হয়েও আদালতে যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছেন, তা মূলত অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘অকার্যকর’ প্রমাণের এক গভীর চক্রান্ত।

রিজভী বলেন, দীর্ঘ রক্তঝরা আন্দোলনের অব্যবহিত পর থেকে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দেশের গণতান্ত্রিক শক্তির প্রত্যাশার প্রতিফলন খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি থাকলেও গণতন্ত্রকে মজবুত কাঠামো তৈরির প্রস্তুতির অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচারের দোসর, খুনের আসামিরা প্রকাশ্যে আদালতে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিচার চেয়ে বক্তব্য রাখেন। হাসিনার গণহত্যাকারী বাহিনীর নেতারা দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের ভয়াবহ অপশাসনের জন্য ক্ষমা চাওয়া তো দূরে থাক, উল্টো আদালতে হুমকি দিচ্ছেন। হাজারো শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আরও বড় ফ্যাসিস্ট হয়ে ফিরে আসার হুমকি দিচ্ছেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, মাফিয়া অর্থনীতির জোরে শেখ হাসিনা দেশের যে সম্পদ পাচার করেছেন, সেই সম্পদের মুনাফা দিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চান। পতিত ফ্যাসিবাদের বড় বড় দোসররা অনেকেই প্রশাসনের হেফাজতে ছিলেন, কিন্তু তাঁরা কীভাবে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন? নিশ্চয়ই এখনো প্রশাসনের মধ্যে অনেকেই ঘাপটি মেরে আছেন, ফ্যাসিবাদের খুনি দোসরদের সহযোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ