বিয়ের দাবিতে ৩ সন্তানের মায়ের অনশন, শেকলে বেঁধে নির্যাতন
Published: 14th, April 2025 GMT
বরগুনার আমতলীতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক আবুল কালাম মীরের বাড়িতে অনশনে বসেন তিন সন্তানের জননী প্রেমিকা নাজমা বেগম।
কালাম মীরের ছোট ভাই, স্ত্রী ও মা তাকে লোহার শেকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন নাজমা বেগম।
আমতলী উপজেলার পশ্চিম আঠারোগাছিয়া গ্রামের ঘটনা এটি।
আরো পড়ুন:
আশির দশকের বিয়ে ‘তেলাই থেকে ঘুরানি’
বিশ্ব ইজতেমায় ৬৩ যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত
রবিবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে অনশনে বসলে পরের দিন সোমবার (১৪ এপ্রিল) তাকে শেকলে বেঁধে মারধর করা হয়। পুলিশ খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
নাজমা বেগমের দেওয়া বর্ণনা অনুযায়ী, ২০০৮ সালে উপজেলার পশ্চিম আঠারোগাছিয়া গ্রামের রিপন মোল্লার সঙ্গে নাজমা বেগমের বিয়ে হয়। ওই দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে। ২০২২ সালে নাজমা বেগম খালাতো দেবর আবুল কালাম মীরের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন।
এ ঘটনার জের ধরে গত ২৯ মার্চ নাজমার স্বামী তাকে তালাক দেন। গত রবিবার সন্ধ্যায় নাজমা তার প্রেমিক কালামের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেন। ওই সময় কালাম বাড়ি ছিলেন না। কালামের বাড়ির লোকজন ব্যাপক নির্যাতন চালায় তার ওপর।
ঘটনার বিষয়ে ইউপি সদস্য ছালাম সিকদার ও নারী ইউপি সদস্য হাসনেহেনা বেগম পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে উদ্ধার করে নাজমাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এই দুই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।
সোমবার রাতে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা.
নাজমা বেগম বলেন, “বিয়ের দাবিতে প্রেমিক আবুল কালাম মীরের বাড়ীতে অনশনে বসি। পরে তার ছোট ভাই বক্কর মীর, স্ত্রী লামিয়া, জল লাকি ও মা পরী বিবি আমাকে লোহার শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। এভাবে তারা আমার ওপর তিন ঘণ্টা নির্যাতন চালিয়েছে।”
“তারা আমার চোখ ও গোপনাঙ্গে মরিচের গুঁড়া দিয়েছে। আমি এই ঘটনার বিচার দাবি করছি,” যোগ করেন নাজমা।
কালাম মীরের বড় ভাই আবুল হোসেন মীর তার ভাইয়ের সঙ্গে ওই নারীর সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “ঘটনার সময় আমি বাড়ি ছিলাম না। বাড়ি এসে শুনেছি তাকে মারধর করেছে।”
ডা. রোকনুজ্জামান বলেন, নাজমা বেগমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো তাকে।
আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, “আমি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/ইমরান/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপর ধ অনশন ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
পটুয়াখালীর আড়তে ইলিশের কেজি ২৫০০ টাকা
বাঙালির অন্যতম উৎসব বাংলা নববর্ষ। আর এ উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ পান্তা-ইলিশ। এ উৎসব ঘিরে ইলিশসহ সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। দেশের বৃহৎ পটুয়াখালীর পাইকারি মাছ বাজার মহিপুর ও আলীপুরে ইলিশের দাম চড়া। এতে পাইকারি ক্রেতারা হতাশা প্রকাশ করেছেন। তবে সমুদ্রে মাছের অকাল থাকায় ইলিশের দাম অনেকটা বেশি বলে জানিয়েছেন পাইকারি বিক্রেতারা।
মহিপুর ও আলীপুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এই দুই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ফাইস্যা, ছুড়ি, পোয়া, মটকা চিংড়ি, টোনা, তাপসী, কোরাল, চাপলি, পবদা ও টাইগার চিংড়ি, স্বল্প সংখ্যক বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ থাকলেও বাজার প্রায় ইলিশ শূন্য। যেখানে প্রতিনিয়ত টন টন ইলিশ বিক্রি হয়, সেখানে হাতেগোনা কয়েকটি আড়তে ইলিশ মাছ দেখা গেল। তাও মাঝারি ও ছোট সাইজের ইলিশ। এ বাজারে ১ কেজি ওজনের ইলিশ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা কেজি দরে। ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা কেজি দরে। ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে। আর ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়।
কলাপাড়া থেকে মহিপুর মাছ বাজারে আসা পাইকারি ক্রেতা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘‘সকাল ৮টায় মহিপুরে এসেছি। এখন পর্যন্ত ইলিশ মাছ কিনতে পারিনি। এখানে নিলামের মাধ্যমে ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা কেজি দরে ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। এ সব ইলিশ কিনে কত টাকায় বিক্রি করব?’’
আরো পড়ুন:
‘হাসিনার দোসররা ভোরে চারুকলায় ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব পুড়িয়ে দিয়েছে’
নববর্ষের দিন টিএসসি-শাহবাগ মেট্রো স্টেশন ‘সাময়িক বন্ধ থাকবে’
আমতলী থেকে আসা অপর পাইকারি ক্রেতা রিয়াজুল বলেন, ‘‘আজ এখানে ইলিশ কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। দাম চড়া থাকায় এক মণ ছুড়ি মাছ নিয়ে যাচ্ছি। এগুলো বিকালে আমতলী বাজারে বিক্রি করব।’’
মহিপুর আড়তদার মালিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য মাহতাব ফিসের স্বত্ত্বাধিকারী মাহতাব হাওলাদার জানান, বেশ কিছু দিন ধরে বৃষ্টি না থাকার কারণে জেলেদের জালে খুব কম পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ছে। যার কারণে বাজারে ইলিশের সংখ্যা খুবই কম। আর আজ একেবারে ইলিশ নেই বললেই চলে। যার কারণে দাম অনেকটা চড়া।
কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ইলিশের সংখ্যা একটু কমেছে। এছাড়া এই উপকূলে অনেক দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে না, যার ইলিশ কম ধরা পড়ছে এবং দামও বেশি। ১৫ এপ্রিল থেকে সমুদ্রে মাছ ধরার উপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞার পর জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে এবং দামও অনেকটা কমবে।
ঢাকা/ইমরান/বকুল