গাজীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুর মৃত্যু, বাসে অগ্নিসংযোগ
Published: 14th, April 2025 GMT
গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের তেলিপাড়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর জেরে বাসে আগুন দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। এ সময় প্রায় ৪৫ মিনিট সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এ ঘটনা ঘটে।
রাত সাড়ে ৮টায় গাজীপুরের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) অশোক কুমার পাল জানান, দুর্ঘটনায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে দুজন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তার উত্তর পাশে তেলিপাড়া এলাকায় ঢাকা অভিমুখী চ্যাম্পিয়ন পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশার যাত্রীদের মধ্যে এক শিশু গুরুতর আহত হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়। তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় অটোরিকশার অপর দুই যাত্রী আহত হয়েছেন।
আহতদের গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনার জেরে উত্তেজিত জনতা সড়ক অবরোধ করে রাখে।
চ্যাম্পিয়ন পরিবহনের ওই বাস আটক করে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত লোকজন।
বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কায়সার আহমেদ রাত ৯টায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিশু নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা একটি বাসে আগুন দিয়েছে। কিছুক্ষণ সড়ক বন্ধ ছিল। এখন পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। মরদেহ উদ্ধারসহ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাকস্ট্যান্ডটি দ্রুত উচ্ছেদের ব্যবস্থা নিন
রাজধানী শহরের ভেতর থেকে বাসস্টেশন ও ট্রাকস্ট্যান্ড সরানোর দাবি নতুন নয়। ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র প্রয়াত আনিসুল হক একটি ট্রাকস্ট্যান্ড সরিয়ে প্রশংসিতও হয়েছিলেন। যদিও পরবর্তী সময়ে সেই ট্রাকস্ট্যান্ডটির অংশবিশেষ আবার দখল হয়ে যায়। এরপরও যে সুফলটুকু পাওয়া গেছে, তা কম অর্জন নয়। সম্প্রতি গাবতলী এলাকায় বিশাল সরকারি জায়গা দখল করে আরেকটি ট্রাকস্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়েছে। এতে পুলিশের নীরব ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি করেছে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গাবতলীতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বীজ উৎপাদন খামারের প্রায় তিন বিঘা জমি দখল করে ট্রাকস্ট্যান্ডটি বসানো হয়েছে। আন্তজেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে এই জমি করা হয়েছে। দখল করা তিন বিঘা জমির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। একেবারে এ জমি দখল করা হয়নি। ধীরে ধীরে এ দখলবাজি চালানো হয়েছে। যত সময় যাবে, জমি দখলের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিএডিসির কর্মকর্তারা।
গাবতলীর মাজার রোডের বীজ উৎপাদন খামারের ভেতরের এই জমি পাঁচ বছরের জন্য মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে মালামাল রাখার জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছিল। গত বছরের জুনে ইজারার মেয়াদ শেষ হয়। তবে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে জমিটি বিএডিসিকে হস্তান্তর করেনি। এর মধ্যেই তিন বিঘা জমি বেদখল হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে সরকারি দেয়াল ভেঙে ট্রাক রাখতে ও চলাচলের রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। শুরুতেই স্থানীয় থানা-পুলিশকে অভিযোগ করেছে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দারুস সালাম থানার নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণে দখলবাজি তো থামেইনি; বরং আরও বেড়ে ট্রাকস্ট্যান্ডটি সম্প্রসারিত হয়েছে। বিএডিসি কর্মকর্তাদের অভিযোগ, শুরুতে পুলিশ খুবই গুরুত্ব দিয়েছিল। পরে থানায় পরিবহননেতাদের সঙ্গে পুলিশ বৈঠক করে। ওই বৈঠকের পর পুলিশ নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। তারা আর সরকারি জমি দখলদারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এ ব্যাপারে পুলিশের বক্তব্য কোনোভাবে সন্তোষজনক নয়। তারা দখলবাজি থামাতে বিএডিসি কর্তৃপক্ষকে যে পথ দেখিয়ে দিয়েছে, তাতে সমাধান পেতে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হবে এবং আরও বেশি জমি হারাবে প্রতিষ্ঠানটি। বিএডিসির কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের শতকোটি টাকার জমি দখল করে ট্রাকস্ট্যান্ড নির্মাণের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরকে জানানো হয়েছে। তবে এই দখলের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
দ্রুত এই দখলবাজি থামাতে হবে। দখল হয়ে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধার করতে ট্রাকস্ট্যান্ডটি উচ্ছেদ করতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।