বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগ
Published: 14th, April 2025 GMT
দিনাজপুরের বিরামপুরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের খাবার ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় বাধা দেওয়ায় তিন সরকারি কর্মচারীকে মারধর করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদের মুক্তমঞ্চে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের বিরামপুর পৌর শাখার সদস্যসচিব আরিফুর রহমান ওরফে রাসেল (৩২), পৌর যুবদলের ৪ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সভাপতি সোহাগ হোসেন, ৭ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মাহবুব খন্দকার ও বিএনপির কর্মী ফয়সাল আহমেদ ও মাহাবুব আলমসহ ৬-৭ জন।
মারধরের ঘটনায় উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক এমদাদুল হক (৪৫) বুকে ও কানে আঘাত পেয়ে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক আবু হোসেন (৪৬) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম (৩৭) আহত হয়েছেন।
আবু হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে সকাল থেকে ‘পান্তাভাত পরিবেশন’ বুথে তিনি, এমদাদুল হক, মমিনুল ইসলামসহ সাত-আটজন নিয়োজিত ছিলেন। অনুষ্ঠান চলাকালে উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে পান্তাভাত, মাছ ও ভর্তা বিতরণ শুরু হয়। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আরিফুর রহমানসহ ছয়-সাতজন নেতা-কর্মী জোর করে বুথের ভেতরের অংশে প্রবেশ করেন এবং পানির বোতলের একটি কেস (২৪ বোতল) চান। বুথে নিয়োজিত কর্মীরা তাঁদের সামনে থেকে শৃঙ্খলভাবে খাবার নেওয়ার অনুরোধ করেন। এতে নেতা-কর্মীরা তাঁদের প্রতি চড়াও হন। এ সময় আরিফুর ইউএনওর উদ্দেশে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। আরিফুর উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক এমদাদুলের শার্টের কলার ধরেন এবং বুথ থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করেন। পরে বুথের বাইরে নিয়ে ছয়-সাতজন মিলে এমদাদুলকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এতে তিনি বুকে ও কানে আঘাত পান। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের ওই নেতা সেখান থেকে ভাজা মাছভর্তি একটি গামলা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে মমিনুল ইসলাম তাঁকে বাধা দেন। তখন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মমিনুল ও আবু হোসেনকে মারধর করেন এবং মমিনুলের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলেন।
অভিযোগের বিষয়ে আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সিনিয়র নেতাদের জন্য সেখানে পানি নিতে গিয়েছিলাম। তখন ইউএনও অফিসের লোকজন আমার গায়ে ধাক্কা মেরেছে। আমি শুধু ওকে (এমদাদুল) একটা থাপ্পড় মেরেছি। ওখানে তো ৮-১০ জন ছিল। পেছন দিক থেকে আমাকেও দুজন মেরেছে।’
এ বিষয়ে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুর রব প্রথম আলোকে বলেন, ‘ও (আরিফুর রহমান) শিক্ষিত ছেলে। ও একটি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। ওর কাছে আমি এটা আশা করি না, সংগঠনও এটি আশা করে না। আমি নিজেও মর্মাহত। সে এটি ঠিক করেনি। এ বিষয়ে আমি জেলা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলব। তাঁরা যা পরামর্শ দেবেন, সে অনুযায়ী আরিফুর রহমানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম প্রথম আলোকে বলেন, বাঙালির ঐতিহ্য বাংলা নববর্ষের মতো এমন একটি সুন্দর অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মচারীদের মারধর করে তাঁরা অন্যায় করেছেন। এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা করা হবে।
বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে হতাহতের ঘটনায় এখনো থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ হলে তদন্তপূর্বক দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর ফ র রহম ন প রথম আল ক অন ষ ঠ ন এমদ দ ল এ সময় উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ছবিতে রমনার বটমূলের বর্ষবরণ
২ / ৯নববর্ষকে আবাহন জানিয়ে সম্মিলিত কণ্ঠে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো...’