দুই সপ্তাহের মধ্যে রিয়াল–বার্সার দুটি ক্লাসিকো
Published: 14th, April 2025 GMT
লা লিগা কর্তৃপক্ষ এখনো নিশ্চিত করেনি। তবে লা লিগার অফিশিয়াল সম্প্রচারক ‘মুভিস্টার’ গতকাল জানিয়েছে, লিগে এবারের দ্বিতীয় ‘এল ক্লাসিকো’ হবে আগামী ১১ মে। অনেকের চোখেই এ ম্যাচ হতে পারে বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে শিরোপা নির্ধারণী লড়াই।
৩১ ম্যাচে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে বার্সা। সমান ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে ৪ পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে দুইয়ে রিয়াল (৬৬)। দুই দলেরই হাতে আর ৭টি করে ম্যাচ। ৩০ ম্যাচে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আতলেতিকো মাদ্রিদ। শীর্ষে থাকা বার্সার সঙ্গে ১০ পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে দিয়েগো সিমিওনের দল।
দুই সপ্তাহের মধ্যে এটা হবে দ্বিতীয় ‘এল ক্লাসিকো’। ২৬ এপ্রিল কোপা দেল রে ফাইনালেও মুখোমুখি হবে রিয়াল–বার্সা। চলতি মৌসুমে এর আগে দুবারের মুখোমুখিতেই জিতেছে বার্সা। গত অক্টোবরে লিগে রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৪–০ গোলে জেতে হান্সি ফ্লিকের দল। এরপর গত জানুয়ারিতে সৌদি আরবে স্প্যানিশ সুপার কাপ ফাইনালেও রিয়ালকে ৫–২ গোলে হারায় কাতালান ক্লাবটি।
মৌসুম শেষে লিগে রিয়াল ও বার্সার পয়েন্ট সমান হলে গত অক্টোবরে বার্সার ৪ গোলের সেই জয় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। লিগে দ্বিতীয় ‘এল ক্লাসিকো’ রিয়াল যদি ৩–০ গোলেও জেতে এবং মৌসুম শেষে দুই দলের পয়েন্ট সমান হয়, তখন মুখোমুখি লড়াইয়ে গোলের হিসাবে বার্সার ৪ গোলের সেই জয় দুই দলের মধ্যে ব্যবধান গড়ে দিতে পারে।
এবারের মৌসুমে দুই দলেরই ট্রেবল জয়ের সুযোগ আছে। তবে সেই দৌড়ে রিয়াল একটু পিছিয়ে পড়েছে। চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে আর্সেনালের কাছে ৩–০ গোলে হেরেছে রিয়াল। বুধবার মাদ্রিদের ক্লাবটির মাঠে ফিরতি লেগ।
সে তুলনায় বার্সা বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে। কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ৪–০ গোলে জিতেছে বার্সা। আগামীকাল রাতে ডর্টমুন্ডের মাঠ সিগনাল ইদুনা পার্কে ফিরতি লেগ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের প্রথম ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র হলো রাজশাহীতে
রাজশাহীতে মঙ্গলবার সকালে ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়েছে। এটি দেশের প্রথম ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র। উদ্বোধন করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বনসংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী। এ সময় নতুন এই প্রজনন কেন্দ্রে গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে নিয়ে আসা হয়েছে নতুন ঘড়িয়াল জুটিকে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বন বিভাগের প্রকল্প পরিচালক ও উপপ্রধান বনসংরক্ষক গোবিন্দ রায়, বন বিভাগের ঢাকা অঞ্চলের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বনসংরক্ষক মো. ছানাউল্ল্যা পাটওয়ারী, বগুড়া সামাজিক বন অঞ্চলের বনসংরক্ষক মো. সুবেদার ইসলাম, রাজশাহী সামাজিক বন বিভাগ ও বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান শাহ্, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এ এম সালেহ রেজা, আইইউসিএন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর এ বি এম সরোয়ার আলম, রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান শাহ্।
বন বিভাগের পবা নার্সারির রেসকিউ সেন্টারে ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্রটি করা হয়েছে। শহীদ জিয়া শিশু পার্ক রোডে এর অবস্থান। ঘড়িয়ালের নিরাপত্তায় নতুন প্রজনন কেন্দ্রটির সামনে একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে ঘড়িয়াল সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য লেখা রয়েছে।
বন অধিদপ্তরের প্রধান বনসংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘নদীদূষণ, নাব্য হ্রাস, অতিরিক্ত মাছ আহরণ, অবৈধ শিকার, পাচার, ডিম নষ্ট হওয়া ও খাদ্য সংকটের কারণে ঘড়িয়ালের প্রজননে ব্যাঘাত ঘটে। এসব কারণে আজ তারা বিলুপ্তির পথে। এ কারণে প্রজনন কেন্দ্রে প্রজননের মাধ্যমে ঘড়িয়ালের বংশ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’
ঘড়িয়াল সংরক্ষণে এ উদ্যোগ নতুন নয়। ২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার একটি পুকুরে ঘড়িয়াল প্রজননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে সময় চিড়িয়াখানায় দুটি স্ত্রী ঘড়িয়াল ছিল, যেগুলো আগে জেলেদের জালে ধরা পড়ে উদ্ধার করা হয়। এর একটিকে পাঠানো হয় ঢাকা চিড়িয়াখানায়, নাম রাখা হয় ‘যমুনা’। ঢাকায় ছিল চারটি পুরুষ ঘড়িয়াল। অন্যদিকে ঢাকা থেকে একটি পুরুষ ঘড়িয়াল এনে রাজশাহীর পুকুরে ছাড়া হয়, নাম দেওয়া হয় ‘গড়াই’। রাজশাহীতে আগে থেকে থাকা স্ত্রী ঘড়িয়ালটির নাম হয় ‘পদ্মা’।
এই আন্তঃচিড়িয়াখানা বিনিময়ের মাধ্যমে ‘যমুনা’ ঢাকা চিড়িয়াখানায় তিনটি পুরুষ সঙ্গী পায়, আর রাজশাহীর ‘পদ্মা’ পায় ‘গড়াই’-কে। তবে আট বছরেও তাদের কোনো বাচ্চা হয়নি। কারণ ছিল প্রজননের অনুপযোগী পরিবেশ। এবার আইইউসিএন এবং সামাজিক বন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে রাজশাহীতে গড়ে তোলা হলো ঘড়িয়ালের উপযোগী প্রজনন কেন্দ্র। নতুন ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র ঘিরে নতুন করে আশার আলো দেখছেন প্রাণিবিজ্ঞানী ও পরিবেশবাদীরা।