আওয়ামী লীগের মৃত্যু ঢাকায়, দাফন দিল্লিতে: সালাহউদ্দিন আহমেদ
Published: 14th, April 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ঢাকায় আওয়ামী লীগের মৃত্যু হয়েছে, আর দাফন হয়েছে দিল্লিতে।
সোমবার রাজধানীর রমনার বটমূলে বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) বৈশাখী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ছাত্র-জনতাসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে ফ্যাসিস্টের পতন হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় ইতিহাস হয়ে থাকবে। বৈশাখী শোভাযাত্রা, মেলা, পান্তা এসব আমাদের সংস্কৃতির অংশ, যা নষ্ট করার জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রচলন শুরু করে আওয়ামী লীগ। এ দেশে সব জাতি ধর্মের মানুষ একসঙ্গে এসব সংস্কৃতি পালন করবে, এর মধ্যে ধর্ম চর্চাকে আনা যাবে না। যারা সংস্কৃতিকে নষ্ট করবে তাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে। এ সময় বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করে ভারতীয় সংস্কৃতি বর্জনের আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিগত ১৫ বছর পরিকল্পিতভাবে একটি দেশের সংস্কৃতি এ দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা করা হয়েছে। সকালে রাজধানীর পরীবাগ সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শুভ নববর্ষ উপলক্ষ্যে এ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সতীর্থ স্বজন।
তিনি বলেন, এমনকি এই পহেলা বৈশাখে মুখোশের আড়ালে আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হতো। এমনকি দাড়ি-টুপি নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করা হতো, দাড়ি-টুপি পরা সব মানুষ কি খারাপ? না।
জুলাই ছাত্রদলের কথা স্মরণ করে রিজভী বলেন, তুমুল আন্দোলন চলছে, আমি কারাগারে। সেখান থেকে শুনছি, তারুণ্যের উদ্দীপনা, তেজ। পুলিশ বলছে, ‘গুলি করি একটা পড়ে যায়, আবার সেখানে এসে আরেকজন দাঁড়ায়’। এই উদ্দীপনা দিয়েছে জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের গান, লেখা, অনেক কবির লেখনীর মাধ্যমে। যার জন্য আমাদের ১৬ বছরের লড়াই, সেটি আমরা নিশ্চিত করি। সেই গণতন্ত্রকে নিশ্চিত করা নিয়ে কোনো টালবাহানা করা যাবে না। এই শুভ নববর্ষে জাতির আকাঙ্ক্ষা দ্রুত ভোটাধিকার ফিরে দেওয়া। কারণ ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশের মানুষের ভোটাধিকারসহ সব অধিকার কেড়ে নিয়ে নিজের কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল।
সংস্কার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ভোটাধিকারকে কেন সংস্কারের সঙ্গে এক করে দেখা হচ্ছে, গণতন্ত্র মানেই সংস্কার। গণতন্ত্র হচ্ছে প্রবাহমান খরস্রোত নদীর মতো। এখানে কর্তৃত্ববাদের কোনো জায়গা নেই, আর যেখানে কর্তৃত্ববাদের জায়গা নেই সেখানেই গণতন্ত্র বয়ে যায়। সংস্কার হচ্ছে বয়ে যাওয়া।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহম দ গণতন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
সংবিধান অর্থবহ করতে বিচার আরও সহজলভ্য করতে হবে: প্রধান বিচারপতি
দেশ-জাতি নির্বিশেষে সাধারণ নাগরিকের জীবনে সংবিধানকে আরও কার্যকর ও অর্থবহ করে তুলতে হলে বিচার প্রক্রিয়াকে আরও সহজলভ্য, স্বচ্ছ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
শুক্রবার ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতের ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশেষ অধিবেশনে এ কথা বলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই আয়োজন শুধু একটি ঐতিহাসিক উপলক্ষ নয়, বরং এটি সাংবিধানিক আদর্শ ও ন্যায়বিচার রক্ষার প্রতিশ্রুতির একটি প্রতীকী উদযাপন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও তুরস্কের সাংবিধানিক পথচলা ভিন্ন ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে গড়ে উঠলেও দুই দেশের অভিন্ন লক্ষ্য ন্যায়বিচার, মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে প্রধান বিচারপ্রতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের উচ্চ আদালত বিভিন্ন স্বপ্রণোদিত উদ্যোগের পাশাপাশি জনস্বার্থ মামলার মাধ্যমে যে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে, তা বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তিনি বলেন, বর্তমান যুগে সাধারণ মানুষের অধিকারের সুরক্ষায় সাংবিধানিক আদালতগুলোর আরও বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে, জলবায়ু ন্যায়বিচার, ডিজিটাল অধিকার ও তথ্য সুরক্ষা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আন্তঃদেশীয় বৈষম্য মোকাবিলায় বিশ্বের প্রতিটি দেশে এমন একটি ন্যায়বিচার কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা জরুরি- যা একদিকে নিজস্ব বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে, তেমনই বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায়ও প্রাসঙ্গিক ভূমিকা পালন করবে।
প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতের প্রতি আমন্ত্রণ ও আতিথেয়তার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও গভীর করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।