সোনারগাঁয়ে বাংলা নবর্বষকে স্বাগত জানিয়ে আননদ শোভাযাত্রা, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের ৫০ বছর পূর্তি ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ১৫ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার উদ্বোধন হয়েছে।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১১টায় ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে এ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ইলিয়া সুমনা।

বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি জাদুঘরের প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু করে আদম বাজার হয়ে জাদুঘর ২নং গেইট দিয়ে প্রবেশ করে ময়ূরপঙ্খী স্টেজে গিয়ে শেষ হয়। “মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা” প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে অনুষ্ঠানটি বৈশাখী ও রবীন্দ্র সংগীত মধ্য দিয়ে শুরু হয়।

এ উপলক্ষে ফাউন্ডেশনের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে উৎসব প্রাঙ্গণ পর্যন্ত রঙ-বেরঙের বাতি ও বিভিন্ন প্রাচীন মোটিফ দিয়ে সাজানো হয়েছে ফাউন্ডেশন চত্বর।

তাছাড়া বিভিন্ন সড়কে ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে চলছে বৈশাখী প্রচারণা এবং ফাউন্ডেশন চত্বরে থাকছে জমকালো আয়োজন ও লোকজ মঞ্চে থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই মেলা ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ২৮ এপ্রিল শেষ হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ইলিয়া সুমনা, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কারুশিল্প পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালনা বোর্ডের সদস্য চন্দ্র শেখর সাহা, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমান, সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নূরে ইয়াসিন নোবেলসহ প্রমুখ।

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলম জানান, বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে এ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলো। পাশাপাশি সোনারগাঁ জাদুঘরের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব পালিত হবে। 

এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জামদানি, শতরঞ্জি, নকশিকাঁথা, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, হাতপাখা, কাঠখোদাই শিল্প, পটচিত্র শিল্প, শোলা শিল্প, বাঁশ-বেত শিল্প এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারুশিল্পীদের সৃষ্টিশীল কর্মের উপস্থাপন এবং বিপণনের সুযোগ রয়েছে।

এছাড়াও উৎসব চলাকালীন প্রতিদিনই থাকবে বাউল গান ও লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুতুলনাচ, হালখাতা, বায়স্কোপ, সাপের খেলা, নাগরদোলাসহ গ্রামীণ বিনোদনের নানা আয়োজন। থাকছে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলা—তিন গুটি, সাত গুটি, বাঘবন্দ, কানামাছি, গোল্লাছুট, বউচি ও কপাল টোক্কা।

সোনারগাঁ কারুপল্লী ও কারুশিল্প দোকান মালিক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর সাধারন সম্পাদক মোঃ কবির হোসেন বলেন, অনান্য বছরের তুলনায় এবারের বৈশাখী উৎসব অনন্য এক রুপ নিয়েছে সোনারগাঁ জাদুঘরে। সোনারগাঁ জাদুঘরে সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এবারের বৈশাখী মেলায় চোখ ধাধানো জমকালো সাজসজ্জায় সেজেছে সোনারগাঁ জাদুঘর।

নিঃসন্দেহে এই সাজসজ্জা বাংলাদেশের বিভিন্ন উৎসবের মধ্যে অন্যতম। তাই সবাইকে পরিবার পরিজন নিয়ে এই বৈশাখী মেলায় ঘুরতে আসা এবং দেশীয় তৈরী বিভিন্ন কারুপন্য ক্রয় করার অনুরোধ রইলো। ফাউন্ডেশনের পরিচালক সহ সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।

এর আগে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরিষদ চত্বর  প্রদক্ষিণ করে ভট্টপুর মডেল স্কুলের মাঠ প্রাঙ্গনে ঐতিহ্যবাহী বটতলায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।  
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ অন ষ ঠ ন উপলক ষ জ দ ঘর স ন রগ

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে বর্ষবরণে শিশু-কিশোরদের ঘুড়ি উৎসব

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পঞ্চগড়ে শিশু-কিশোরদের নিয়ে ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে সদর উপজেলার জগদল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই উৎসবের আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ষড়ঋতু। 

উৎসবে প্রায় ২০০ শিশু-কিশোর অংশ নেয়। রং-বেরঙের ঘুড়ি ও নাটাই হাতে নিয়ে জগদল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আসেন তারা। প্রজাপতি, চিল, ঈগল ও মাছ আকৃতির ঘুড়ি আকাশে উড়ায় তারা। যার ঘুড়ি বেশি সময় আকাশে থেকেছে তাকে দেওয়া হয় পুরষ্কার। উৎসবকে আরো আনন্দময় করে তুলতে আয়োজন করা হয়েছিল লোকজ সঙ্গীতের। 

ঘুড়ি উৎসব ছাড়াও ষড়ঋতু সংগঠনটি বিভিন্ন গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন করেছিল। এসব খেলা দেখতে ভিড় করেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। 

আরো পড়ুন:

ডিআরইউতে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত

বৈশাখে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস 

ষড়ঋতু সংগঠনটির সভাপতি রহিম আব্দুর রহিম বলেন, “আমাদের শৈশব কেটেছে ঘুড়ি উড়িয়ে। বারো মাস আমরা ঘুড়ি উড়াতাম। এখন শিশু-কিশোররা মোবাইলে আসক্ত। তাদের মধ্যে ঘুড়ি উড়ানোর আনন্দ ছড়িয়ে দিতেই আমাদের এই আয়োজন। শিশু-কিশোররা দারুন উপভোগ করেছে এই ঘুড়ি উৎসব।” 

তিনি আরো বলেন, “ঘুড়ি উৎসব উদযাপন আবহমান গ্রামীণ বাংলার একটি ঐহিত্য। এ উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে আমরা নিজেরাও শৈশবে ফিরে গেছি। ছোট বেলার কথা মনে পড়েছে, যখন এক টাকায় একটি রঙিন ঘুড়ি কিনতাম এবং একজন আরেকজনের ঘুড়ি কেটে দিতাম। এখন এই নীল আকাশে বেগুনি, নীল, সাদা রঙের ঘুড়ি উড়তে দেখে ভালোই লেগেছে।”

এদিকে, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন লাঠি ও হা-ডু-ডুসহ গ্রামীণ খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

ঢাকা/নাঈম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পঞ্চগড়ে বর্ষবরণে শিশু-কিশোরদের ঘুড়ি উৎসব
  • চারুকলা থেকে 'বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা'
  • পহেলা বৈশাখে ঢাকায় যত আয়োজন
  • বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু
  • বর্ষবরণে আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু
  • ঢাবিতে আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু
  • বৈশাখে কেনাবেচা ‘মন্দ নয়’
  • চারুকলার বকুলতলায় চৈত্রসংক্রান্তি উৎসব, গানে-নাচে-আবৃত্তিতে বর্ষবিদায়
  • সোনারগাঁয় কারুশিল্প মেলা শুরু আজ, চলবে ১৫ দিন