নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক আয়োজনে ও উৎসব মূখর পরিবেশের মধ্যদিয়ে বরন করা হল বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। বর্ণিল সাজে বৈশাখী শোভাযাত্রায় হরেক রঙের মুখোশ, হাতি, বাঘ, ফুল, পাখির প্রতিকৃতিগুলো ছিল নজর কাড়ার মত। 

বৈশাখী শোভাযাত্রায় ছিল সমৃদ্ধির প্রতীক কালো হাতি, ঘোড়ার গাড়ি, পালকি, কৃষক সাজে হিন্দু মুসলিম খ্রিষ্ঠান বৌদ্ধ সকল ধর্মের প্রদর্শন ও শিশুদের যেমন খুশি তেমন সাজো রুপে বাংলা সংস্কৃতির বিভিন্ন প্রতিকৃতি। যার মাধ্যমে তুলে ধরা হয় বাংলার ঐতিহ্যকে। 

সোমবার ( ১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দল, মত, র্নিবিশেষে ছোট থেকে বড় সকলের উপস্থিতিতে এই বৈশাখী শোভাযাত্রাটি বেশ আনন্দঘণ পরিবেশের সৃষ্টি করে। বাঙ্গালী সাজে ও ঢোলের তালে মাতোয়ারা ছিল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহনকারী সকলেই। 

শোভাযাত্রায় হাতি, ঘোড়া, পালকি, ঢেকি ও বাঙালি সংস্কৃতিক বিভিন্ন অনুষঙ্গ নিয়ে শোভাযাত্রাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। 

এ শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া পুরুষদের গায়ে ছিল পাঞ্জাবী ও নারীরা পরেছিলেন শাড়ি। এসময় অনেককেই লাল ও সাদা রং কে বেশ প্রাধান্য দেয়ার পাশাপশি ছিল নীল ও হলুদ রংয়ের সংমিশ্রন। রমনীদের হাত ভর্তি ছিল কাচের চুড়ি। চুলে বেলি ফুল।

শিশুরাও সেজেছে লাল, সাদার সাজে। সাধারণ পোষাকে পুরুষদের সাজও বেশ পরিপাটি ছিল। যা পুরুষদের সৌর্ন্দযকে অসাধারণ ভালা লাগা এনে দেয় রমনীদের মাঝে। বাঙ্গালীর এমন সাজ দেখার এক সুবর্ণদিন এবং পহেলা বৈশাখের হাওয়ায় গোটা নারায়ণগঞ্জ ছিল উৎসবমূখর। 

এছাড়া বাংলার এই ঐতিহ্যকে বহাল রাখতে শহর ও শহরের বাইরে বসেছে বিভিন্নস্থানে লোকজ মেলা। এবং নাচে গানে মুখরিত করতে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যাপক আয়োজন। 

শোভাযাত্রা শেষে জেলা প্রশাসনের প্রাঙ্গনে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এরপর সাপের খেলা, বানর খেলা, পুতুল নাচসহ বিভিন্ন দেশীয় খেলা ও ম্যাজিক শো দেখানো হয়। 

এদিকে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের প্রাঙ্গণে লোকজ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় উদ্যোক্তারা নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পোশাক, পণ্য সামগ্রী নিয়ে পসরা সাজিয়েছে।

অন্যদিকে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের পাশাপাশি, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), সেনাবাহিনী এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও তিন স্তরের বিশেষ নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন।

বৈশাখী শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, নারায়ণগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপ-পরিচালক ( উপ- সচিব) ড.

মো: মনিরুজ্জামান, মেজর আয়াজ, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ প্রমাণ মজুমদার, র্যাব ১১ এর সিইও এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন,জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ এ এফ এম মশিউর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মাঈনুদ্দিন আহম্মদ, মহানগর ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা বেগম, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী, জেলা কমান্ড্যান্ট আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা কানিজ ফারজানা শান্তাসহসহ স্কুল, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

রমনার বটমূলে চলছে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান

সূর্যোদয়ের পর রাজধানীর রমনার বটমূলে শুরু হয়েছে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। এবার বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মূল বার্তা ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। আলো, প্রকৃতি, মানুষ ও দেশপ্রেমের গান দিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের অনুষ্ঠান।

রমনার বটমূলে পূর্ব-পশ্চিমে অর্ধবৃত্তাকারে ৭২ ফুট লম্বা ও ৩০ ফুট প্রস্থের মঞ্চে হচ্ছে এ আয়োজন। ছায়ানটের পক্ষে আগেই সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়েছিল, এবার মোট ২৪টি পরিবেশনা হবে। এর মধ্যে ৯টি সম্মেলক গান, ১২টি একক গান ও ৩টি পাঠ। নববর্ষের কথন পাঠ করবেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী। শেষ হবে জাতীয় সংগীত দিয়ে।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে গানের মূর্ছনায় উৎসবমুখর আয়োজনে রমনা বটমূলে বাংলা ১৪৩২ বছরকে বরণ করে নেন ছায়ানটের শিল্পীরা। গান-কবিতা আর যন্ত্রের সুরে নতুন প্রভাতে নবজাগরণের আহ্বান জানান তারা। উৎসবপ্রিয় বাঙালির স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বরণ পেল ভিন্ন রঙ।

সকাল সোয়া ৬টার দিকে আহির ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে শুরু হয়েছে বর্ষবরণের এবারের আয়োজন। বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মূল বার্তা ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। বিগত বছরের অমঙ্গল দূর করে শুভ চিন্তার উদয় হোক, এ প্রত্যাশা সবার।

এবারের আয়োজনে পুরুষ শিল্পীদের পোশাক মেরুন রঙের পাঞ্জাবি ও সাদা পায়জামা। নারীদের মেরুন পাড়ের অফ হোয়াইট শাড়ি। এই মেরুন রঙের সঙ্গেই মানানসই রং করা হয়েছে মঞ্চের। প্রতিবছর মঞ্চের আকৃতি একই রকম থাকে, শুধু শিল্পীদের পোশাকের রঙের সঙ্গে মানিয়ে মঞ্চে রঙের পরিবর্তন করা হয়। গতবারের রং ছিল হালকা সবুজ।  

বাংলা বর্ষবরণের এই আয়োজন সরাসরি সম্প্রসার করা হচ্ছে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলেও এই অনুষ্ঠান প্রচার করা হচ্ছে।

দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংস্থা ছায়ানট ১৯৬৭ সাল থেকে রমনার এই বটমূলে পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে। এবার ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নিতে গত তিন মাস ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে চলে গানের মহড়া। আর ৮ এপ্রিল রমনার বটমূলে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়।

ঢাকা/সুকান্ত/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডাক্তার মমতাজ বেগম ইউনিভার্সিটিতে পয়লা বৈশাখ উদযাপিত
  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজনে বর্ষবরণ
  • উৎসবের আমেজে নতুন বছর বরণ
  • ময়মনসিংহে বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বর্ষবরণ উদযাপন 
  • কুমিল্লায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে বর্ষবরণ
  • ছায়ানটের অনুষ্ঠানে গাজায় নিহতদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা
  • রবীন্দ্রসরোবরের উন্মুক্ত চত্বরে প্রকৃতিকে সঙ্গে নিয়ে বর্ষবরণ
  • ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি, গাজায় নিহতদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা
  • রমনার বটমূলে চলছে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান