বোর্নিও দ্বীপের নুসানতারায় ৩ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে তৈরি হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার স্বপ্নের সবুজ রাজধানী। নতুন রাজধানী তৈরির কাজ জোরেশোরে চলছে। বিপুলসংখ্যক পর্যটক নতুন রাজধানীর নির্মাণকাজ দেখতে সেখানে বেড়াতে যাচ্ছেন। বনের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দেওয়া চকচকে সরকারি ভবনই শুধু নুসানতারায় পর্যটকদের স্বাগত জানাচ্ছে না, সেগুলোর সঙ্গে সেখানে আছে অসংখ্য ইঁদুর।

নুসানতারায় পর্যটকদের ফেলে যাওয়া আবর্জনার মধ্যে ছুটে বেড়ানো ইঁদুরের বেশ কয়েকটি ভিডিও গত কয়েক দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওগুলো ভাইরাল হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে নুসানতারা রাজধানী কর্তৃপক্ষ। তারা শহরজুড়ে কয়েক শ ইঁদুর ধরার ফাঁদ পেতেছে। ইঁদুর মোকাবিলায় বাড়তি আরও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।

ইন্দোনেশিয়া সরকার নুসানতারাকে একটি উচ্চপ্রযুক্তির পরিবেশবান্ধব মহানগর হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। তাদের এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা ভেস্তে যাওয়া আটকাতে হলে আগে তাদের ইঁদুর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

রাজধানী কর্তৃপক্ষের উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ বিভাগের উপপ্রধান টমাস উমবু পাতি তেনা বলেছেন, ‘এটা বন, পাহাড়ি এলাকা। তাই প্রাকৃতিকভাবেই এখানে ইঁদুরের অনেক পুরোনো বাসা আছে। কিন্তু আমরা অলস বসে নেই। আমাদের দল এটা নিয়ে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে।’

ইন্দোনেশিয়ার বর্তমান রাজধানী জাকার্তা ঘনবসতিপূর্ণ। এ ছাড়া সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে থাকায় মহানগরটি ক্রমেই পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে রাজধানী বোর্নিও দ্বীপের প্রাণকেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ২০২২ সালে ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্টে একটি আইন পাস হয়।

ওই বছরই নতুন রাজধানীর নির্মাণকাজ শুরু হয়। নতুন রাজধানী ১৯ লাখ মানুষের বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। কিন্তু নির্মাণ ক্ষেত্রজুড়ে ছুটে বেড়াচ্ছে ইঁদুর আর ইঁদুর।

ঈদুল ফিতরের ছুটির মধ্যে ৬৪ হাজারের বেশি পর্যটক ভবিষ্যতের রাজধানী নুসানতারা ঘুরে দেখতে গিয়েছিলেন। তাঁদের অনেকেই নগরীর মসৃণ সড়ক এবং আধুনিক স্থাপত্যশৈলি দেখে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন। তবে কেউ কেউ সেখানে আবর্জনা, বিশেষ করে প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আবর্জনার কারণেই ইঁদুরের উৎপাত বেড়ে গেছে, বলেছে রাজধানী কর্তৃপক্ষ।

বহু পর্যটক ইন্দোনেশিয়ার ভবিষ্যৎ রাজধানী নুসানতারায় বেড়াতে আসেন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইন দ ন শ য় র ন স নত র য়

এছাড়াও পড়ুন:

সাগরপাড়ে বৈশাখী উৎসব, পর্যটকদের উচ্ছ্বাস

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে জমজমাট বৈশাখী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) বৈশাখের প্রথম দিন সকাল থেকেই সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী ও ইনানী পয়েন্টে ভিড় করছেন হাজারো পর্যটক ও স্থানীয় মানুষ।

রঙ-বেরঙের পোশাক, মুখে হাসি আর হাতে পান্তা-ইলিশের থালা—সব মিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে মুখরিত সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট। সৈকতে বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে আনন্দ শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে এবং বৈশাখী মেলা বসেছে। লাবণী পয়েন্টে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উন্মুক্ত মঞ্চ করা হয়েছে।

সবার প্রত্যাশা, নতুন বছর মানুষের জীবনে বয়ে আনবে অনাবিল আনন্দ। থাকবে না হিংসা-বিদ্বেষ, দুর্নীতি ও হয়রানি।

সকাল ১০টার পর থেকে সৈকতে ভিড় বাড়তে থাকে। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে নানা বয়সের মানুষ যোগ দেন বৈশাখী উৎসবে।

ঢাকার বাসাবো থেকে আসা পর্যটক রণধীর দিব্য বলেছেন, সমুদ্র আর বৈশাখী উৎসব একসঙ্গে উপভোগ করার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। কক্সবাজারে নববর্ষ উদযাপন অনেক আনন্দ দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা জুবায়ের আহমদ বলেছেন, পহেলা বৈশাখে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সমুদ্র দেখতে এলাম। এ ধরনের উৎসব স্থানীয় পর্যটন শিল্পকে যেমন চাঙ্গা করে, তেমনই আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে সবাইকে আরো গভীরভাবে যুক্ত করে।

পর্যটক ও দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসন কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সহায়তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। সৈকতে ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিচকর্মীরা সার্বক্ষণিক পর্যটকদের সহায়তা করছেন।

বিচকর্মীদের সহকারী সুপারভাইজার বেলাল হোসেন বলেছেন, ঈদের পর সৈকতে এটি দ্বিতীয় বৃহৎ পর্যটক সমাগম। পহেলা বৈশাখে সৈকতে আনন্দ করতে পরিবার ও আপনজনদের নিয়ে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন বেড়াতে এসেছেন। তাদেরকে আমরা সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

১৪৩২ বঙ্গাব্দের বৈশাখী উৎসব ঘিরে কক্সবাজারে পর্যটকদের উপস্থিতি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। হোটেল-মোটেল, খাবারের দোকান ও পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায় চাঙাভাব দেখা দিয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিয়নের প্রধান (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. আপেল মাহমুদ বলেছেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন উৎসব উদযাপনে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সৈকতে প্রতিটি পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা আছেন। পর্যটকরা যে কারো অনিয়মের বিরুদ্ধে ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে পারবেন। কেউ পর্যটকদের হয়রানির চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মায়াময় মালদ্বীপে
  • মালদ্বীপে ইসরায়েলিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
  • ‘বেওয়াচ হোটেল কক্সবাজার’
  • সমুদ্রসৈকতে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, পর্যটকের ঢল
  • সাগরপাড়ে বৈশাখী উৎসব, পর্যটকদের উচ্ছ্বাস