নববর্ষের ঐতিহ্য: কুমিল্লায় শতবর্ষী মাছের মেলায় ক্রেতাদের ভিড়
Published: 14th, April 2025 GMT
কুমিল্লা নগরের রাজগঞ্জ বাজার। আজ সকাল ৯টায় বাজারে গিয়ে ভিন্ন এক চিত্র চোখে পড়ে। চারদিকে শুধুই মাছ আর মাছ। কাতলা মাছে সেজেছে সারি সারি মাছের দোকানগুলো। মূল বাজার ছাড়িয়ে পুরোনো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই ধারে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসেছে মাছের মেলা।
প্রতিবছর বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে এখানে কাতলা মাছের মেলা বসে। এটি কুমিল্লার শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্য। মেলায় সারি সারি কাতলা মাছ থেকে মুগ্ধ হন ক্রেতারা। বিকিকিনিও হয় বেশ জমজমাট। এবারও রাজগঞ্জ বাজার ও এর আশপাশের সড়কে বসেছে কাতলা মাছের মেলা। মূলত কাতলা মাছের মেলা হলেও অন্যান্য মাছও পাওয়া যায়। এবার মেলায় মাছের ৮০ শতাংশই কাতলা। এই মেলা চলবে আগামীকাল মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত। মেলাকে কেন্দ্র করে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নেমেছে রাজগঞ্জ বাজারে। রয়েছে উৎসুক জনতার ভিড়ও।
মাছ বিক্রেতাদের ভাষ্য, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কাতলা মাছ বেশি এসেছে মেলায়। কুমিল্লা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে মাছ নিয়ে আসেন শৌখিন বিক্রেতারা। ৩–২০ কেজি ওজনের কাতলা মাছ রয়েছে মেলায়। উৎপাদন খরচ বাড়ায় গত বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেড়েছে।
সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মেলায় ঘুরে দেখা যায়, কোথাও পানির মধ্যে জীবিত কাতলা মাছ রেখে বিক্রি করা হচ্ছে। আবার কোথাও ডালার মধ্যে মাছ লাফালাফি করছে। ডালার মধ্যে বড় বড় কাতলা মাছের সঙ্গে সাজানো আছে বড় আকারের রুই, মৃগেল ও কার্প মাছও। কাতলা মাছের কেজি সর্বোচ্চ ১ হাজার ১০০ টাকা; ১৫–২০ কেজি ওজনের মাছের দাম এটি। সর্বনিম্ন প্রতি কেজির দাম ৪০০ টাকা; সে ক্ষেত্রে মাছের ওজন ৩ কেজির মতো। আকারভেদে ক্রেতারা দরদাম করছেন। রুই মাছ ৪০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। জীবিত মাছের দাম একটু বেশি। এর মধ্যে পুকুর-দিঘিতে চাষ হওয়া মাছের চাহিদা বেশি। আকারে খুব বেশি বড় না হলেও স্বাদ ভালো হওয়ায় এই মাছের দামও কিছুটা বেশি। মেলায় কুমিল্লা ছাড়াও চাঁদপুর, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, ফেনীসহ যশোর, সাতক্ষীরা, রাজশাহী থেকেও মাছ এসেছে।
অনেকে মেলা থেকে বড় মাছ কিনে আত্মীয়স্বজনের বাসায় পাঠান। অনেকে মেলার মাছ দিয়ে অতিথি আপ্যায়নও করেন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তোলারাম কলেজে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের বাংলা বর্ষপঞ্জি বিতরণ
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সরকারি তোলারাম কলেজ (সতক) শাখার উদ্যোগে বাংলা বর্ষপঞ্জি বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করে।
১লা বৈশাখ রোববার (১৪ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে কলেজের সম্মানিত অধ্যক্ষ জনাব প্রফেসর বিমল চন্দ্র দাস, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, শের-ই-বাংলা ছাত্রাবাসের সম্মানিত সুপার জনাব মোঃ আনারুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব মোঃ মজনুর রহমান সহ অন্যান্য সম্মানিত শিক্ষক ও নেতৃবৃন্দের মাঝে বাংলা বর্ষপঞ্জি বিতরণ করা হয়।
বর্ষপঞ্জি বিতরণ কর্মসূচীতে মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ মহানগর শাখা সভাপতি এইচএম শাহীন আদনান, সহ-সভাপতি মুহাম্মদ নোমান আহমদ।
এসময় উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের এই সময়োপযোগী উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক চেতনা ও সময়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করায় এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। বাংলা বর্ষপঞ্জি বিতরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নববর্ষের আনন্দঘন পরিবেশে নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি এক গভীর দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছে।
এ সময় বিভিন্ন বন্ধুপ্রতিম রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন, যারা এ উদ্যোগকে সম্প্রীতি ও সম্মিলনের প্রতীক হিসেবে মূল্যায়ন করেন।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সতক শাখা সভাপতি শাহ্ মুহাম্মদ ছগির হোসেন জানান, “আমরা চাই আমাদের শিক্ষাঙ্গনে বাংলা নববর্ষ শুধু উৎসব নয়, বরং একটি সচেতন সাংস্কৃতিক চর্চার প্রতীক হয়ে উঠুক। বর্ষপঞ্জি বিতরণ তারই একটি প্রয়াস।”
এই কার্যক্রম সরকারি তোলারাম কলেজের নববর্ষ উদযাপনকে করেছে আরও অর্থবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ।