মুন্সীগঞ্জে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত বিএনপির আনন্দ শোভাযাত্রায় হওয়া সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন যুবক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আতাউর করিম দুইজনকে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

আরো পড়ুন:

শরীয়তপুরে আবারো ককটেল বিস্ফোরণ, সংঘর্ষ

নলকূপের পানি নিয়ে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক

হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া দুইজন হলেন- মো.

শুভ (২৮) ও শীমন (২০)। তাদের বাড়ি সদর উপজেলায় গোসাইবাগ এলাকায়। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে আজ দুপুর ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে শোভাযাত্রা বের করে জেলা বিএনপি। এতে জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি দলটির নেতাকর্মীররা অংশ নেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় শোভাযাত্রাটি পৌঁছালে কিছু নেতাকর্মীর মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হট্টগোল শুরু হয়য়। পরে তারা সংঘর্ষে জড়ান। এসময় আহত হন কয়েকজন। পরে শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আহতদের মধ্যে দুইজন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিবি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমি শোভাযাত্রার অগ্রভাগে ছিলাম। পেছনে কারা হট্টগোল করেছে তা আমি দেখিনি। পরে নেতারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। কথা কাটাকাটির জোরে কয়েকজনের মধ্যে ঘটনাটি ঘটতে পারে। তাদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আতাউর করিম বলেন, “আজ দুপুরে দুইজন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, “তুচ্ছে ঘটনা নিয়ে কিছুটা হট্টগোলের খবর পেয়েছি। তবে নিজেরাই তা মিটিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”

ঢাকা/রতন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ব এনপ স ঘর ষ দ ইজন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ড্রোন শো ও কনসার্টে যা থাকছে

পুরোনো বছরের বিদায়ের আগে চৈত্রের শেষ খরতাপেও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হাজির হয়েছিলেন সংগীতের অনুরাগীরা। বাঙালি, মারমা, ত্রিপুরা, চাকমা, খাসিয়া, গারোসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের দর্শকেরা গলা মিলিয়েছেন, নেচেছেন। সংগীতের মুহূর্তগুলোতে উপভোগ করেছেন। চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গতকাল ‘চৈত্রসংক্রান্তি ব্যান্ড শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। শেষে বিকেলে মঞ্চে আসে জনপ্রিয় ব্যান্ড দলছুট। মুহুর্মুহু করতালিতে দলছুটকে অভিবাদন জানান দর্শকেরা।

জনপ্রিয় গান ‘দিন বাড়ি যায়’ দিয়ে পরিবেশনা শুরু করে দলছুট। শেষ বিকেলটাকে রাঙিয়ে তোলে ব্যান্ডটি। সুরের মোহ ছড়িয়ে পড়ে, জড়িয়ে পড়েন শ্রোতারা। গানটির রেশ ফুরানোর আগেই ধরে ‘পরী’। গানটিও দলছুটের শ্রোতাদের মুখস্থ। সুরটাও চিরচেনা। এরপর ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর’ ও ‘গাড়ি চলে না, চলে না’ দিয়ে পরিবেশনা শেষ করে ব্যান্ডটি।

হালে ওপেন এয়ার (খোলা আকাশের নিচে) কনসার্টের চল হারাতে বসেছে। কনসার্ট এখন চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী হয়ে গেছে। এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খোলা আকাশের নিচে গান শুনতে শ্রোতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

অনুষ্ঠানটি উন্মুক্ত ছিল। শিল্পকলা একাডেমি বলছে, চৈত্রসংক্রান্তিতে এবারই প্রথমবার সমতল ও পাহাড়ের ব্যান্ড নিয়ে এমন আয়োজন করছে শিল্পকলা একাডেমি।
এদিন পাহাড় ও সমতলের এক ডজন ব্যান্ডের পরিবেশনা ছিল। দলছুটের আগে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ব্যান্ড ইমাং, খাসিয়া সম্প্রদায়ের ব্যান্ড ইউনিটি গান পরিবেশন করেছে। এরপর গেয়েছে মারমা সম্প্রদায়ের ব্যান্ড চিম্বুক। ‘ফাইদি ফাইদি ও ববই বৈসু বেরেনি’ ও ‘ও জনি জং’ শিরোনামে দুটি গান পরিবেশন করেছে ইমাং। ত্রিপুরা ভাষা ‘ইমাং’ শব্দের অর্থ স্বপ্ন। ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর স্বপ্ন পূরণ করতে গাইছে ব্যান্ডটি। চিম্বুক পাহাড়ের নামে গড়ে উঠেছে মারমা সম্প্রদায়ের ব্যান্ড চিম্বুক। ব্যান্ডটি সাংগ্রাই গান পরিবেশন করেছে। বিকেল চারটায় ঢাকঢোলের তালে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এ সময় মঞ্চে আসেন ৫০ জনের মতো ঢুলি, বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢোলের পরিবেশনায় মুগ্ধ হয়েছেন শহুরে দর্শকেরা। এরপর লাঠিখেলা পরিবেশন করেন একদল লাঠিয়াল।

এদিন সন্ধ্যার পর ওয়ারফেজ, ভাইকিংস, অ্যাভোয়েড রাফা, লালন, আর্টসেল, স্টোনফ্রি, চাকমা সম্প্রদায়ের ব্যান্ড ইনভোকেশন ও গারো সম্প্রদায়ের ব্যান্ড এফ মাইনরের গাওয়ার কথা ছিল।

আয়োজনের শুরুতে বক্তব্য দেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন এবং শিল্পকলার সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন জোনাকি জ্যোতি ও সাকিব।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আজ পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে থাকছে ড্রোন শো ও কনসার্ট। নববর্ষ ১৪৩২ উদ্‌যাপন উপলক্ষে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় চীনা দূতাবাস, ঢাকার কারিগরি সহায়তায় এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় ‘ড্রোন শো’ ও ‘নববর্ষ কনসার্ট’ আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার বিকেল তিনটায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে ।
নববর্ষ কনসার্টে শুরুতেই রয়েছে ‘বেসিক গিটার লার্নিং স্কুল’ বান্দরবান। এরপর গারো জাতিগোষ্ঠীর ব্যান্ড ‘এফ মাইনর’ দুটি সংগীত পরিবেশন করবে। সমবেত সংগীত ‘এসো হে বৈশাখ’ গানটি উপস্থিত সব শিল্পী পরিবেশন করবেন। দুটি একক সংগীত পরিবেশন করবে মিঠুন চক্র এবং ‘দেওরা’সহ আরও একটি ঐতিহ্যবাহী পালা পরিবেশন করবেন ইসলামউদ্দিন পালাকার।

এরপর দ্বৈত ও দুটি একক সংগীত পরিবেশন করবেন রাকিব ও সাগর দেওয়ান এবং দুটি দ্বৈত সংগীত পরিবেশন করবেন রাকিব ও আরজ আলী ওস্তাদ। ‘চলো নীরালায়’সহ তিনটি একক সংগীত পরিবেশন করবেন আতিয়া আনিশা, ‘মাঝে মাঝে তুমি এলে’, ‘মানুষ কেন এ রকম’ ও ‘গল্প না’ নামের গান তিনটি পরিবেশন করবেন আহমেদ হাসান সানি এবং জুলাই আন্দোলনের গানসহ ৩টি গান পরিবেশন করবেন পারশা । এরপর ‘ব্যান্ড সংগীত’ পরিবেশন করবেন অ্যাশেজ ব্যান্ড।
সন্ধ্যা সাতটায় শুরু হবে আকর্ষণীয় ‘ড্রোন শো’। সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী রাত ১০টা ১৮ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ড্রোন শোর কিছু ছবি শেয়ার করেন। ফারুকী লেখেন, ‘আজকের ড্রোন শোর কিছু ঝলক! এটি পুরো শোর কেবল এক ঝলকমাত্র। ১৪ এপ্রিল, বেলা তিনটায়, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ড্রোন শো আর লাইভ মিউজিকের অসাধারণ এক প্রদর্শনী দেখার আমন্ত্রণ রইল।’ তিনি আরও জানান, ‘এই ড্রোন শো চীনের দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি উপহার।’

এর আগে গত শনিবার সংসদ ভবনের সামনে মহড়ায় দেখা যায় মুগ্ধকর ড্রোন শোয়ের ঝলক।  প্রথমবারের মতো আকাশে ভেসে ওঠে ড্রোনচিত্র ও রঙিন লেজার রশ্মি। এই শোতে ১৯৭১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়কালকে তুলে ধরা হয় বিভিন্ন প্রতিকৃতির মাধ্যমে। উঠে আসে ‘২৪-এর বীর’, পায়রার খাঁচা ভাঙা থিম, ফিলিস্তিনের জন্য প্রার্থনা এবং বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্বের শুভেচ্ছাবার্তা। সেদিনের মহড়ায় উপস্থিত মুগ্ধ হয়ে দেখেছেন বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো আন্দোলনকারী আবু সাঈদ, পানির বোতল হাতে প্রতীকী মুগ্ধতা, আর ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানানো বার্তা। এ ছাড়া জুলাই আন্দোলনের প্রসঙ্গ ও গণ-অভ্যুত্থান থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার প্রতিবাদও শোতে স্থান পেয়েছে প্রতীকীভাবে। বিভিন্ন বার্তায় আয়োজকেরা জানিয়েছে, এই ড্রোন শো কেবল বিনোদনের নয়, বরং এটি বর্তমান সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। প্রযুক্তির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে গণ–আন্দোলন, মানবিক বিপর্যয় এবং আশা-ভবিষ্যতের ইঙ্গিত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি ড্রোন শো’র মাধ্যমে শ্রদ্ধা
  • নববর্ষেও বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ: দুলু
  • আওয়ামী লীগের মৃত্যু ঢাকায়, দাফন দিল্লিতে: সালাহউদ্দিন আহমেদ
  • পুরনো ঐতিহ্যে ফিরেছে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
  • জাবিতে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত 
  • মা-বাবার সঙ্গে হালখাতায় যেতাম: মিমি চক্রবর্তী
  • মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ড্রোন শো ও কনসার্টে যা থাকছে
  • চট্টগ্রামে নববর্ষের পূর্ব নির্ধারিত সব অনুষ্ঠান হবে: জেলা প্রশাসন
  • চারুকলায় আগুন দেওয়া ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ