মেয়েলি কণ্ঠে সম্পর্ক করে অপহরণ, যুবক গ্রেপ্তার
Published: 14th, April 2025 GMT
মেয়ে কণ্ঠে মোবাইলে কথা বলে যশোরের যুবক মো. আবু সুফিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন মো. রোমান মোল্লা (২১) নামে অপর এক যুবক। পরে দেখা করতে ডেকে নিয়ে আবু সুফিয়ানকে অপহরণ করেন তিনি। ঘটনাটি জানতে পেরে সোমবার (১৪ এপ্রিল) অপহৃতকে উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী। একই সঙ্গে তারা অপহরণকারী রোমানকেও গ্রেপ্তার করে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মো.
উদ্ধার হওয়া আবু সুফিয়ান যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের ওবায়দুর রহমানের ছেলে। অপহারণকারী রোমান গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার দক্ষিণ গোবরা গ্রামের শাকিল মোল্লার ছেলে।
আরো পড়ুন:
কচুয়ায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যুবলীগ নেতাকে হত্যা
চট্টগ্রামের ডিসি হিলে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান মঞ্চ ভাঙচুর, আটক ৬
পুলিশ জানায়, আজ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার দক্ষিণ গোবরা এলাকার সার গোডাউনের পেছনের একটি বাসা থেকে থেকে অপহৃতকে উদ্ধার ও অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান বলেন, “গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে অপহৃত আবু সুফিয়ানকে উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে অপহরণকারী রোমানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। রোমান মোল্লা মেয়ে সেজে মোবাইলে কথা বলে আবু সুফিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তিনি আবু সুফিয়ানকে তার বাড়িতে নিয়ে যান।”
তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার রোমান একটি সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রের সদস্য। তারা ব্ল্যাকমেইল ও মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে সাধারণ মানুষকে অপহরণ করে। গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক অপহরণ
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ১১ বছর আজ: কনডেমড সেলে তারেক সাঈদ, বরাদ্দ সাধারণ বন্দীর খাবার
নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি র্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ আগে কারাগারে আয়েশেই দিন কাটাতেন। বাসা থেকে রান্না করা খাবার যেত চাকরিচ্যুত এই লেফটেন্যান্ট কর্নেলের জন্য। সাধারণ কারাবন্দীদের জন্য বরাদ্দ খাবার তিনি খেতেন না।
তবে গণ–অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চিত্র পাল্টে গেছে। তারেক সাঈদ এখন কুমিল্লার কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেমড সেলে আছেন। তাঁর জন্য ‘আলাদা’ ব্যবস্থা নেই। সাধারণ কারাবন্দীদের খাবার খেতে দেওয়া হয় তাঁকে।
আলোচিত এই সাত খুনের ঘটনার ১১ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ ২৭ এপ্রিল। ২০১৪ সালের এই দিনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের লিংক রোড থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়। বিষয়টি দেখে ফেলায় অপহরণের শিকার হন আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক মো. ইব্রাহিম। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ, পরদিন পাওয়া যায় আরেকটি লাশ। নজরুল, চন্দন ও ইব্রাহিম ছাড়া হত্যার শিকার অন্য ব্যক্তিরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম।
আলোচিত এই সাত খুনের ঘটনার ১১ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ ২৭ এপ্রিল। ২০১৪ সালের এই দিনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের লিংক রোড থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়।এ ঘটনায় হওয়া দুই মামলায় ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন নারায়ণগঞ্জের আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন দণ্ডিত ব্যক্তিরা। হাইকোর্ট ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল এবং অপর ১১ আসামির দণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া ৯ আসামির দণ্ড বহাল থাকে। আসামিপক্ষ হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে। এখনো তা নিষ্পত্তি হয়নি।
তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ, পরদিন পাওয়া যায় আরেকটি লাশ। নজরুল, চন্দন ও ইব্রাহিম ছাড়া হত্যার শিকার অন্য ব্যক্তিরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম। কনডেমড সেলে যেমন আছেন তারেক সাঈদমৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের কারাগারের যে বিশেষ সেলে রাখা হয়, সেটি কনডেমড সেল বা নির্জন প্রকোষ্ঠ। কারাগারের অন্য বন্দীদের তুলনায় কনডেমড সেলের বন্দীদের জন্য রয়েছে ভিন্ন আচরণবিধি। অন্য বন্দীদের থাকার জায়গার সঙ্গেও কনডেমড সেলের পার্থক্যও আছে অনেকটা। কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের তেমন একটি কনডেমড সেলে আছেন তারেক সাঈদ।
জানতে চাইলে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবদুল্ল্যাহেল আল-আমিন প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের আপিল বিভাগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া তারেক সাঈদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাটির বিচার কার্যক্রম চলছে। মাঝেমধ্যে কারা–চিকিৎসক কনডেমড সেলে এসে তারেক সাঈদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা–নিরীক্ষা করেন। পরিবারের সদস্যরা মাসের নির্দিষ্ট দিনে কারাগারে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। তবে তাঁর জন্য তাঁদের পরিবারের আনা কোনো খাবার গ্রহণ করা হয় না।
সাধারণ বন্দীদের যে খাবার দেওয়া হয়, কনডেমড সেলে তারেক সাঈদকে সেই খাবার দেওয়া হয় বলে জানান কারা কর্মকর্তা আল-আমিন। খাবারের তালিকা প্রসঙ্গে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সকালে রুটি ও ভাজি দেওয়া হয়। দুপুরে খেতে দেওয়া হয় ভাত, ডাল ও সবজি। আর রাতে দেওয়া হয় ভাত, ডাল, সবজি ও মাছ।
হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিদের মধ্যে তারেক সাঈদ ছাড়া রয়েছেন সাবেক কোম্পানি কমান্ডার মেজর (চাকরিচ্যুত) আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম এম রানা এবং সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা নূর হোসেন।
কারা অধিদপ্তর জানিয়েছে, এম এম রানা আছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার–২–এ। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২–এর জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক আল–মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, সেখানে তাঁকে একটি সেলে রাখা হয়েছে।
আর আরিফ আছেন কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার–৪–এ। সেখানে তাঁকে একটি কনডেমড সেলে রাখা হয়েছে বলে কারা অধিদপ্তর জানিয়েছে।