খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকের সামনে ২৪ ঘণ্টা ধরে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। হল খুলে দেওয়ার দাবিতে গতকাল রোববার বেলা তিনটার দিকে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। হল খুলে না দেওয়া পর্যন্ত সেখানেই থাকবেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের দপ্তরের সহকারী পরিচালক রাজু আহম্মদ তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তিনি আজ সন্ধ্যায় সিন্ডিকেটের সভা হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের চলে যেতে অনুরোধ করেন। তবে হল খুলে না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

আজ বেলা দেড়টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের প্রধান ফটকের বারান্দায় কয়েকটি বিছানা পেতে অবস্থান করছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। বিস্কুট দিয়ে দুপুরের খাবার সেরে নিচ্ছিলেন তাঁরা। প্রশাসনিক ভবনের সামনে তাঁদের ব্যবহার্য কাপড়চোপড় রোদে শুকাতে দেওয়া আছে।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গতকাল রাতে তাঁরা ২২ জন এখানে ছিলেন। প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান করলেও এই ভবনের শৌচাগার ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের শৌচাগার ব্যবহার করেছেন। প্রচণ্ড গরমে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। খাওয়াদাওয়া এবং নানাবিধ কাজের প্রয়োজনে ক্যাম্পাস থেকে একবার বের হলে পরে ভেতরে ঢুকতে অসুবিধায় পড়ছেন। দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীরা নানাভাবে শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করছেন।

পয়লা বৈশাখের দিনেও আন্দোলন চালিয়ে যেতে হচ্ছে—এ নিয়ে আক্ষেপ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, কোভিড ও পরে রোজার ছুটিসহ বিভিন্ন কারণে গত পাঁচ বছর বাংলা বর্ষবরণে কুয়েটে বড় কোনো আয়োজন ছিল না। তাঁরা আশা করেছিলেন, এ বছর বড় আয়োজনে পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন করবেন। অথচ এই দিনে নিদারুণ কষ্টে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। কিন্তু হল খোলার যৌক্তিক দাবিকে কানে তুলছে না প্রশাসন।

আরও পড়ুনকুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সামনে রাতভর অবস্থানের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের১৮ ঘণ্টা আগে

এদিকে আজ ‘কুয়েট ১৯’ নামের একটি ফেসবুক পেজে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের একাত্ম হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ওই পেজ থেকে কুয়েট শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দিলেও, শিক্ষার্থীদের প্রবল চাপে তা ভেঙে পড়ে এবং অবশেষে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান ভিসি (যিনি শিক্ষার্থীদের দ্বারা অবাঞ্ছিত হিসেবে চিহ্নিত) অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ প্রশাসনের প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের চেষ্টা করেন। শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশের অনুমতি চাইলেও প্রশাসন রাত আটটা পর্যন্ত সময় পাওয়ার পরও হল খুলে দেয়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা খোলা আকাশের নিচে প্রশাসনিক ভবনের সামনে রাত্রিযাপনের সিদ্ধান্ত নেন এবং সেই অনুযায়ী অবস্থান নেন।

আরও পড়ুনকুয়েট ঘিরে আবার উত্তেজনা, ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন১৩ এপ্রিল ২০২৫

বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের সন্ত্রাসীরা কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়, যাতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। এই হামলার ঘটনায় এখনো কোনো সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বরং উল্টো আহত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধেই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীরা গতকাল বিকেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। গতকাল দুপুরের পর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাত আটটার মধ্যে আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। বিকেল পাঁচটার দিকে কুয়েট প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রশাসনের কাছে আবেদনের কপি তুলে দেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের পক্ষে আবেদন গ্রহণ করেন ইইই অনুষদের ডিন রফিকুল ইসলাম।

১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটিও করা হয়েছে। ওই দিন রাতেই খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলা করেছেন নগরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোচেন আলী নামের এক ব্যক্তি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হল খ ল প রব শ গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

গরমে স্বস্তির পানীয়

চড়া রোদ আর তীব্র গরমে জীবন যখন হয়ে ওঠে ক্লান্তিকর, তখন এক গ্লাস ঠান্ডা পানীয় যেন স্বস্তির চুমুক। এই গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে কিছু সুস্বাদু ও উপকারী পানীয়ের রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী ইসরাত জাহান লাকী

ফ্রুট পাঞ্চ  
উপকরণ: তরমুজের রস ১ কাপ, ১টি লেবুর রস, আনারসের রস ১ কাপ, সুগার সিরাপ ১ কাপ, বরফ পরিমাণমতো, লবণ ১ চিমটি।
প্রস্তুত প্রণালি: সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। গ্লাসে ঢেলে বরফ কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।

কোল্ড ডেভিনশন  
উপকরণ: ঘন দুধ ২ কাপ, ভ্যানিলা আইসক্রিম ৪ স্কুপ, চকলেট হরলিক্স সিকি কাপ, চিনি সিকি কাপ ও বরফ।
প্রস্তুত প্রণালি: সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। ব্লেন্ড করার সময় ১/২ কাপ নিউট্রেলা বা নসিলা দিলে নিউট্রেলা সেক হয়ে যাবে। এর সঙ্গে ৪ পিচ ওরিও গুঁড়া করে দিতে হবে। পরিবেশনের সময় ওপরে চকলেট কুচি দিয়ে পরিবেশন করতে হবে। 

স্মোক ম্যাংগো ধামাকা   
উপকরণ: কাঁচা আম ২টি, সরিষার তেল পরিমাণমতো, চিনি সিকি কাপ, কাঁচামরিচ ১টি, কাসুন্দি ১ টেবিল চামচ, টালা জিড়া গুঁড়া ১/২ চামচ, পানি দেড় কাপ, ধনেপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, সামান্য লবণ, বরফ কুচি।
প্রস্তুত প্রণালি: কাঁচা আমের গায়ে তেল মাখিয়ে নিয়ে চুলায় পুড়িয়ে নিন। এরপর পোড়া আম পানি দিয়ে সেদ্ধ করুন। আমের সঙ্গে সব উপকরণ মিশিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করুন। পুদিনা পাতা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

ব্লু মুন ড্রিংকস  
উপকরণ: বরফ কুচি ৪/৫ কিউব, সোডা ওয়াটার ১ গ্লাস, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, নীল রঙের ফুড কালার ১ ড্রপ, লবণ ১ চিমটি।
প্রস্তুত প্রণালি: সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তারপর লেবুর স্লাইজ ও পুদিনা পাতা দিয়ে সাজিয়ে
পরিবেশন করুন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ