সমুদ্রসৈকতে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, পর্যটকের ঢল
Published: 14th, April 2025 GMT
কক্সবাজারে রয়েছেন লাখো পর্যটক। তাঁদের কথা মাথায় রেখে এবার সমুদ্রসৈকতেই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। সকালে সৈকতের সিগাল পয়েন্ট থেকে বৈশাখী শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি শেষ হয়েছে লাবনী পয়েন্টে। সেখানে নির্মাণ করা মঞ্চে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সকাল আটটার দিকে শুরু হয় শোভাযাত্রাটি। এতে পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয় হোটেল-রেস্তোরাঁমালিক-কর্মী, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। বাদ্যের তালে তালে নেচেগেয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন তাঁরা। শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন।
লাবনী পয়েন্টে স্থাপন করা মঞ্চের পাশে রঙিন কাপড়ে সাজানো হয় কয়েকটি ঘোড়া। পর্যটকেরা সেসব ঘোড়ার পিঠে চড়ে সৈকত ঘুরে বেড়ান। ছিল পান্তাভাতের সঙ্গে রুপালি ইলিশ এবং আলু ও শুঁটকিভর্তা খাওয়ার সুযোগ। পৃথক একটি স্টলে জেলা কারাগারের বন্দীদের হাতে তৈরি রকমারি পণ্য বিক্রি করা হয়। তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে নারী-পুরুষ-শিশুরা মেতে ওঠেন উৎসবে।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বৈশাখ উপলক্ষে সমুদ্রসৈকত ভ্রমণে এসেছেন লাখো পর্যটক। তাঁদের কথা চিন্তা করে এবার বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের আয়োজনটি সৈকতে করা হয়েছে। ভ্রমণে আসা পর্যটকদের আমরা উৎসবে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। বেশ সাড়াও মিলেছে।’
কক্সবাজার শহরের পাবলিক হল ময়দানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পিঠাপুলি বিক্রির একটি স্টল.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
এবারের শোভাযাত্রা রাজনৈতিক নয়: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, এবারের শোভাযাত্রা রাজনৈতিক নয়। তবে ঐতিহাসিকভাবে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গ্রুপ এটিকে তাদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছে। এবার আমরা শুধু ফ্যাসিস্টের মুখাবয়ব ব্যবহার করেছি। কারণ ফ্যাসিস্ট কোনো রাজনীতির অংশ নয়, ফ্যাসিস্ট সবচেয়ে বড় অশুভশক্তি।
আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলার আয়োজনে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা ফারুকী বলেন, দেশের সকল জনগোষ্ঠী, সকল ঐতিহ্য- সেই আকবর আমলের ঐতিহ্য, সুলতানি আমলের ঐতিহ্য সবকিছুর মিশ্রণ এখানে দেখবেন। তবে টিপিক্যাল রাজনীতির কিছু এখানে নেই।
১৯৮৯ সালে চারুকলায় আনন্দ শোভাযাত্রা নামে বর্ষবরণ শোভাযাত্রা শুরু হয়েছিল। পরে ১৯৯৬ সালে এটিকে মঙ্গল শোভাযাত্রা নাম দেওয়া হয়। এবার কর্তৃপক্ষ এটিকে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা নাম দিয়েছে। এটি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চারুকলার একদল শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, চাপিয়ে দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি, আগে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নাম ছিল বর্ষবরণ শোভাযাত্রা যশোরে। সেখান থেকে ঢাকায় আসার পর নাম হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। এরপর চাপানো হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবার চারুকলা সিদ্ধান্ত নিয়েছে চারুকলায় যে নামে চালু হয়েছিল সে নামে শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, এটা আসলে বাঙালির প্রাণের উৎসব আর নেই, অনেকদিন ধরে এটাকে আমরা বাঙালির প্রাণের উৎসব বানিয়ে রেখেছি। কিন্তু এটা বাংলাদেশের প্রাণের উৎসব। বাঙালি, চাকমা, মারমা, গারোসহ সকল জাতিগোষ্ঠী বর্ষবরণ পালন করে। ফলে আমরা এটাকে বাংলাদেশের উৎসব হিসেবে পালন করা শুরু করলাম।
নববর্ষকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐক্যের বড় উপলক্ষ্য উল্লেখ করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, আমি মনে করি এটা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐক্য এবং সম্মিলনের একটি বড় ধাপ। আমরা হয়ত ২০-৩০ বছর পর থাকবো না, কিন্তু আজকের বছরটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ এরপর থেকে বাংলাদেশ এভাবেই চলবে।