ছাত্রলীগ নেতার লাঠির আঘাতে বিএনপি নেতা নিহত
Published: 14th, April 2025 GMT
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় স্থানীয় এক বিএনপি নেতাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। আজ সোমবার সকালে উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম আবদুর রশিদ (৫৫)। তিনি কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা এলাকার লাল মিয়ার ছেলে। কালারমারছড়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ছিলেন রশিদ। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম অমিত হাসান। তিনিও একই এলাকার বাসিন্দা। কালারমারছড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি পদে রয়েছেন তিনি।
নিহত রশিদের ভাতিজা জাহেদ হাসান বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় একটি পুকুরপাড়ে তাঁর চাচা আবদুর রশিদের সঙ্গে অমিত হাসানের রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে অমিত হাসান ও তাঁর বড় ভাই কামরুল হাসান লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আবদুর রশিদকে আহত করেন। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে চকরিয়া উপজেলার বদরখালী জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
কালারমারছড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এখলাছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিহত আবদুর রশিদ ইউনিয়ন বিএনপির অন্যতম সদস্য। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতার নেতৃত্বে তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।’
অভিযোগের বিষয়ে অমিত হাসানের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তিনি পলাতক রয়েছেন। জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাইছার হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে কামরুল হাসানকে আটক করেছে। অমিত হাসানকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউন য ন ব এনপ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ঘর ঠান্ডায় ইনডোর প্লান্ট
গরমকালে আমাদের ঘর যেন একেকটা ওভেনে পরিণত হয়। ফ্যান চালিয়ে উপকার মেলে না। এসি বা কুলারের ওপর নির্ভর করতে হয় দিনের বেশির ভাগ সময়। ভাবুন তো, যদি এমন কিছু প্রাকৃতিক উপায় থাকে, যা ঘরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে– তাও কোনো বিদ্যুৎ বা মেশিন ছাড়াই?
হ্যাঁ, প্রকৃতির কাছে আছে এমন কিছু দারুণ সমাধান। কিছু ইনডোর প্লান্ট আছে, যেগুলো শুধু ঘরের শোভা বাড়ায় না, বরং তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে, বাতাস পরিষ্কার করে আর আপনার মন-মেজাজও ঠান্ডা রাখে।
কেন ইনডোর প্লান্ট ঘর ঠান্ডা রাখে?
গাছ বা পাতার মাধ্যমে পানি ছাড়ে, যাকে বলে বাষ্পমোচন (ট্রান্সপিরেশন)। এই জলীয় বাষ্প বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘরের গরম তাপ শোষণ করে। ফলে ঘর একটু ঠান্ডা ঠান্ডা লাগে। বড় পাতার গাছগুলো আবার সূর্যের আলো আটকে দেয়। ফলে সরাসরি রোদ ঘরে ঢুকে গরম করতে পারে না। শুধু তাই নয়, কয়েকটা গাছ একসঙ্গে রাখলে ঘরের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রার একটা প্রাকৃতিক ভারসাম্য তৈরি করে।
কোন গাছগুলো ইনডোরে লাগানো সবচেয়ে ভালো?
ঘর ঠান্ডা রাখতে পারে এমন অনেক ইনডোর গাছ আছে। আজ আমরা এমন কিছু গাছ নিয়ে বলব, যেগুলো বাংলাদেশে সহজে পাওয়া যায় এবং সহজে ঘরে রাখা যায়।
স্নেক প্লান্ট
অল্প আলো আর কম পানিতে দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে এ গাছ। যারা ব্যস্ত জীবনে নিয়মিত গাছের খেয়াল রাখতে পারেন না, তাদের জন্য আদর্শ। বিশেষ করে রাতেও অক্সিজেন ছাড়ে বলে শোবার ঘরে রাখার জন্য দারুণ। এ ছাড়া বাতাসের ক্ষতিকর উপাদান যেমন ফরমালডিহাইড শোষণ করে।
পিস লিলি
নরম পাতার এ গাছটি ঘরে ঠান্ডা ভাব আনে বাষ্পমোচনের মাধ্যমে। এর সাদা ফুল ঘরে এনে দেয় প্রশান্তি ও সৌন্দর্যের ছোঁয়া। বাতাস পরিষ্কারে কার্যকর এবং ঘরের ভেতরের বাতাসকে আর্দ্র রাখে, যা গরমে খুব উপকারী।
আরবিকা পাম
সবুজ পাতায় ঘেরা এ গাছ শুধু চোখে শান্তি দেয় না, বাতাসে আর্দ্রতাও বাড়ায়। হালকা বাতাসে পাতাগুলো দুলে যেন প্রকৃতির স্পর্শ এনে দেয়। এটি বিভিন্ন টক্সিন শোষণ করে ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখে এবং সহজে মানিয়ে যায় ঘরের কোনায় বা জানালার পাশে।
স্পাইডার প্লান্ট
এই গাছ দ্রুত বড় হয়, তাপ শোষণ করে ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। একে মা গাছ বলা হয়। কারণ, এর শরীর থেকে ছোট ছোট চারা জন্ম নেয়, যেগুলো আবার নতুন করে লাগানো যায়। খুব বেশি যত্ন ছাড়া বেড়ে ওঠে এবং ঘরের বাতাসে থাকা কার্বন মনোঅক্সাইড ও ফরমালডিহাইড দূর করে।
অ্যালোভেরা
ঔষধি গাছ হিসেবে বেশি পরিচিত হলেও, অ্যালোভেরা ইনডোর ঠান্ডা রাখতে দারুণ কাজে দেয়। পাতার ভেতরের জেল আমাদের ত্বকের যত্নে যেমন ব্যবহার হয়, তেমনি পাতাগুলো গরম তাপ শুষে ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
রাবার প্লান্ট
বড় আকারের মোটা পাতায় সূর্যের আলো আটকে দিতে পারে এ গাছ। তাই রোদ থেকে আসা অতিরিক্ত উত্তাপ কিছুটা কমে যায়। পাশাপাশি ঘরের ভেতর দারুণ এক সবুজ পরিবেশ তৈরি করে। কম আলো ও মাঝারি পানির চাহিদা থাকায় এর যত্ন নেওয়া সহজ।
জেড প্লান্ট
ছোট আকৃতির এ গাছটি টেবিল বা জানালার ধারে রাখলে জায়গা কম লাগে অথচ সৌন্দর্য বাড়ে অনেকগুণ। খুব কম পানি লাগে এবং পরিবেশে হালকা ঠান্ডা ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে।
ইনডোর গাছের যত্নের কিছু সহজ টিপস
আলো বুঝে গাছ রাখুন: যেসব গাছ রোদ পছন্দ করে (যেমন অ্যালোভেরা, আরবিকা পাম) সেগুলো দক্ষিণ দিকে রাখুন। কম আলো সহ্য করতে পারে এমন গাছ (যেমন স্নেক প্লান্ট, স্পাইডার প্লান্ট) উত্তরমুখী স্থানে রাখাই ভালো।
পানি দিন বুঝেশুনে: সব গাছে প্রতিদিন পানি দেওয়ার দরকার নেই। মাটি শুকিয়ে গেলে পানি দিন। অতিরিক্ত পানি দিলে গাছের শিকড় পচে যেতে পারে।
মাটি ও সার: জৈব সার ব্যবহার করলে গাছ ভালো বেড়ে ওঠে। বছরে ২-৩ বার সার দিতে পারেন।
পাতা পরিষ্কার রাখুন: পাতায় ধুলো জমে গেলে গাছ ঠিকভাবে শ্বাস নিতে পারে না। তাই মাঝে মধ্যে নরম কাপড় দিয়ে পাতাগুলো মুছে দিন। v