ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের রাউন্ড রবিন লিগের প্রথম পর্বের খেলা শেষে ব্যাটিং তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন এনামুল হক বিজয়। বোলিংয়ে রয়েছেন রাকিবুল হাসান। লিগে যে কয়েকজন ক্রিকেটার ধারাবাহিক পারফর্ম করেছেন তাদের মধ্যে এগিয়ে এই দুই ক্রিকেটার।
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের অধিনায়ক এনামুল ১১ ম্যাচে ৭২.৭৮ গড়ে ৬৫৫ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ছিল ৯৬.
গাজী গ্রুপ ও আবাহনী সুপার লিগে উঠেছে। শিরোপা জয়ের সম্ভাবনাও রয়েছে দুই ক্লাবের। এনামুল ও রাকিবুল নিজেদের পারফরম্যান্স কোথায় নিয়ে যেতে পারেন সেটাই দেখার।
আরো পড়ুন:
শাস্তি ও জরিমানা বাড়ল তাওহীদের, মোহামেডানের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে আপিল
সুপার লিগে উঠল যারা
ব্যাটিংয়ে এনামুলের পর আছেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। লিগের এক ম্যাচে ১৭৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন প্রাইম ব্যাংকের এই ওপেনার। এছাড়া আরো একটি সেঞ্চুরি ও দুটি ফিফটি আছে তার নামের পাশে। সব মিলিয়ে ১১ ইনিংসে রান করেছেন ৬১৮। কিন্তু লিগে তার দল সুপার লিগে উঠতে পারেনি। ৬১.৮০ গড় ও ১২১.৮৯ স্ট্রাইক রেটে রান তুলেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
পারভেজ হোসেন ইমন ১১ ইনিংসে ৫৬৯ রান করেছেন ২ সেঞ্চুরি ও ৪ ফিফটিতে। ৭১.১২ গড় ও ১০১.৬০ স্ট্রাইক রেট ছিল তার ব্যাটে। তার দু্যতি ছড়ানো ব্যাটিংয়ে উড়েছে আবাহনী। লিগে শীর্ষে থেকে নিশ্চিত করেছে সুপার লিগ।
ব্যাটিংয়ে শীর্ষ পাঁচে রয়েছেন কাজী নুরুল হাসান সোহান ও সাদমান ইসলাম। ধানমন্ডি স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক সোহান ১১ ইনিংসে ৫২২ রান করেছেন ৫৮ গড় ও ৯৩.৫৪ স্ট্রাইক রেটে। ২টি সেঞ্চুরির সঙ্গে ২টি ফিফটি রয়েছে তার। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে একবার আউট হয়েছেন উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান। নয়তো সেঞ্চুরিতে সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল তার।
অগ্রণী ব্যাংকের ওপেনার সাদমান ৪৬৯ রান করেছেন। ১টি সেঞ্চুরির সঙ্গে ৩টি ফিফটি হাঁকিয়েছেন। জাতীয় টেস্ট দলের ওপেনার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে প্রস্তুতি ভালোভাবেই সেরেছেন।
বোলিংয়ে রাকিবুলের পর রয়েছেন তাইজুল ইসলাম। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের স্পিনার রাকিবুলের মতোই সমান ২৩ উইকেট পেয়েছেন। বোলিং গড় ও ইকোনমিতে পিছিয়ে দুইয়ে অবস্থান তাইজুলের। ১৮.১৭ গড় ও ৪.২৭ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন তাইজুল। আবাহনীর অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক ১১ ম্যাচে ২০ উইকেট পেয়েছেন। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের পেসার শরিফুলও পেয়েছেন ২০ উইকেট। এছাড়া ২০ উইকেট পেয়েছেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের ডানহাতি পেসার আসাদুজ্জামান পায়েল।
ঢাকা/ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট প য় ছ ন র ন কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পর্কে আধিপত্য
বিভিন্ন ধরনের সম্পর্কের ভেতর দিয়ে একজন মানুষ বেড়ে ওঠে। প্রথমে সে আসে তার পরিবারের সান্নিধ্যে। ধীরে ধীরে সে তার আশপাশের পরিবেশ এবং চারপাশে আবর্তিত আপন মানুষগুলোর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গ্রহণ করে। তারপর শিক্ষক, বন্ধুবান্ধব এবং নিজস্ব কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে সে বেড়ে উঠতে থাকে। তার মধ্যে বিরাজমান বৈশিষ্ট্য দিয়ে সে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক, ধর্মীয় অনুশাসন ও হৃদয়ঘটিত সম্পর্কগুলো গড়ে তোলে। একসময় সে সম্পর্কগুলোতে আসে নানা ধরনের জটিলতা। আসতে পারে আধিপত্যের মতো নিচু মানসিকতারও প্রভাব। এতে সম্পর্কে নানা ধরনের তিক্ততা সৃষ্টি হয়।
সম্পর্কে আধিপত্যের বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মোহিত কামালের সঙ্গে। তাঁর ভাষায়, আধিপত্য শব্দটিকে প্রথমে আমাদের বুঝতে হবে। এটি একটি ডমিনেটিং ক্যারেক্টার। কিছু ব্যক্তিত্ব থাকে এ ধরনের। এ ধরনের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সে নিজেরটা সবচেয়ে বেশি বুঝবে। নিজের দম্ভ, অহংকার, দক্ষতা এবং নিজে যা বলবে তাই ঠিক মনে করে। তারা নিজের দোষ দেখে না।
সম্পর্ক বিষয় নিয়ে তিনি জানান, সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অ্যাডজাস্ট করা, অ্যাডাপটেশন করা, অ্যাকসেপ্ট করা। আধিপত্যবাদী বা কর্তৃত্ববাদ চরিত্রে এই বৈশিষ্ট্য থাকা সম্ভব নয়। তাঁর মতে, আধিপত্য সম্পর্কে জটিলতা সৃষ্টি করে। এটি হতে পারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে, প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে এবং নানা সামাজিক ব্যক্তির সম্পর্কের ক্ষেত্রেও। একজন যদি কোনো সম্পর্কে আধিপত্য দেখাতে থাকে তাহলে অপর পক্ষের মানুষটি খুব আহত হন। তিনি বলেন, যে কোনো সম্পর্কে কোনো সমস্যা দেখা দিলে কথা বলতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত আসবে। অন্যের দোষ দেখা বন্ধ করে গুণাগুণগুলো দেখলে আধিপত্য অনেকটা কমে যাবে। সবকিছুতে একটা ডেমোক্রেটিভ ভিউ থাকতে হবে। ডা. মোহিত কামালের মতে, গণতান্ত্রিক মতামত বা অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে যদি আমরা কাজ করি তাহলে পারিবারিক জীবন এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এ বিষয়টি আর জটিল আকার ধারণ করবে না।
আধিপত্য বা কর্তৃতবাদ বিষয়টি যাতে চরিত্রে ডেভেলপ না করে সে জন্য কিছু বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন মোহিত কামাল। তিনি বলেন, পরিবারে একটি শিশু যখন বোধের পর্যায়ে আসে তখন থেকে তার মতামত নেওয়া জরুরি। যেমন মা-বাবা তাঁর সন্তানকে বলতে পারেন আমরা তোমার জন্য একজন শিক্ষক রাখব, তোমার কোনো চয়েজ আছে কি? এ ধরনের মতামতে অংশ নিতে পারলে তার আত্মবিশ্বাসের লেভেল অনেক বেড়ে যাবে। নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে ভালো ধারণা হবে। তার ভেতরে একটি আইডেনটিটি তৈরি হবে। বিশ্বাস বাড়বে। অন্যকে গুরুত্ব দিতে হয় সেটি সে পরিবার থেকে শিখবে।
এই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, কাউকে নিচু করে দেখছে বা বিশ্বাস করতে পারছে না বলে সম্পর্কে ধীরে ধীরে আধিপত্য ঢুকে যাচ্ছে। মা-বাবার ডমিনেটিং প্যারেন্টিং ভবিষ্যতে একজন তরুণ-তরুণীকে কর্তৃত্ববাদিতার দিকে ঠেলে দেয়। পরিবারে মা-বাবা বলেন আমি যা বলব তাই চূড়ান্ত। তাই তোমাকে মেনে নিতে হবে। আমি ঠিক। আমার চেয়ে তুমি কি ভালো বোঝ? এ ধরনের আচরণ একজন ব্যক্তিকে চারিত্রিকভাবে দুর্বল করে তোলে।
ডা. মোহিত কামালের মতে, যখন একজন সন্তান বড় হচ্ছে তার যোগ্যতা কী? তার অদক্ষতা কী? তার ভুলগুলো কী? তাকে বুঝতে দিতে হবে। সে তখন থেকে অদক্ষ থাকলে দক্ষ হওয়ার চেষ্টা করবে। যোগ্যতাকে আরও শানিত করার চেষ্টা করবে। আইডেনটিটি নিজেই গড়ে তুলবে। তাহলে পরবর্তী সময়ে সে জীবন-সংগ্রামের চলার উপাদান পাবে।
মনে রাখবেন, আধিপত্য চরিত্রটি ধারণ করলে বন্ধু পাওয়া যাবে না, নিজে ভালো বন্ধু হতে পারবেন না। এ সমস্যা থাকলে তা দাম্পত্য জীবনেও প্রভাব ফেলে। কর্তৃত্ববাদ মনোভাব অন্যদের দমিয়ে রাখতে পছন্দ করে। v