Prothomalo:
2025-04-15@17:54:38 GMT

ভিন্ন ‘রামায়ণ’–এর রচয়িতা

Published: 14th, April 2025 GMT

বাংলাদেশের কৃষিসমাজের নিম্নবর্গীয় প্রান্তিকতাকে ভেদ করে নারীর যে স্বর আমরা শিক্ষিত সাহিত্যওয়ালারা প্রথম শুনতে পাই, সেটা চন্দ্রাবতীর। তাঁর জন্ম সাড়ে চার শ বছর আগে, ১৫৫০ খ্রিষ্টাব্দে, কিশোরগঞ্জ জেলার মাইজকাপন ইউনিয়নের পাতুয়ারি গ্রামে। মায়ের নাম সুলোচনা দেবী। পিতা দ্বিজ বংশীদাস ছিলেন ষোড়শ শতাব্দীর প্রথমার্ধের ‘মনসামঙ্গল’-এর কবি। দ্বিজ বংশীদাস মনসার ভাসানগান গেয়ে জীবিকা
নির্বাহ করতেন। 

কবি ছিলেন চন্দ্রাবতী। বাংলাদেশের মেয়েদের মধ্যে যাঁরা কবিতা লেখার ‘সাহস’ প্রদর্শন করেছিলেন, জানামতে তাঁদের মধ্যে প্রথম ছিলেন চন্দ্রাবতী। ছোটবেলা থেকেই কবিতা রচনা করতেন। পিতার সঙ্গে একত্রে মনসার ভাসানগান রচনা করেছেন। কাব্যরচনায় পিতার উৎসাহ তাঁকে সাহায্য করে থাকতে পারে। গ্রামের সাধারণ মানুষকে নিয়ে অসংখ্য গান রচনা করেছেন। বিভিন্ন মেয়েলি ব্রতের ছড়া, প্রাচীন আচারপদ্ধতি অবলম্বনে বিভিন্ন কবিতাও রচনা করেছেন। সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত তাঁর ‘দস্যু কেনারামের পালা’ দীনেশচন্দ্র সেনের মৈমনসিংহ গীতিকায় স্থান পেয়েছে। গীতিকার ‘মলুয়া’ পালাটিও তাঁর রচনা। লোকসাহিত্যের বিশিষ্ট সংগ্রাহক চন্দ্রকুমার দে প্রথম চন্দ্রাবতীকে পাঠকের সামনে তুলে ধরেন কেদারনাথ মজুমদারের সৌরভ পত্রিকার মধ্য দিয়ে। মৈমনসিংহ গীতিকায় সংকলিত চন্দ্রাবতীর পালাগুলোও তাঁরই সংগ্রহ করা। এসব খবর অনেকেরই অজানা নয়। 

চন্দ্রাবতীর যে একটা ‘রামায়ণ’ আছে, সেটাও নতুন কোনো খবর নয়। খবর বরং এটা যে সেই রামায়ণ বঙ্গদেশের ভদ্রলোকশ্রেণির কাছে ‘সাহিত্যপদবাচ্য’ হতে পারেনি বলে তা নিয়ে আলাপ-আলোচনার সিরিয়াস কোনো চর্চাই গড়ে ওঠেনি। বাংলাদেশের ফোকলোর রচনাপঞ্জি (শামসুজ্জামান খান ও মোমেন চৌধুরী, ১৯৮৭) ঘেঁটে কোথাও চন্দ্রাবতীর রামায়ণ নিয়ে কোনো লেখালেখির হদিস পাওয়া গেল না। পশ্চিমবঙ্গের লোকসংস্কৃতি রচনাপঞ্জির কোনো শিরোনামেও চন্দ্রাবতী বা তাঁর রামায়ণবিষয়ক কোনো অন্তর্ভুক্তি দেখা গেল না। 

এই পঞ্জিতে সাধারণভাবে গীতিকা নিয়ে আলোচনামূলক কয়েকটি প্রবন্ধের শিরোনাম আছে বটে (আশুতোষ ভট্টাচার্য, ১৩৯৯; বরুণকুমার চক্রবর্তী, ১৪০৬; বিমলকুমার মুখোপাধ্যায়, ১৯৮৫ ইত্যাদি), যেগুলোর মধ্যে বোঝাই যায়, চন্দ্রাবতীর গীতিকা-পালা-গাথা নিয়ে আলাপ-আলোচনা থাকার কথা এবং এসব আলোচনার মধ্যে তাঁর রামায়ণপালা নিয়ে আলোচনা থাকাও অস্বাভাবিক নয়, কিন্তু সেগুলো চন্দ্রাবতীর রামায়ণের বা অন্য কোনো রচনার নারীবাদী গুরুত্ব অনুধাবনে সচেষ্ট কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে। এই সংশয় নিছক কল্পিত নয়, তা নিশ্চয়ই বোঝা সম্ভব হবে, যদি আমরা বাংলা ভাষা-সাহিত্য-ফোকলোরের সুপণ্ডিতদের চন্দ্রাবতী-চর্চার দিকে মনোনিবেশ করি।

‘ফোকলোর’ না ‘লোকসংস্কৃতি’ কোন নামে শাস্ত্রটিকে ডাকা হবে, তা নিয়ে দুই বাংলার অধ্যাপক-গবেষকদের মধ্যে অনেক ঝগড়াঝাঁটি থাকলেও চন্দ্রাবতীচর্চার ক্ষেত্রে দারুণ মিল দেখা গেল। সবাই-ই পুরুষের চোখে চন্দ্রাবতীকে দেখেন। এই পুরুষ-দেখন অনুসারে চন্দ্রাবতীর পরিচয়ের প্রধান দিকটি হলো: 

চন্দ্রাবতী একজন পুরুষের কন্যা; পিতা পুরুষটি একজন কবি। এভাবে পণ্ডিতদের বয়ানে চন্দ্রাবতীর পরিচয় দাঁড়ায়, ‘সতেরো শতকের “মনসামঙ্গল”–এর কবি দ্বিজ বংশীদাস’-এর ‘কন্যা’ (আহমদ শরীফ, ১৯৭৮, পৃ.

৩৪১), বা ‘বিখ্যাত কবি দ্বিজ বংশীদাসের কন্যা’ (আশরাফ সিদ্দিকী, ১৯৬৩, পৃ. ৩০৯), বা ‘সপ্তদশ শতাব্দীর কবি “মনসামঙ্গল”রচয়িতা দ্বিজ বংশীদাসের কন্যা’ (আশুতোষ ভট্টাচার্য, ১৯৬২, পৃ. ৩০৩), বা ‘কবি চন্দ্রাবতী কবি দ্বিজ বংশীদাসেরই কন্যা’ (কিশোরগঞ্জের ইতিহাস, ১৯৯৩, পৃ. ১৯৯); অর্থাৎ ‘চন্দ্রাবতী ছিলেন এই বংশীদাসেরই কন্যা’ (ভূদেব চৌধুরী, ১৯৬২, পৃ. ৪০৩) এভাবে চন্দ্রাবতীর নিজের পরিচয়ের চেয়ে বড় হয়ে ওঠে তাঁর পিতৃপরিচয়। 

সাহিত্যিক-গবেষক-অধ্যাপক নবনীতা দেব সেনই প্রথম চন্দ্রাবতীর রামায়ণকে ভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করে আমাদের ‘ভদ্রলোকী’ শিক্ষিত সমাজের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।

এ ছাড়া দীনেশচন্দ্র সেন, গোপাল হালদারসহ অনেক গবেষকই পূর্ববঙ্গের এই কবিকে ‘বিখ্যাত মহিলা কবি’, ‘প্রথম স্ত্রীকবি’—এভাবে চিহ্নিত করেছেন। ফলে তাঁদের কাছে চন্দ্রাবতীর কবি-পরিচয়ের চেয়ে বড় হয়ে উঠেছে ‘মহিলা কবি’ পরিচয়। বলে না দিলেও চলে, ‘নারীত্ব’ আর ‘কবিত্ব’ যে গুণগতভাবেই পরস্পর বিপরীত বিষয়, এই উপলব্ধিই চন্দ্রাবতীকে মহিলা কবি হিসেবে তুলে ধরার কারণ।  

আবার চন্দ্রাবতীর ‘মলুয়া’  বা ‘দস্যু কেনারামের পালা’ নিয়ে সাহিত্যসমালোচকেরা আলোচনা করেছেন বটে, কিন্তু কাউকেই চন্দ্রাবতীর রামায়ণের তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা করতে দেখা যায় না। 

বিরল ব্যতিক্রম বলতে গেলে দীনেশচন্দ্র সেন। চন্দ্রাবতীর অন্যান্য পালার মতো রামায়ণও দীনেশচন্দ্র সেনের বরাতেই পূর্ববঙ্গ গীতিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। চন্দ্রাবতীর রামায়ণ তিনি কবির জন্মস্থান থেকে সংগ্রহ করেন চন্দ্রকুমার দের মারফতে সেই সমাজের নারীদেরই মুখ থেকেই। শুধু সংগ্রহ ও উপস্থাপন নয়, ‘চন্দ্রাবতীর রামায়ণ’ নামে দীনেশচন্দ্র সেন একটা আলোচনাও করেন। কিন্তু সেই আলোচনা কবির কাব্যসৌন্দর্য এবং তাঁর লেখনীর মহিমা উল্লেখের মধ্যেই প্রধানত সীমাবদ্ধ থাকে। যে বিষয়টি অনায়াসে তাঁর চোখ এড়িয়ে যায় তা হলো, সেই মধ্যযুগের সমাজে পুরুষতন্ত্রের শৌর্যে-বীর্যে জর্জরিত রামসাহিত্যকে পুরো বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একেবারে আলাদা একটা নারীদৃষ্টিকোণ থেকে রামায়ণের পুনর্লিখন। শুধু তা–ই নয়, চন্দ্রাবতীকৃত মহাকাব্যে বীরপুরুষ রামের মহিমাকে প্রচুর রকম ধসিয়ে দিয়ে সম্পূর্ণ নতুনভাবে সীতাকে নায়কের স্থানে উপস্থাপন করা। 

নারীর ইতিহাস, নারীর স্বর—এই বিষয় দীনেশচন্দ্র সেনের লেখায় জোরালোভাবে আসেনি, তারপরও চন্দ্রাবতীর রামায়ণ আবিষ্কার এবং আমাদের ‘ভদ্রলোকী’ সমাজে তাঁকে পরিচয় করানোর কৃতিত্ব দীনেশচন্দ্র সেনেরই। কিন্তু ‘আবিষ্কার’ শব্দটি আমাদের সমাজের ভদ্রলোক-পুরুষেরই বটে। আর এই কারণ উপস্থিত থাকে বাংলা সাহিত্যালোচনার ভদ্রলোকী পুরুষপক্ষপাতী ‘মূলধারা’র আদ্যোপান্তজুড়ে। এ কারণেই সহজেই লক্ষ করা যেতে পারে, আমাদের বাংলা সাহিত্যের বাঘা বাঘা পুরুষ পণ্ডিতেরা চন্দ্রাবতীর রামায়ণকে ‘আঞ্চলিক’ ভাষাতে লেখা নিছকই গ্রাম্য নারীর আবেগসর্বস্ব মেয়েলি গীত হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। 

সাহিত্যিক-গবেষক-অধ্যাপক নবনীতা দেব সেনই প্রথম চন্দ্রাবতীর রামায়ণকে ভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করে আমাদের ‘ভদ্রলোকী’ শিক্ষিত সমাজের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর আলোচনা থেকে চন্দ্রাবতীর রামায়ণই শুধু নয়; নারী বিরচিত রামায়ণসমূহের সম্পূর্ণ আলাদা একটা নারীবাদী তাৎপর্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া যায় এবং চন্দ্রাবতীর রামায়ণ আরেকবার পাঠের তাগিদ বোধ করা যায়। 

পৃথিবীর সব মহাকাব্যই আসলে পুরুষের রচিত। পুরুষের গৌরবগাথার বয়ান। নারীকে সেখানে দেখানো হয়েছে পুরুষদের হাতের পুতুল হিসেবে। ‘রামায়ণ’ মহাকাব্যটিও পুরুষদের হাতে রচিত পুরুষেরই মাহাত্ম্যকথন। এ মহাকাব্যের নায়ক রামকে গোটা ভারতীয় পিতৃতান্ত্রিক সমাজের আদর্শ পুরুষের আদলে নির্মাণ করা হয়েছে। রামায়ণজুড়ে সীতাকে দেখানো হয়েছে অন্য পুরুষের ওপর সার্বিকভাবে নির্ভরশীল একজন ‘আদর্শ নারী’ হিসেবে, যিনি সমস্ত দুঃখকষ্ট মুখ বুজে সহ্য করে যাবেন সারা জীবন এবং যাবতীয় দুর্ভোগের শিকার হবেন। সীতার এই মূর্তিই আমাদের সমাজের ‘আদর্শ নারী’র রূপাবয়ব হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা সব অর্থেই এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার মূল্যবোধগুলোকেই আক্ষরিকভাবে জারি রাখে। তাই বলা হয়ে থাকে, ‘সতী সাবিত্রীর মতো হও’ কিংবা ‘সীতার মতো হও’। 

প্রচলিত রামায়ণ, তা যে ভাষাতেই লেখা হোক না কেন, সেখানে বিভিন্নভাবে রামের প্রশস্তি বা বন্দনাগীত গাওয়া হয়েছে। সেদিক থেকে আমাদের বঙ্গদেশের কবি চন্দ্রাবতীই রামকাহিনি রচনায় স্বতন্ত্র মনীষার পরিচয় দিয়েছেন, যা যুগ যুগ ধরে পুরুষ কবিদের হাতে লিখিত প্রচলিত রামকাহিনির মাহাত্ম্যকে ক্ষুণ্ন করেছে। আর সে জন্যই চন্দ্রাবতীর রামায়ণটি পরিশীলিত সাহিত্যদরবারে স্থান পায়নি। সমাজের উচ্চ স্তরে নানাভাবে এ রামায়ণ পালাটি বর্জিত হলেও নিম্নবর্গের, বিশেষত পল্লিসমাজের নারীর, ঘরোয়া রামায়ণী আচার-অনুষ্ঠানে আজও চন্দ্রাবতীর রামায়ণই গাওয়া হয়ে থাকে। 

রামায়ণগানে চন্দ্রাবতী কোনো প্রকার ভক্তিরস, বীররস, শৃঙ্গাররস তুলে ধরেননি। শুধু মধুর আর করুণ রসকে আশ্রয় করে কাহিনি নির্মাণ করেছেন। কবি সীতাকে তাঁর রচনায় মুখ্যরূপে দেখিয়েছেন; প্রচলিত রামায়ণকারদের পথে না হেঁটে সীতার জীবনকেই পাঠককুলের কাছে তুলে ধরতে চেয়েছেন। সীতার দুঃখ-কষ্টকে তিনি তাঁর নারী মনোভাব দিয়ে উপলব্ধি করেছিলেন। তাই রামকে তিনি কোনো কোনো স্থানে সমালোচনা করতেও পিছপা হননি। আর এ জন্যও প্রথাবিরুদ্ধ এই রামায়ণগান পুরুষশাসিত সমাজে গ্রহণযোগ্যতা তো পায়ইনি, বরং নিন্দিতই হয়েছে। 

‘পরিশীলিত’ রামায়ণে সাতটি কাণ্ড রয়েছে, যার মধ্যে উত্তরাকাণ্ড একটি। এই উত্তরাকাণ্ডেই সীতার বনবাস ও তাঁর ধরিত্রী-প্রবেশ ঘটে থাকে। চন্দ্রাবতী এই কাজকেই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বর্ণনা করেন তাঁর রামায়ণে। চন্দ্রাবতীর রামায়ণ তিন খণ্ডে বিভক্ত। এটিও প্রচলিত অর্থে ঐতিহ্যবিরোধী। প্রথম খণ্ডটি তিনি সীতার জন্মকাহিনির মধ্য দিয়ে শেষ করেছেন, যেখানে সীতার পৌরাণিক কাহিনি অনুসৃত হয়নি। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে দেখা যায়, ‘সীতার বারমাসি’, যেখানে সীতা সখীদের সঙ্গে বসে আছেন, তাঁর জীবনের সুখ-দুঃখ তিনি সখীদের কাছে গল্পচ্ছলে বলে চলেছেন—বাল্যের কথা, বিবাহের কথা, রাবণ কর্তৃক তাঁর হরণের কথা, অশোকবনে বন্দীদশার কথা, রামের জন্য নিজের বিরহকাতরতার কথা, রাম কর্তৃক উদ্ধারের কথা এবং অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তনের কথাও। তৃতীয় পরিচ্ছেদে চন্দ্রাবতী ও সীতা উভয়েই কথকের ভূমিকা নিয়েছেন। এ পরিচ্ছেদে কবি তাঁর নিজের অনুভূতি দিয়ে রামায়ণের ঘটনাপ্রবাহকে উপলব্ধি করেছেন। উল্লেখ্য, রাম যখন তাঁর বোনের কথায় বিশ্বাস করে সীতাকে সন্দেহ করে চরম ক্রোধে ফেটে পড়েন, তখনকার পরিস্থিতিটি কবি তাঁর নিজের বয়ানে হাজির করেন: 

‘বনেতে আগুনি জ্বলে গো সায়রে ছোটে বান। উন্মত্ত পাগলপ্রায় গো বসিলেন রাম। রাঙ্গা জবা আঁখি রামের গো শিরে রক্ত উঠে। নাসিকায় অগ্নিশ্বাস ব্রহ্মরন্ধ্র ফুটে। যে আগুন জ্বালাইল আজ গো কুকুয়া ননদিনী। সে আগুনে পুড়িবে সীতা গো সহিত রঘুমনি। পুড়িবে অযোধ্যাপুরী গো কিছুদিন পরে। লক্ষ্মীশূন্য হইয়া রাজ্য গো যাবে ছারেখারে। পরের কথা কানে লইলে গো নিজের সর্ব্বনাশ। চন্দ্রাবতী কহে রামের গো বুদ্ধি হইল নাশ।’ 

কিশোরগঞ্জের পাতুয়ারি গ্রামে চন্দ্রাবতীর শিবমন্দির

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ন শচন দ র স ন র প রচল ত আম দ র কর ছ ন প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

যেভাবে ঘোরাবেন টাকার চাকা

জীবনের চলতি পথে প্রতি ধাপে টাকার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। টাকা সুখ এনে দিতে পারে না। প্রয়োজনের সময়ে টাকার অভাব মানুষের জীবনকে কতটা দুর্বিষহ ও বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে সে কথা বোধ করি কম-বেশি সবারই জানা।
ভেবে-চিন্তে খরচ
টাকা আপনার হাতে আছে। তাই বলে অকারণে কিংবা মামুলি বিনোদনের জন্য তা খরচ করবেন না। খরচ যদি করতে হয়, ভেবে-চিন্তে করুন। ঠিক যতটুকু করা প্রয়োজন, ততটুকুর মধ্যে সামলে রাখুন নিজের টাকা খরচের লোভ।
অপেক্ষা বিপদের
রক্ত পানি করা টাকা খরচ করে বাবা-মা আপনাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়েছেন মূলত পড়াশোনা করানোর উদ্দেশ্যেই। এ ব্যাপারটি যত দ্রুত আপনি উপলব্ধি করবেন, ততই মঙ্গল। এর পাশাপাশি এ উপলব্ধি করতে পারাও ভালো যে, পড়াশোনার ক্ষতি না করে টিউশনি বা লেখালেখি বা অন্যান্য কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত করে সামান্য পরিমাণে হলেও অর্থ উপার্জন করা যায় কিনা। এতে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য নিজেকে যেমন ঝালাই করে নিতে পারবেন, তেমনি পেয়ে যাবেন স্বাবলম্বী হওয়ার প্রাথমিক পাঠ। না হয় সামনে বিপদের অপেক্ষায় থাকুন!
খরচের লাগাম
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া ও হালকা হাত-খরচের জন্য সব শিক্ষার্থীকে বাসা থেকে কম-বেশি টাকা দেওয়া হয়। আপনি যদি বুদ্ধিমান ও বিচক্ষণ হয়ে থাকেন, চেষ্টা করুন মুহূর্তের আনন্দের জন্য সেই টাকা দেদার উড়িয়ে না দিয়ে, বরং সেখান থেকে প্রতিদিন সামান্য করে হলেও জমানোর। ভালো হয় যদি স্কুলজীবন থেকে এ অভ্যাসটি গড়ে তুলতে পারেন। 
ভাবুন তো, যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ হয়ে যাবে, তখন নিশ্চয়ই জাদুর মতো করে এক লহমায় সবার কপালে চাকরি জুটবে না। বিশ্বাস করুন, বেকারত্বের দিনগুলো ভয়াবহ রকমের মানসিক বিষাদের। এ সময়ে এতদিনের হাত-খরচ থেকে জমানো টাকাগুলো আপনার দারুণ উপকারে আসবে। নাহয় এর কষ্ট আপনাকে ভোগ করতে হবে। 
সঙ্গী বাছাই
বন্ধু-বান্ধব কিংবা একান্ত মনের মানুষ– এ সময়ে সঙ্গী বাছাইয়ে ভুল করে ফেলেন অনেকে। সেই ভুলের মাশুল তো কাউকে কাউকে জীবন দিয়েও দিতে হয়। u

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপির ৩১ দফা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের পথরেখা
  • যেভাবে ঘোরাবেন টাকার চাকা