একে তো মাঠে শৃঙ্খলা ভেঙেছেন। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন। খেলা শেষেও নিয়মের তোয়াক্কা করেননি। সংবাদ সম্মেলনে আম্পায়ারদের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাওহীদ হৃদয়। আম্পায়ারদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার হুমকি দিয়েছেন প্রকাশ্যে।

খেলোয়াড়রা মাঠে তাৎক্ষণিক ক্ষোভের বশে আচরণবিধি ভঙ্গ করে বসেন। কিন্তু পরে অনুতপ্ত হন। জরিমানা ও নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ম্যাচ রেফারির কাছে শুনানিতে গিয়ে অনুতপ্ত হন। স্বীকার করে নেন দায়। 

কিন্তু জানা গেছে, শুনানিতে গিয়ে ম্যাচ রেফারি নিয়ামুর রশিদ রাহুলকেও অশ্রদ্ধা করেছেন জাতীয় দলের ডানহাতি ব্যাটার হৃদয়। ফলে সব কিছুই গেছে মোহামেডান অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়ের বিরুদ্ধে। আর্থিক জরিমানা ও এক ম্যাচ জরিমানা করা হয়েছিল প্রথমে। পরে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ায় আরও এক ম্যাচ বেড়েছে তার নিষেধাজ্ঞা। 

বিসিবি আম্পায়ার্স বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু বলেন, ‘ম্যাচ রেফারি শুধু আর্থিক জরিমানা করে ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। হৃদয়ের আচরণের কারণে এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেন। এই শাস্তি ছিল আম্পায়ারদের রিপোর্টের ভিত্তিতে। আইন আছে কোনো ক্রিকেটার ম্যাচ শেষ করার ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে কোনো সমালোচনা বা নেতিবাচক কিছু করলে বা বললে ডি ম্যারিট পয়েন্ট পাবে। 

সে চারটি ডি মেরিট পয়েন্ট পেয়েছে। চার থেকে সাতটি ডি মেরিট পয়েন্ট পেলে এক থেকে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আম্পায়ার্স বিভাগ হৃদয়কে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ করছে। কার্যকর করার দায়িত্ব সিসিডিএমের।’

বিসিবি টেকনিক্যাল কমিটি জানায়, ম্যাচের শৃঙ্খলা ভাঙায় চারটি ডি মেরিট আর নেতিবাচক বক্তব্য দেওয়ায় গতকাল তিনটি ডি মেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ৮০ হাজার টাকা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড প এল আম প য় র

এছাড়াও পড়ুন:

টানা তিন জয়ে বিশ্বকাপের আরও কাছে বাংলাদেশ

১০১, ৫১ রানের পর অপরাজিত ৮৩। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা অধিনায়ক নিগার সুলতানা ব্যাটিং–ঝলক দেখিয়েই চলেছেন। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আজ নিগারের আগে ফিফটি করেছিলেন ফারজানা হক ও শারমিন আক্তার। তাতে বাংলাদেশ নারী দল ৬ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ২৭৬ রান, যা তাদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ

বাংলাদেশের বোলিং শক্তিমত্তা বিবেচনায় এই রান তাড়া করে জিততে হলে স্কটল্যান্ড নারী দলকে অভাবনীয় কিছু করতে হতো। কিন্তু বল হাতে নাহিদা আক্তার, রাবেয়া খান, জান্নাতুল ফেরদৌসরা নিজেদের কাজ ঠিকঠাকভাবে করায় লক্ষ্যের ধারেকাছেও যেতে পারল না স্কটিশ মেয়েরা; ৯ উইকেট হারিয়ে থামতে হলো ২৪২ রানে। ৩৪ রানের অনায়াস জয়ে বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার আরও কাছে পৌঁছে গেল বাংলাদেশ দল।

মেয়েদের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এটি বাংলাদেশের টানা তৃতীয় জয়। গত বৃহস্পতিবার প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডকে ১৭৮ রানে হারিয়েছে নিগারের দল, যা নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় জয়। নিগারের সেঞ্চুরিতে সেই ম্যাচেই নিজেদের দলীয় সর্বোচ্চ ২৭১ রান করেছিল বাংলাদেশ।

পাঁচদিনের ব্যবধানে সেটিকে ছাড়িয়ে আজ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে লাল–সবুজের প্রতিনিধিরা করল ২৭৬ রান। মাঝে গত রোববার রিতু মনির ক্যারিয়ারসেরা ব্যাটিংয়ে আয়ারল্যান্ড মেয়েদের বিপক্ষে ২ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয় পায় বাংলাদেশ।  

টানা তিন জয়ে বাছাইয়ের স্বাগতিক পাকিস্তানকে টপকে পয়েন্ট তালিকার চূড়ায় উঠল বাংলাদেশ। পাকিস্তানি মেয়েরাও এখন পর্যন্ত নিজেদের তিন ম্যাচেই জিতেছে। এই মুহূর্তে দুই দলের পয়েন্ট সমান ৬ করে হলেও নেট রানরেটে এগিয়ে থাকায় বাংলাদেশ শীর্ষে ও পাকিস্তান দুইয়ে।

বৃহস্পতিবার নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ জিতলেই মিলবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মেয়েদের বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসরের টিকিট।

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে না পারলেও অবশ্য ক্ষতি নেই। শনিবার নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলেও বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেবে বাংলাদেশ। এমনকি শেষ দুই ম্যাচে হারলেও নেট রানরেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে বিশ্বকাপের টিকিট পেয়ে যেতে পারে নিগারের দল।

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে আজ টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ছিল মন্থর। ১৪ রান করা ওপেনার ইশমা তানজিম ৮.৩ ওভারে যখন আউট হন, বাংলাদেশের স্কোর ১ উইকেটে ৩৫।

এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ইনিংসের ভিত গড়েন শারমিন ও ফারজানা। ১২৭ বলে ১০৩ রানের জুটি গড়েন দুজন, যেখানে ফারজানার অবদান ৪৮ বলে ৪০ ও শারমিনের ৭৯ বলে ৫৭। এটি তাঁদের চতুর্থ শতরানের জুটি।

৩০তম ওভারে শারমিন আউট হওয়ার পর আট ওভারের মধ্যে ফারজানা ও সোবহানা মোস্তারিকেও (৯) ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয়। ৩৭.৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ১৭৬।

এখান থেকে পঞ্চম উইকেটে রিতু মনির সঙ্গে ৩৭ এবং ষষ্ঠ উইকেটে ফাহিমার সঙ্গে ৪৪ বলে ৬১ রানের জুটি গড়েন নিগার। ২২ বলে ২৬ রান করেন ফাহিমা। ৫৩ রানে ২ উইকেট নিয়ে স্কটল্যান্ডের সেরা বোলার অধিনায়ক ক্যাথরিন ব্রাইস।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নাহিদা আক্তার ও মারুফা আক্তারের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৩১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে প্রথম পাওয়ারপ্লেতেই ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকে পড়ে স্কটল্যান্ড। চতুর্থ উইকেটে আলিসা লিস্টারের সঙ্গে ৪৭ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ব্রাইস। কিন্তু দলীয় ৭৮ রানে মারুফা লিস্টারকে রানআউট করলে ভাঙে এই জুটি।

এরপর লেগ স্পিনার রাবেয়া খান ও অফ স্পিনার জান্নাতুল ফেরদৌস মিলে আরও ৩ উইকেট নেন। ১১০ রানে ৭ উইকেট হারানো স্কটল্যান্ডকে দেখে তখন মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের জয় সময়ের ব্যাপার মাত্র।

কিন্তু প্রিয়ানাজ চ্যাটার্জী ও র‍্যাচেল স্ল্যাটার যেন আজ ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন। দুজনে মিলে যোগ করেন ১১৫ রান, যা স্কটিশ মেয়েদের ওয়ানডে ইতিহাসে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি। প্রিয়ানাজ ও র‍্যাচেল দুজনই করেন সমান ৬১ রান।

তাতেও বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হয়নি। স্কটল্যান্ড শুধু হারের ব্যবধান কমাতে পেরেছে আর বাংলাদেশের জয়ের অপেক্ষা একটু বেড়েছে। এই আরকি!

সম্পর্কিত নিবন্ধ