সরিষাবাড়িতে ট্রাক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে তালা
Published: 14th, April 2025 GMT
জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার তারাকান্দি যমুনা সার কারখানা এলাকায় ট্রাক-মিনিবাস ও ট্যাংক-লড়ি পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে তালা দেওয়ার ঘটনায় মালিক-শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। গত শুক্রবার কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এদিকে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ এই কারখানার সার পরিবহনে বিঘ্ন ঘটায় দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলায় কৃত্তিম সার সংকট সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীরা জানায়, প্রায় দুই মাস আগে সরিষাবাড়ি উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন ট্রাক চালক শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়কের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এ ঘটনায় আকরাম হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কারের করা হয়। আকরাম বিষয়টি সরিষাবাড়ি উপজেলা শ্রমিকদলের নেতাদের জানান। পরে শ্রমিকদলের সভাপতি আদমের নেতৃত্বে মিলন, লিটন, জাহাঙ্গীর, মিঠু, উজ্জ্বলসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী গত শুক্রবার তারাকান্দি ট্রাক-মিনিবাস ও ট্যাংক-লড়ি মালিক সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সামনে গিয়ে ট্রাক চালক শফিক ও জুলহাসসহ বেশ কয়েকজনকে মারধর করে। এ ঘটনায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে ইরি-বোরো মৌসুমের ভরা মৌসুমে ট্রাক-মিনিবাস ও ট্যাংক-লড়ি পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সার পরিবহনে বিঘ্ন ঘটছে। এতে করে যমুনা সার কারখানার কমান্ড এরিয়ার ১৬ জেলায় কৃত্তিম সার সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পোগলদিঘা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, ট্রাক চালক শ্রমিক ইউনিয়নে কিছু অসাধু ব্যক্তি কৌশলে ঢুকে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করছিল, এরই প্রতিবাদ করায় তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে তালা দেওয়ার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। পরিবহন মালিক সমিতি থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাগজ চুরি হয়ে যাচ্ছে বিধায় শ্রমিকদলের নেতারা সেখানে তালা দিয়েছে।
তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই আব্দুল মোতালেব জানান, তিনি ছুটিতে থাকার সময় ঘটনাটি ঘটেছে। কিন্তু বর্তমানে কি অবস্থায় রয়েছে সেটি জানা নেই, কর্মস্থলে গিয়ে বলতে পারবেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
১৫ বছর পর বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক, বুধবার
প্রায় ১৫ বছর পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তান বৃহস্পতিবার ঢাকায় পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে পররাষ্ট্র দপ্তর পরামর্শ (এফওসি) বৈঠক করবে। এ লক্ষ্যে দেশটির পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ তার দেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিতে বুধবার ঢাকায় আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ পক্ষের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে শেষ এফওসি ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
আরো পড়ুন:
হ্যাটট্রিক জয়ে বিশ্বকাপের আরো কাছে বাংলাদেশ
ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ: টিউলিপসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উভয়পক্ষ দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। কোনো নির্দিষ্ট এজেন্ডা নির্ধারণ করা না হলেও আলোচনার সময় পারস্পরিক স্বার্থের সব বিষয়ই আলোচনায় আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হুসেন খান এই বৈঠকে যোগদানের জন্য বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন। তিনি বলেন, “ইসলামাবাদ ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে আগ্রহী।”
তিনি বলেন, “পাকিস্তান বিশেষ করে তাদের পণ্যের দাম প্রতিযোগিতামূলক বিবেচনায় বাংলাদেশে রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে। তুলাকে প্রধান পণ্য হিসেবে উল্লেখ করে পাকিস্তান তুলা সরবরাহ করতে আগ্রহী।”
হাইকমিশনার বলেন, “পাকিস্তান যেহেতু আফগানিস্তান ও ইরান থেকে পণ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে। তাই পরিবহন খরচ কম হলে বাংলাদেশের জন্য পাকিস্তানের মাধ্যমে আমদানি অন্বেষণ করার সুযোগ রয়েছে।”
সরাসরি বিমান যোগাযোগের বিষয়ে হাইকমিশনার খান বলেন, “ফ্লাই জিন্নাহ ছাড়াও, শিয়ালকোটে অবস্থিত আরেকটি পাকিস্তানি বেসরকারি বিমান সংস্থা এয়ার সিয়াল ঢাকায় ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের কাছে আবেদন করেছে।”
তিনি বলেন, “ফ্লাই জিন্নাহ বর্তমানে ঢাকায় কার্যক্রম শুরু করার জন্য অপেক্ষা করছে। অন্যদিকে, এয়ার সিয়াল অনুমোদন পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “সরাসরি বিমান সংযোগ পর্যটন বৃদ্ধি এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত ঐতিহাসিক সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে হাইকমিশনার বলেন, “সারা বিশ্বে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই ধরনের বিষয় বিদ্যমান থাকে, তবে বর্তমান সম্পর্ক বা অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করা উচিত নয়।”
ঢাকায় অবস্থানকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব বালুচ বৃহস্পতিবার এফওসি'র পরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এই মাসের শেষের দিকে ঢাকা সফর করবেন। ২০১২ সালের পর বাংলাদেশে এটি হবে কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর।
ঢাকা/হাসান/সাইফ