কুষ্টিয়ায় গ্রাম পুলিশকে জুতার মালা পরিয়ে গ্রাম ঘোরানোর ভিডিও ফেসবুকে
Published: 14th, April 2025 GMT
কুষ্টিয়ায় এক গ্রাম পুলিশকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে গ্রামে ঘোরানো হয়েছে—এমন একটি ভিডিও ক্লিপ গতকাল রোববার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এলাকার এক বিবাহিত নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সালিস বৈঠকের পর তাঁকে জুতার মালা পরিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেন স্থানীয় লোকজন। গতকাল বিকেলে জেলার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের এক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, ওই গ্রাম পুলিশ তাঁর এক বন্ধুর স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। এ নিয়ে রোববার বেলা ১১টার দিকে সালিস বসে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ওই সালিস বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দাসহ দুই পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে দুজনের মধ্যে হওয়া ফোনকলের অডিও শোনার পর ওই নারীকে তালাক দেন তাঁর স্বামী। পরে বিকেলে গ্রাম পুলিশের গলায় জুতার মালা পরিয়ে গ্রামে ঘুরিয়ে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। সেই ভিডিও সন্ধ্যার পর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই গ্রাম পুলিশের ভাষ্য, ওই নারীর স্বামীর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব ছিল। মাঝেমধ্যে তাঁদের বাড়িতে যাওয়া–আসা করতেন। খারাপ কোনো সম্পর্ক নেই। তবু স্থানীয় শামীম রেজা ও আবু তালহা নামের দুজন তাঁকে ধরে নিয়ে গিয়ে সালিস বসান। এরপর কাজি ডেকে তাঁদের (স্বামী-স্ত্রী) ৩০ হাজার টাকা মিটিয়ে তালাক দেওয়ান। পরে সেই টাকা তাঁর কাছে দাবি করা হয়। টাকা না দেওয়ায় সাদা কাগজে সই নিয়ে জুতার মালা পরিয়ে বাড়িতে দিয়ে যান।
অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় বাসিন্দা আবু তালহা বলেন, বিক্ষিপ্ত জনতা গ্রাম পুলিশকে মারধর করার পাঁয়তারা করছিল। সে জন্য কৌশল করে তাঁকে জুতার মালা পরিয়ে রক্ষা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিচ্ছেদ হওয়া দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় তাঁদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম বলেন, বিশেষ কাজে তিনি উপজেলার বাইরে ছিলেন। দুপুরে জানতে পারেন, গ্রাম পুলিশকে দোকানঘরে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি তাঁদের ওই গ্রাম পুলিশ সদস্যকে পুলিশে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি দেখেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ সব ক
এছাড়াও পড়ুন:
কুয়েটের সাবেক ভিসি, ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, উপ-উপাচার্য ড. সোবহান মিয়া, কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়াত হোসেন নয়নসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। সোমবার নগরীর খানজাহান আলী থানায় মামলা দুটি করেন কুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী লুৎফর রহমান ও মাহদী হাসান। মঙ্গলবার মামলার নথিপত্র আদালতে পাঠানো হলে তথ্যটি প্রকাশ পায়।
খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ২০১৭ সালের ১ মে রাতে লালন শাহ হলের গেস্ট রুমে লুৎফর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীকে রাতভর মারপিট করা হয়। এতে ওই শিক্ষার্থীদের দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে যায়। একই রাতে মাহদী হাসান নামের আরেক শিক্ষার্থীকে মারপিট করা হয়। এতে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীরা খুলনা মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালতটি থানাকে মামলাটি গ্রহণের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে সোমবার মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে।
লুৎফর রহমানের মামলায় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সোবহান মিয়া, সাবেক রেজিস্ট্রার জি এম শহিদুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত হোসেন নয়ন, সাধারণ সম্পাদক আলী ইমতিয়াজ সোহান, ছাত্রলীগ কর্মী মো. আসাদুজ্জামান, লালন শাহ্ হলের তৎকালীন ছাত্রলীগ কর্মী ও পরবর্তী কুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি রুদ্রনীল সিংহ শুভ, ছাত্রলীগ নেতা এইচ এম তানভীর রেজওয়ান সিদিক, আল ইশমাম, রেশাদ রহমান, তারিকুল তিলক, পরিমল কুমার রায়, আলী ইবনুল সানি, তারিক আহমেদ শ্রাবন ও দৌলতপুর থানার তৎকালীন ওসি আনোয়ার হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।
মাহদী হাসানের মামলায় সাবেক উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা আলী ইবনুল সানি, কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান, বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগ কর্মী আবির স্বপ্নিল, তাশরিফ সালেহ রাহুল, ফয়সাল, মশারুর আলম কৌশিক, আসাদুজ্জামান রিয়ান, পরিমল কুমার রায়, তারিক আম্মেদ শ্রাবণ, দৌলতপুর থানার সাবেক সভাপতি এস এম আনোয়ার হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।