ইলেকট্রনিকসামগ্রীতে ট্রাম্পের শুল্কছাড়ের ঘোষণায় ঊর্ধ্বমুখী এশিয়ার বাজার
Published: 14th, April 2025 GMT
আজ সোমবার এশিয়ার শেয়ারবাজারে সূচকের উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে ওয়াল স্ট্রিটের শেয়ারের ফিউচার্সও ঊর্ধ্বমুখী। মূলত কম্পিউটারসহ ইলেকট্রনিকসামগ্রীতে ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক অব্যাহতি দেওয়ায় আজ এই শেয়ারবাজারে ইতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে। যদিও সূচক তেমন একটা বাড়েনি। ট্রাম্প বলেছেন, ইলেকট্রনিকসামগ্রীতে শুল্কছাড়ের এই ঘোষণা সাময়িক।
গতকাল রোববার ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, আগামী সপ্তাহেই সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্ক আরোপ করা হবে। সেই সঙ্গে স্মার্টফোনের বিষয়েও শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এমএসসিআইয়ের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ, যদিও গত সপ্তাহে এই সূচকের পতন হয়েছিল ৪ শতাংশ। চীনের ব্লু চিপসের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। জাপানের নিক্কেই এশিয়া সূচকের উত্থান হয়েছে ১ দশমিক ৬ শতাংশ। এ সূচকটিই গত সপ্তাহে অনেকটা ওঠানামা করেছে। রীতিমতো খ্যাপাটে আচরণ করেছে।
এ ছাড়া এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচার্স সূচকের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ; নাসডাক ফিউচার্সের উত্থান হয়েছে ১ দশমিক ২ শতাংশ। গত সপ্তাহে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। তারপরও ২ এপ্রিল ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের আগে এই সূচক যে অবস্থায় ছিল, সেই জায়গা থেকে এখনো ৫ শতাংশ নিচে।
ওদিকে ইউরোস্টক্স ফিউচার্সের উত্থান হয়েছে ২ দশমিক ৬ শতাংশ। এফটিএসই ফিউচার্সের উত্থান হয়েছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ আর ডিএএক্স ফিউচার্সের উত্থান হয়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশ।
এদিকে আজও বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রার বিপরীতে ডলারের পতন অব্যাহত আছে। এর আগে গত সপ্তাহেও ডলারের পতন হয়েছে ৫ শতাংশ। আজ ইউরো, ইয়েন ও সুইস ফ্রাঁর বিপরীতে ডলারের দরপতন হয়েছে। তবে এই অনিশ্চয়তার সময় বিনিয়োগের আরেক নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে খ্যাত সোনার দাম বাড়ছে। আজ সোমবার সকালে বিশ্ববাজারে সোনার দাম আবারও রেকর্ড গড়েছে। হলুদ এই ধাতুর দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ২৪৫ ডলারে উঠে গেছে।
এদিকে তেলের অবস্থা ভালো নয়। একদিকে আছে মন্দার শঙ্কা, আরেক দিকে ওপেকের তেল সরবরাহ বৃদ্ধির সম্ভাবনা; এই দুয়ে মিলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আজও কমেছে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৭ সেন্ট কমে ৬৪ দশমিক ৫৯ ডলারে নেমে এসেছে। ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ১৫ সেন্ট কমে ব্যারেলপ্রতি ৬১ দশমিক ৩৫ ডলারে নেমে এসেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ১ দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
গুমের ভয় দেখিয়ে চার কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ
ক্রসফায়ার ও গুমের ভয় দেখিয়ে ৪ কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায় করছেন পুলিশের চার কর্মকর্তা। এমন অভিযোগ করেছেন দেশের অন্যতম মেডিকেল ভর্তি কোচিং প্রতিষ্ঠান ‘মেডিকো’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. জুবায়দুর রহমান জনি। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
পুলিশ কর্তৃক হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা, শারীরিক নির্যাতন করে মিথ্যা স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ধারণ ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ডা. জুবায়দুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা ও শাস্তির দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, ষড়যন্ত্রমূলক প্রশ্নফাঁস মামলায় গত ২ আগস্ট বাসা থেকে ডা. জুবায়দুর রহমানকে তুলে নেওয়া হয়। এরপর ক্রসফায়ার ও গুমের ভয় দেখিয়ে তাঁর পারিবারের কাছ থেকে ৪ কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায় করে সিআইডি’র সাবেক অপরাধ তদন্ত প্রধান মোহাম্মদ আলী ও পুলিশের তিন কর্মকর্তা।
অন্য তিন কর্মকর্তা হলেন, র্যাব-১৪ এর সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সেবা) জুয়েল চাকমা, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান, ঢাকা মালিবাগ সিআইডির অপরাধ তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক আতিকুর রহমান।
ডা. জুবায়দুর রহমান বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর ছয় কিস্তিতে আমার পরিবারের কাছ এ টাকা নেয় মোহাম্মদ আলী সিন্ডিকেট। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় দেড় কোটি, কারাগারে থাকা অবস্থায় দেড় কোটি, কারাগার থেকে বের হয়ে আসার পর এক কোটি নেয়।
তিনি জানান, আগাঁরগাও আইসিটি টাওয়ার, পাসপোর্ট অফিস, বেতার ভবন আশেপাশের রাস্তার থেকে সাব-ইন্সপেক্টর মেহেদী হাসান নিজের গাড়ি দিয়ে এসে নিয়ে গেছেন। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় শারীরিক নির্যাতন, নতুন আরও মামলা, স্ত্রীকে গ্রেপ্তার ও মেডিকো সীলগালা করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এ অর্থ আদায় করা হয়।
ডা. জুবায়দুর রহমান দাবি করেন, টাকা নেওয়ার বিষয়ে একাধিক অডিও রেকর্ড রয়েছে তাঁর কাছে। তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের স্কাইসিটি হোটেলে ডেকে মুক্তির বিনিময়ে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করা হয়। এছাড়া রিমান্ডে ক্রসফায়ারে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয় এবং তা একজন সাংবাদিক দিয়ে ভিডিও নেওয়া হয়।
প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি ছিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক দাবি করে তিনি বলেন, আমার পরিবারের একমাত্র বোন দুইবার মেডিকেলে পরীক্ষা দিয়ে চান্স পায়নি, পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, এছাড়া আমার স্ত্রী’র দুইবার মেডিকেলে পরীক্ষা দিয়ে সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পায়নি। পরবর্তীতে ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আমার স্ত্রীকে কেন স্কাইসিটি হোটেলে ডাকা হয়েছিল? কেন আমাকে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়েছিল? এটা কি শুধুই তদন্তের অংশ, না কোনো চক্রান্ত?’ তখন আমার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের স্কাইসিটি হোটেলে ডেকে মুক্তির বিনিময়ে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করা হয়।
উল্লেখ্য-২০২৩ সালের জুলাইয়ে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস নিয়ে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। তার ধারাবাহিকতায় ২৩ আগস্ট ভোরে সাদা পোশাকে পুলিশ ডা. জনিকে তার বাসা থেকে আটক করে। অভিযোগের এ বিষয়ে জানতে সিআইডির সাবেক অপরাধ তদন্ত প্রধান মোহাম্মদ আলীকে ফোনে করা হলে সিমটি বন্ধ দেখায়।