Prothomalo:
2025-04-15@13:02:41 GMT

ওয়াসার ঘুম ভাঙছে না কেন

Published: 14th, April 2025 GMT

রাজধানী ঢাকার একাধিক অভিজাত ও ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে ওয়াসার সরবরাহ করা পানিতে পোকা ও অজানা জীবাণুযুক্ত উপাদান পাওয়া যাওয়ার ঘটনায় জনমনে চরম উদ্বেগ, আতঙ্ক ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। কল্যাণপুর, তেজগাঁও, মালিবাগ, মগবাজার, মধুবাগ, বাসাবো, মানিকনগর, খিলগাঁও তিলপাপাড়া, তারাবাগ প্রভৃতি এলাকায় দীর্ঘ এক মাসের অধিক সময় ধরে বাসিন্দারা ব্যবহৃত পানিতে লালচে, কালচে ও সাদা রঙের আধা ইঞ্চি দীর্ঘ বিভিন্ন জাতের পোকা, লার্ভা ও অনুচ্চার্য বস্তুকণা আবিষ্কার করছেন।

এই পানি জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম হুমকি এবং যেকোনো সভ্য নগররাষ্ট্রে এটি কল্পনাতীত। যে পানি ব্যবহারের জন্য প্রতিদিন করভারে জর্জরিত নাগরিকেরা মূল্য পরিশোধ করছেন, সেই পানিই যদি জীবাণুবাহী ও পোকাপূর্ণ হয়, তবে নাগরিক অধিকারের মৌল ভিত্তি কোথায়? এমন পরিস্থিতিতে ওয়াসার দায়সারাভাবে দায় এড়ানোর প্রচেষ্টা আরও হতাশাব্যঞ্জক ও দায়িত্বহীনতা নির্দেশ করে।

কল্যাণপুরের মসজিদ গলি, যেখানে ২৭টি আবাসিক ভবনের মধ্যে অন্তত ১৫টি বাড়ির পানিতে নিয়মিতভাবে পোকা পাওয়া যাচ্ছে, সেই বাস্তবতায় ওয়াসার বক্তব্য যে ট্যাংক পরিষ্কার করলেই সমস্যার অবসান হবে—তা বাস্তব সত্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বহু বাসিন্দা স্বপ্রণোদিতভাবে ভূগর্ভস্থ ও ছাদের পানির ট্যাংক পরিষ্কার করিয়েও কোনো সুফল পাননি। একাধিক অভিযোগ জানানোর পরও কর্মপর্যায়ে গাফিলতি ও প্রতিকারহীনতা প্রকটভাবে প্রতিভাত।

অন্যদিকে মুগদা, মানিকনগর, খিলগাঁও তিলপাপাড়ায় যে ধরনের পোকা—কখনো লাল কেঁচোর মতো, কখনো সুতার মতো লার্ভা দেখা যাচ্ছে, তা সাধারণ পরিচ্ছন্নতাজনিত অবহেলার কারণে হয়নি; বরং এটি ওয়াসার পানি শোধনাগার ব্যবস্থায় অন্তর্নিহিত কোনো ত্রুটি বা সংকটের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারের দিকেই সন্দেহ করছেন, তা প্রকারান্তরে সমস্যার গভীরতা ও পরিধিকে স্বীকার করে।

ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আহ্বান—সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই সংকট নিরসনের জন্য অবিলম্বে সার্বিক তদারকি, গবেষণাভিত্তিক কারণ নিরূপণ ও সমন্বিত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। প্রয়োজনে পানি শোধনাগারসমূহে স্বাধীন বিশেষজ্ঞ প্যানেল দ্বারা পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা পরিচালনা করা হোক এবং প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে জল নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে দায় নির্ধারণ করে কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক।

এটি কেবল একটি প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, এটি একটি মৌলিক মানবাধিকার সংকট। নাগরিকের সুস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের অব্যাহত নিষ্ক্রিয়তা যদি চলতেই থাকে, তবে ভবিষ্যতে তার পরিণতি ভয়াবহতর হতে বাধ্য। এখনই সময়, সংকটকে স্বীকার করে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তা নিরসনে সর্বশক্তি নিয়োগ করার। অতীব জরুরি এই কর্তব্য পালনে একটুও বিলম্ব অনুচিত ও অমার্জনীয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক র কর

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াসার ঘুম ভাঙছে না কেন

রাজধানী ঢাকার একাধিক অভিজাত ও ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে ওয়াসার সরবরাহ করা পানিতে পোকা ও অজানা জীবাণুযুক্ত উপাদান পাওয়া যাওয়ার ঘটনায় জনমনে চরম উদ্বেগ, আতঙ্ক ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। কল্যাণপুর, তেজগাঁও, মালিবাগ, মগবাজার, মধুবাগ, বাসাবো, মানিকনগর, খিলগাঁও তিলপাপাড়া, তারাবাগ প্রভৃতি এলাকায় দীর্ঘ এক মাসের অধিক সময় ধরে বাসিন্দারা ব্যবহৃত পানিতে লালচে, কালচে ও সাদা রঙের আধা ইঞ্চি দীর্ঘ বিভিন্ন জাতের পোকা, লার্ভা ও অনুচ্চার্য বস্তুকণা আবিষ্কার করছেন।

এই পানি জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম হুমকি এবং যেকোনো সভ্য নগররাষ্ট্রে এটি কল্পনাতীত। যে পানি ব্যবহারের জন্য প্রতিদিন করভারে জর্জরিত নাগরিকেরা মূল্য পরিশোধ করছেন, সেই পানিই যদি জীবাণুবাহী ও পোকাপূর্ণ হয়, তবে নাগরিক অধিকারের মৌল ভিত্তি কোথায়? এমন পরিস্থিতিতে ওয়াসার দায়সারাভাবে দায় এড়ানোর প্রচেষ্টা আরও হতাশাব্যঞ্জক ও দায়িত্বহীনতা নির্দেশ করে।

কল্যাণপুরের মসজিদ গলি, যেখানে ২৭টি আবাসিক ভবনের মধ্যে অন্তত ১৫টি বাড়ির পানিতে নিয়মিতভাবে পোকা পাওয়া যাচ্ছে, সেই বাস্তবতায় ওয়াসার বক্তব্য যে ট্যাংক পরিষ্কার করলেই সমস্যার অবসান হবে—তা বাস্তব সত্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বহু বাসিন্দা স্বপ্রণোদিতভাবে ভূগর্ভস্থ ও ছাদের পানির ট্যাংক পরিষ্কার করিয়েও কোনো সুফল পাননি। একাধিক অভিযোগ জানানোর পরও কর্মপর্যায়ে গাফিলতি ও প্রতিকারহীনতা প্রকটভাবে প্রতিভাত।

অন্যদিকে মুগদা, মানিকনগর, খিলগাঁও তিলপাপাড়ায় যে ধরনের পোকা—কখনো লাল কেঁচোর মতো, কখনো সুতার মতো লার্ভা দেখা যাচ্ছে, তা সাধারণ পরিচ্ছন্নতাজনিত অবহেলার কারণে হয়নি; বরং এটি ওয়াসার পানি শোধনাগার ব্যবস্থায় অন্তর্নিহিত কোনো ত্রুটি বা সংকটের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারের দিকেই সন্দেহ করছেন, তা প্রকারান্তরে সমস্যার গভীরতা ও পরিধিকে স্বীকার করে।

ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আহ্বান—সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই সংকট নিরসনের জন্য অবিলম্বে সার্বিক তদারকি, গবেষণাভিত্তিক কারণ নিরূপণ ও সমন্বিত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। প্রয়োজনে পানি শোধনাগারসমূহে স্বাধীন বিশেষজ্ঞ প্যানেল দ্বারা পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা পরিচালনা করা হোক এবং প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে জল নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে দায় নির্ধারণ করে কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক।

এটি কেবল একটি প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, এটি একটি মৌলিক মানবাধিকার সংকট। নাগরিকের সুস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের অব্যাহত নিষ্ক্রিয়তা যদি চলতেই থাকে, তবে ভবিষ্যতে তার পরিণতি ভয়াবহতর হতে বাধ্য। এখনই সময়, সংকটকে স্বীকার করে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তা নিরসনে সর্বশক্তি নিয়োগ করার। অতীব জরুরি এই কর্তব্য পালনে একটুও বিলম্ব অনুচিত ও অমার্জনীয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ