মহুয়া ও নদের চাঁদের প্রেমালাপ
এক দিন নদ্যার ঠাকুর পন্থে করে মেলা।
ঘরের কুনায় বাতি জ্বালে তিন সন্ধ্যার বেলা॥
তাসা কইরিয়া বাদ্যার ছেড়ী ফিরে নিজের বাড়ী ।
নদ্যার ঠাকুর পথে পাইয়া কহে তড়াতড়ি৷
শুন শুন কইন্যা ওরে আমার কথা রাখ।
মনের কথা কইবাম আমি একটু কাছে থাক॥
সইন্ধ্যা বেলায় চান্নি উঠে সূরুয বইসে পাটে।
হেন কালেতে একলা তুমি যাইও জলের ঘাটে
সইন্ধ্যা বেলা জলের ঘাটে একলা যাইও তুমি।
ভরা কলসী কাঙ্কে তোমার তুল্যা দিয়াম আমি ॥
কলসী করিয়া কাঙ্কে মহুয়া যায় জলে।
নদ্যার চান ঘাটে গেল সেইনা সইন্ধ্যা কালে
“জল ভর সুন্দরী কইন্যা ভালে দিছ মন।
কাইল যে কইছিলাম কথা আছে নি স্মরণ।”
“শুন শুন ভিন দেশী কুমার বলি তোমার ঠাই ।
কাইল বা কি কইছলা কথা আমার মনে নাই।”
“নবীন যইবন কইন্যা ভুলা তোমার মন।
এক রাতিরে এই কথাটা হইলে বিস্মরণ।”
“তুমি ত ভিন দেশী পুরুষ আমি ভিন্ন নারী।
তোমার সঙ্গে কইতে কথা আমি লজ্জায় মরি॥”
“জল ভর সুন্দরী কইন্যা জলে দিছ ঢেউ।
হাসি মুখে কওনা কথা সঙ্গে নাই মোর কেউ।
কেবা তোমার মাতা কইন্যা কেবা তোমার পিতা ।
এই দেশে আসিবার আগে পূর্ব্বে ছিলে কোথা॥”
“নাহি আমার মাতাপিতা গর্ভ সুদর ভাই।
সুতের হেওলা অইয়া ভাইস্যা বেড়াই।
কপালে আছিল লিখন বাইদ্যার সঙ্গে ফিরি।
নিজের আগুনে আমি নিজে পুইরা মরি।
এই দেশে দরদী নাইরে কারে কইবাম কথা।
কোন জন বুঝিবে আমার পুরা মনের বেথা।
মনের সুখে তুমি ঠাকুর সুন্দর নারী লইয়া।
আপন হালে করছ ঘর সুখেতে বান্ধিয়া”
ঠাকুর বলে “কইন্যা তোমার শানে বান্ধা হিয়া।
মিছা কথা কইছ তুমি না কইরাছি বিয়া।”
“কঠিন তোমার মাতাপিতা কঠিন তোমার প্রাণ।
এমন যইবন তোমার যায় অকারণ॥
কঠিন তোমার মাতাপিতা কঠিন তোমার হিয়া।
এমন যইবন কালে নাহি দিছে বিয়া।”
“কঠিন আমার মাতাপিতা কঠিন আমার হিয়া।
তোমার মত নারী পাইলে করি আমি বিয়া”
“লজ্জা নাই নির্লজ্জ ঠাকুর লজ্জা নাইরে তর।
গলায় কলসী বাইন্দা জলে ডুবা মর।”
“কোথায় পাব কলসী কইন্যা কোথায় পাব দড়ী।
তুমি হও গহীন গাঙ্গ আমি ডুব্যা মরি।”
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কাহিনী কাব্য থেকে
মহুয়া ও নদের চাঁদের প্রেমালাপ
এক দিন নদ্যার ঠাকুর পন্থে করে মেলা।
ঘরের কুনায় বাতি জ্বালে তিন সন্ধ্যার বেলা॥
তাসা কইরিয়া বাদ্যার ছেড়ী ফিরে নিজের বাড়ী ।
নদ্যার ঠাকুর পথে পাইয়া কহে তড়াতড়ি৷
শুন শুন কইন্যা ওরে আমার কথা রাখ।
মনের কথা কইবাম আমি একটু কাছে থাক॥
সইন্ধ্যা বেলায় চান্নি উঠে সূরুয বইসে পাটে।
হেন কালেতে একলা তুমি যাইও জলের ঘাটে
সইন্ধ্যা বেলা জলের ঘাটে একলা যাইও তুমি।
ভরা কলসী কাঙ্কে তোমার তুল্যা দিয়াম আমি ॥
কলসী করিয়া কাঙ্কে মহুয়া যায় জলে।
নদ্যার চান ঘাটে গেল সেইনা সইন্ধ্যা কালে
“জল ভর সুন্দরী কইন্যা ভালে দিছ মন।
কাইল যে কইছিলাম কথা আছে নি স্মরণ।”
“শুন শুন ভিন দেশী কুমার বলি তোমার ঠাই ।
কাইল বা কি কইছলা কথা আমার মনে নাই।”
“নবীন যইবন কইন্যা ভুলা তোমার মন।
এক রাতিরে এই কথাটা হইলে বিস্মরণ।”
“তুমি ত ভিন দেশী পুরুষ আমি ভিন্ন নারী।
তোমার সঙ্গে কইতে কথা আমি লজ্জায় মরি॥”
“জল ভর সুন্দরী কইন্যা জলে দিছ ঢেউ।
হাসি মুখে কওনা কথা সঙ্গে নাই মোর কেউ।
কেবা তোমার মাতা কইন্যা কেবা তোমার পিতা ।
এই দেশে আসিবার আগে পূর্ব্বে ছিলে কোথা॥”
“নাহি আমার মাতাপিতা গর্ভ সুদর ভাই।
সুতের হেওলা অইয়া ভাইস্যা বেড়াই।
কপালে আছিল লিখন বাইদ্যার সঙ্গে ফিরি।
নিজের আগুনে আমি নিজে পুইরা মরি।
এই দেশে দরদী নাইরে কারে কইবাম কথা।
কোন জন বুঝিবে আমার পুরা মনের বেথা।
মনের সুখে তুমি ঠাকুর সুন্দর নারী লইয়া।
আপন হালে করছ ঘর সুখেতে বান্ধিয়া”
ঠাকুর বলে “কইন্যা তোমার শানে বান্ধা হিয়া।
মিছা কথা কইছ তুমি না কইরাছি বিয়া।”
“কঠিন তোমার মাতাপিতা কঠিন তোমার প্রাণ।
এমন যইবন তোমার যায় অকারণ॥
কঠিন তোমার মাতাপিতা কঠিন তোমার হিয়া।
এমন যইবন কালে নাহি দিছে বিয়া।”
“কঠিন আমার মাতাপিতা কঠিন আমার হিয়া।
তোমার মত নারী পাইলে করি আমি বিয়া”
“লজ্জা নাই নির্লজ্জ ঠাকুর লজ্জা নাইরে তর।
গলায় কলসী বাইন্দা জলে ডুবা মর।”
“কোথায় পাব কলসী কইন্যা কোথায় পাব দড়ী।
তুমি হও গহীন গাঙ্গ আমি ডুব্যা মরি।”