পয়লা বৈশাখে তৌহিদবাদী গণসংস্কৃতির দিকে ফিরে আসার আহ্বান হেফাজতে ইসলামের
Published: 13th, April 2025 GMT
পয়লা বৈশাখে ‘তৌহিদবাদী গণসংস্কৃতি’র দিকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদকে ‘নব্য প্যাগানবাদী সংস্কৃতির কারখানা’ বলে আখ্যায়িত করেছে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক এই সংগঠন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান আজ রোববার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘পয়লা বৈশাখের সংস্কৃতিকে নব্য প্যাগানবাদী সংস্কৃতির মোড়লদের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ নব্য প্যাগানবাদী সংস্কৃতির কারখানা।’
‘ভারতপন্থী এই এলিটদের সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদকে’ রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তৌহিদবাদী গণসংস্কৃতির দিকে দেশবাসীকে ফিরে আসার আহ্বান জানান হেফাজত নেতারা।
বিবৃতিতে তৌহিদবাদী গণমানুষের বিরুদ্ধে শুধু সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদই নয়, ভারতের বশংবদ ফ্যাসিস্ট হাসিনার রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদের হাতিয়ার হিসেবেও এটি (পয়লা বৈশাখ) ব্যবহৃত হয়েছে উল্লেখ করে হেফাজত নেতারা বলেন, ‘ভারতপন্থী এলিটদের সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ নির্মূল করতে না পারলে আমাদের জাতীয় উৎসব ও সংস্কৃতিতে গণমানুষের তৌহিদবাদী চেতনার স্ফুরণের সুযোগ ঘটবে না।’
সে লক্ষ্যে ‘ভারতপন্থী সেক্যুলার এলিটদের’ সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
হেফাজত নেতারা আরও বলেন, ‘পৃথিবীতে ধর্মের ইতিহাসের বাইরে কোনো সভ্যতা নেই। ধর্মই হচ্ছে সভ্যতার বাপ-দাদা। এমনকি পশ্চিমা আধুনিকতার জন্মও খ্রিষ্টীয় ধর্মসভ্যতার গর্ভে।’
ধর্মনিরপেক্ষতা ও সর্বজনীনতার সংস্কৃতির ছলে মুসলমানদের ওপর বৈদিক সভ্যতা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে হেফাজতে ইসলামের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্থান-কালনির্বিশেষে আমরা মুসলমানরা মিল্লাতে ইবরাহিম বা ইবরাহিম (আ.
যাঁরা তৌহিদি চেতনার প্রশ্নে আপস করেন তাঁরা মুসলমানি সত্তা রক্ষা করতে পারেন না মন্তব্য করে বিবৃতিতে হেফাজতের নেতারা বলেন, ‘ভুলে যাওয়া চলবে না যে মুসলমানরাই বাংলা সনের প্রবর্তক। আর মুসলমান মাত্রই সব ধরনের প্যাগানবাদী সংস্কৃতি ও বোধবিশ্বাস থেকে মুক্ত। কিন্তু মুসলমান হয়েও যাঁরা তৌহিদি চেতনার প্রশ্নে আপস করবেন, তাঁরা বড়জোর সেক্যুলার হতে পারেন; কিন্তু কোনোভাবেই আর মুসলমানি সত্তা রক্ষা করতে পারেন না।’
‘ভারতের মদদপুষ্ট মূর্তিবাদী বা প্যাগানবাদী সাংস্কৃতিক ষড়যন্ত্রের’ ব্যাপারে বাংলাদেশের সব মুসলমানকে সচেতন হতে বিবৃতিতে আহ্বান জানানো হয়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মডেল মেঘনাকে কারাগারে পাঠানোর নিন্দা এমএসএফের
মডেল মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। তারা বলেছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলা ছাড়া কাউকে আটক রাখা আইন পরিপন্থী ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।
আজ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নিন্দা জানায় এমএসএফ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট কোনো মামলা না করে মেঘনা আলমকে দুই দিন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হেফাজতে রেখে তৃতীয় দিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এমএসএফ মনে করে, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী, ক্ষতিকর কাজ থেকে বিরত রাখতে সরকার যেকোনো ব্যক্তিকে আটক রাখার আদেশ নিতে পারে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে মিথ্যাচার ছড়ানোর মাধ্যমে আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক অবনতির চেষ্টা করা এবং দেশকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে মেঘনাকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। কিন্তু তিনি কী ধরনের ষড়যন্ত্র করেছেন, তা ডিএমপির পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে বলা হয়নি।
আরও পড়ুনবিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ, মডেল মেঘনা কারাগারে১১ এপ্রিল ২০২৫উল্লেখ্য, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আজ প্রথম আলোকে বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, সে ক্ষেত্রে ক্ষতিকর কাজ থেকে তাঁকে নিবৃত্ত রাখার জন্য আটক করতে পারেন। মডেল মেঘনা আলম ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত। যে কারণে তাঁকে গতকাল রাতে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী আদালত তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেন।
আরও পড়ুনমডেল মেঘনা আলমকে ‘নিরাপত্তা হেফাজতে’ রাখার কারণ হিসেবে যা বলল পুলিশ১১ এপ্রিল ২০২৫