জাবিতে চালু হলো ইলেকট্রিক কার্ট, কমবে দুর্ভোগ
Published: 13th, April 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের চলাচলের সুবিধার্থে পরীক্ষামূলকভাবে ইলেকট্রিক কার্ট চালু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রবিবার (১৩ই এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ কামরুল আহসান চারটি ইলেকট্রিক কার্ট উদ্বোধন করেন। এসময় উপাচার্য ও প্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা গাড়িতে করে পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন।
জানা গেছে, আগামী মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) থেকে এই কার্ট শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত হবে। দুইটি কার্ট ছাত্রদের আবাসিক হলের এলাকা থেকে এবং দুইটি কার্ট ছাত্রীদের আবাসিক হল সংলগ্ন এলাকা থেকে যাত্রা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে যাবে। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে কার্টের ভাড়া সর্বনিম্ন ৫ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
সাইকেলে হিমালয়ের অন্নপূর্ণা জয় করেছেন জাবি শিক্ষার্থী
‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচিতে জাবির শিক্ষার্থীদের সংহতি
গাড়ি উদ্বোধনের সময় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে পরিবেশবান্ধব এই গাড়ি চালু করেছি। আমরা এক শিক্ষার্থীকে হারিয়েছি অটোরিকশা দুর্ঘটনায়। আমরা এ ধরনের ঘটনা আর চাই না।”
উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “পরিবেশবান্ধব এবং সাশ্রয়ী পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ। আমরা দেখবো স্থানীয়ভাবে নির্মাণ করা এই ইলেকট্রিক কার্ট আমাদের কতটা সার্ভিস দিতে পারে। শিক্ষার্থীদের দাবীর প্রেক্ষিতেই মূলত এই উদ্যোগ। তাদের আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।”
তিনি বলেন, “গুরুত্বের সঙ্গে বলতে চাই, আফসানা কারীম রাচির জীবনের বিনিময়ে কখনোই এটি যথার্থ কোনো পদক্ষেপ হতে পারে না। আমরা যেন তাকে ভুলে যাচ্ছি না, সেই নিদর্শন হিসেবে এটাকে গ্রহণ করি। এই পরিবহন দ্বারা যারা উপকৃত হবে, তাদের ভালো অনুভূতিটা তার জন্য দোয়া হিসেবে যাবে, এই প্রত্যাশা রাখছি।”
গত ১৯ নভেম্বর মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা করিম (রাচি) ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় প্রাণ হারান। এতে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ক্যাম্পাসে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অটোরিকশা নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে যে দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে, তা লাঘব করতেই বিকল্প যানবাহনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।
বর্তমানে ক্যাম্পাসে প্যাডেলচালিত রিকশা চালু থাকলেও তার সংখ্যা ও ভাড়ার দিক বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী নয়। তাই শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে বিকল্প ও টেকসই সমাধান হিসেবে পরিবেশবান্ধব “কার্ট গাড়ি” চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ বা পথনকশা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মে মাসের প্রথমার্ধে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হবে এবং একই মাসের মাঝামাঝি ভোটগ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
তবে তফসিল ও চূড়ান্ত নির্বাচনের তারিখ কবে ঘোষণা করা হবে, সেটি রোডম্যাপে বলা নেই।
আরো পড়ুন:
বিএনপির বর্ধিত সভায় ঐক্যের ডাক, ভোটের জোর প্রস্তুতিতে চোখ
ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে ভোট: প্রেস সচিব
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান প্রশাসন মনে করে ডাকসু প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষার্থীদেরও ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহ আছে। সে কারণেই বর্তমান প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচন সম্পাদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকেই বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু সুন্দর এবং সুচারুভাবে আয়োজনের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ এবং অগ্রগতি সম্বলিত পথনকশা প্রকাশ করা হলো।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত বছর ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে চতুর্থ সপ্তাহে ব্যক্তি পর্যায়ের বিভিন্ন অংশীদারীর সঙ্গে আলোচনা ও পরামর্শ করা হয়। ২৪ ডিসেম্বর ডাকসু সংবিধান সংশোধন কমিটি গঠিত হয়। এ বছরের ১৫ জানুয়ারি ডাকসু নির্বাচন আচরণবিধি কমিটি গঠিত হয়, যা সিন্ডিকেটে অনুমোদনের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২০ জানুয়ারি পরামর্শ প্রদান কমিটি গঠিত হয়, যা এপ্রিলের প্রথমার্ধে চূড়ান্ত করা হবে।
এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, প্রভোস্ট, ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটের পরিচালকদেরকে অবহিত করা হবে।
জুনের প্রথমার্ধেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
শতবর্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এখন পর্যন্ত ৩৭ বার ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ২৯ বারই হয়েছে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের ৫০ বছরে। স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩ বছরে নির্বাচন হয়েছে মাত্র মাত্র আটবার।
১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুসারে, প্রতি বছর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। ডাকসু মনোনীত পাঁচ শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেটের সদস্য হন। তারা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা ও সুযোগের বিষয় তুলে ধরেন সিনেটে।
২০১৯ সালে সর্ববেশ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল। সেই সংসদের মেয়াদপূর্তির পর পেরিয়ে গেছে আরো পাঁচ বছর। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব শূন্যতা চলতে দীর্ঘদিন ধরে।
গত বছর গণঅভ্যুত্থানে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ডাকসু নির্বাচনের দাবি নিয়ে সোচ্চার হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন। এই নির্বাচনের পক্ষে জোরালো মত রয়েছে দেশের বুদ্ধিজীবীদেরও।
ঢাকা/সৌরভ/রাসেল