বিতরণের আট মাস পর ফেরত নেওয়া হচ্ছে ১৬৩৭ প্রজেক্টর
Published: 13th, April 2025 GMT
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন ও ডিজিটাল প্রযুক্তিতে শিক্ষাদানের লক্ষ্যে দিনাজপুর প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে চার হাজার প্রজেক্টর, স্ক্রিন, কেবল ও ব্যাগ আসে। এর মধ্যে একটি কোম্পানি ১ হাজার ৬৫৪টি ও আরেকটি ২ হাজার ৩৪৬টি প্রজেক্টরসহ অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করে। প্রথমটির সরবরাহ করা ১৭টি প্রজেক্টরসহ বিভিন্ন সামগ্রী বুয়েটে পাঠানো হয় টেস্টের জন্য। বাকি ১ হাজার ৬৩৭টি জেলার ১৩টি উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিতরণ করা হয়।
গত বছরের আগস্ট মাসে এসব বিতরণের পর প্রায় আট মাস পার হয়েছে। এরই মধ্যে হঠাৎ গত সপ্তাহে এসব ফেরত দেওয়ার জন্য ১৩টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিদ্যালয়গুলো এসব ফেরতও দিয়েছে। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস বলছে, এসব সরঞ্জাম যাচাই-বাছাই না করেই এবং নির্দেশনা আসার আগেই ভুলে বিতরণ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রধান শিক্ষকের ভাষ্য, এসব সামগ্রী গ্রহণের সময় কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হলেও ফেরত নেওয়ার সময় দেওয়া হয়নি কোনো ডকুমেন্টস। অনেক প্রতিষ্ঠান প্রজেক্টর দিয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করছিল। হঠাৎ এসব সামগ্রী বিদ্যালয়গুলো থেকে ফিরিয়ে নেওয়ায় এ কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়ম রয়েছে, এসব সামগ্রী একটি একটি করে বুঝে নিতে হবে। অধিদপ্তর থেকে এক্সপার্টরা এসে এসব যাচাই-বাছাই করে দেখবেন। কিন্তু সেটি হয়নি, বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমান কর্মকর্তার যোগদানের আগেই এসব হয়েছে। টেকনিক্যাল কমিটির যাচাই ছাড়া এসব কোন কোন প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা হবে, এমন নির্দেশনা ছিল না। এক্সপার্টরা এসব যাচাই-বাছাইয়ে এলে দেখা যায়, অনেকগুলো বিতরণ হয়ে গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর এসব বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে বলা হয়।
২০২৪ সালের ২১ আগস্ট বিরল উপজেলায় ১৩৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রজেক্টরসহ অন্যান্য সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়। এগুলো গত ৯ ও ১০ এপ্রিল উপজেলা শিক্ষা অফিস ফেরত নিয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুর্শিদা খাতুন জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে এসব ফেরত নিয়েছেন তারা। বোচাগঞ্জের ১২৫ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিতরণ করা সামগ্রীও ফেরত নেওয়া হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিকের ভাষ্য, প্রজেক্টর ও অন্যান্য সামগ্রী সব বিদ্যালয় থেকে ফিরিয়ে নিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নির্দেশ দিয়েছেন। এসব বিতরণে ভুল ছিল।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, দুটি কোম্পানি থেকে চার হাজার প্রজেক্টর, স্ক্রিন, কেবল ও ব্যাগ আসে দিনাজপুরে। এগুলো মূলত দিনাজপুরের পাশাপাশি লালমনিরহাট, নীলফামারী ও পঞ্চগড়ের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ছিল। যেসব প্রতিষ্ঠানে এসবের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, সেসব বিদ্যালয়ে এগুলো দেওয়ার কথা। নিয়ম থাকলেও এসব বুয়েটে টেস্ট করা হয়নি। পাশাপাশি কোন কোন প্রতিষ্ঠানে বিতরণ হবে, তারও নির্দেশনা ছিল না।
দিনাজপুরসহ ১৯টি জেলায় অধিদপ্তর থেকে এসব সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিতরণ হবে। কিন্তু তৎকালীন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ভুলে এসব দিনাজপুরের জন্য বরাদ্দ বলে মনে করেন। ১৩ উপজেলার ১ হাজার ৬৩৭টি বিদ্যালয়ে
এসব বিতরণও করা হয়। চলতি মাসে বিষয়টি জানার পর শিক্ষা কর্মকর্তা সেসব প্রজেক্টর ও সরঞ্জাম ফেরত নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন।
সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে এসব ফেরত নেওয়া হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাহজাহান সিদ্দিক। তিনি বলেন, একটি একটি করে এসব সামগ্রী যাচাই-বাছাই করা হবে। এ প্রক্রিয়া শেষ হলে অধিদপ্তর থেকে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিতরণ করবেন তারা। জেলায় ১ হাজার ৮৭১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে অনেক বিদ্যালয়ে প্রজেক্টরসহ সংশ্লিষ্ট সামগ্রী রয়েছে। যেসব প্রজেক্টর নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই ব্যবহার হয়নি। কারণ অনেক প্রতিষ্ঠানে আগে থেকে প্রজেক্টর রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর মকর ত র র জন য এসব ব উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিতরণের আট মাস পর ফেরত নেওয়া হচ্ছে ১৬৩৭ প্রজেক্টর
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন ও ডিজিটাল প্রযুক্তিতে শিক্ষাদানের লক্ষ্যে দিনাজপুর প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে চার হাজার প্রজেক্টর, স্ক্রিন, কেবল ও ব্যাগ আসে। এর মধ্যে একটি কোম্পানি ১ হাজার ৬৫৪টি ও আরেকটি ২ হাজার ৩৪৬টি প্রজেক্টরসহ অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করে। প্রথমটির সরবরাহ করা ১৭টি প্রজেক্টরসহ বিভিন্ন সামগ্রী বুয়েটে পাঠানো হয় টেস্টের জন্য। বাকি ১ হাজার ৬৩৭টি জেলার ১৩টি উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিতরণ করা হয়।
গত বছরের আগস্ট মাসে এসব বিতরণের পর প্রায় আট মাস পার হয়েছে। এরই মধ্যে হঠাৎ গত সপ্তাহে এসব ফেরত দেওয়ার জন্য ১৩টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিদ্যালয়গুলো এসব ফেরতও দিয়েছে। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস বলছে, এসব সরঞ্জাম যাচাই-বাছাই না করেই এবং নির্দেশনা আসার আগেই ভুলে বিতরণ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রধান শিক্ষকের ভাষ্য, এসব সামগ্রী গ্রহণের সময় কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হলেও ফেরত নেওয়ার সময় দেওয়া হয়নি কোনো ডকুমেন্টস। অনেক প্রতিষ্ঠান প্রজেক্টর দিয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করছিল। হঠাৎ এসব সামগ্রী বিদ্যালয়গুলো থেকে ফিরিয়ে নেওয়ায় এ কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়ম রয়েছে, এসব সামগ্রী একটি একটি করে বুঝে নিতে হবে। অধিদপ্তর থেকে এক্সপার্টরা এসে এসব যাচাই-বাছাই করে দেখবেন। কিন্তু সেটি হয়নি, বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমান কর্মকর্তার যোগদানের আগেই এসব হয়েছে। টেকনিক্যাল কমিটির যাচাই ছাড়া এসব কোন কোন প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা হবে, এমন নির্দেশনা ছিল না। এক্সপার্টরা এসব যাচাই-বাছাইয়ে এলে দেখা যায়, অনেকগুলো বিতরণ হয়ে গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর এসব বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে বলা হয়।
২০২৪ সালের ২১ আগস্ট বিরল উপজেলায় ১৩৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রজেক্টরসহ অন্যান্য সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়। এগুলো গত ৯ ও ১০ এপ্রিল উপজেলা শিক্ষা অফিস ফেরত নিয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুর্শিদা খাতুন জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে এসব ফেরত নিয়েছেন তারা। বোচাগঞ্জের ১২৫ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিতরণ করা সামগ্রীও ফেরত নেওয়া হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিকের ভাষ্য, প্রজেক্টর ও অন্যান্য সামগ্রী সব বিদ্যালয় থেকে ফিরিয়ে নিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নির্দেশ দিয়েছেন। এসব বিতরণে ভুল ছিল।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, দুটি কোম্পানি থেকে চার হাজার প্রজেক্টর, স্ক্রিন, কেবল ও ব্যাগ আসে দিনাজপুরে। এগুলো মূলত দিনাজপুরের পাশাপাশি লালমনিরহাট, নীলফামারী ও পঞ্চগড়ের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ছিল। যেসব প্রতিষ্ঠানে এসবের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, সেসব বিদ্যালয়ে এগুলো দেওয়ার কথা। নিয়ম থাকলেও এসব বুয়েটে টেস্ট করা হয়নি। পাশাপাশি কোন কোন প্রতিষ্ঠানে বিতরণ হবে, তারও নির্দেশনা ছিল না।
দিনাজপুরসহ ১৯টি জেলায় অধিদপ্তর থেকে এসব সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিতরণ হবে। কিন্তু তৎকালীন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ভুলে এসব দিনাজপুরের জন্য বরাদ্দ বলে মনে করেন। ১৩ উপজেলার ১ হাজার ৬৩৭টি বিদ্যালয়ে
এসব বিতরণও করা হয়। চলতি মাসে বিষয়টি জানার পর শিক্ষা কর্মকর্তা সেসব প্রজেক্টর ও সরঞ্জাম ফেরত নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন।
সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে এসব ফেরত নেওয়া হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাহজাহান সিদ্দিক। তিনি বলেন, একটি একটি করে এসব সামগ্রী যাচাই-বাছাই করা হবে। এ প্রক্রিয়া শেষ হলে অধিদপ্তর থেকে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিতরণ করবেন তারা। জেলায় ১ হাজার ৮৭১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে অনেক বিদ্যালয়ে প্রজেক্টরসহ সংশ্লিষ্ট সামগ্রী রয়েছে। যেসব প্রজেক্টর নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই ব্যবহার হয়নি। কারণ অনেক প্রতিষ্ঠানে আগে থেকে প্রজেক্টর রয়েছে।