চট্টগ্রামের ডিসি হিলে পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি দল মিছিল নিয়ে গিয়ে মঞ্চ এবং আশপাশের চেয়ার–টেবিল ভাঙচুর করে। এ সময় তারা শেখ হাসিনার ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত ডিসি হিলে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেয়।

সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন পরিষদের ব্যানারে এখানে বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। এবার অনুষ্ঠানটি ৪৭ বছরে পা রাখতে চলেছে। ভাঙচুরের পর ডিসি হিলে এবার বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিষদ। প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে পরিষদের অভিযোগ।

ভাঙচুরের আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে ২০টি সংগঠনের একটি তালিকা দেওয়া হয় আয়োজকদের। ফ্যাসিস্টের দোসর অভিযোগ এনে ওই সংগঠনগুলোকে মঞ্চে তুলতে নিষেধ করে দেয় প্রশাসন। এর আগে সকালে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে সম্মিলিত বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপন মঞ্চ নামে একটি সংগঠন মানববন্ধন করে।

‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার চিহ্নিত দোসরদের নেতৃত্বে বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন আয়োজনের প্রতিবাদে’ এই মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মূলত জাতীয়বাদী সাংস্কৃতিক সংগঠন (জাসাস), বিএনপির সহযোগী সংগঠন মিলে এই কর্মসূচির আয়োজন করে। জেলা প্রশাসক বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে এই সংগঠনগুলোকে নববর্ষের অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

যাঁরা এসব অভিযোগ তুলেছেন, তাঁরাই সন্ধ্যায় ভাঙচুর চালিয়েছেন বলে আয়োজকদের অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শী সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন পরিষদের সদস্যসচিব মোহাম্মদ আলী বলেন, সন্ধ্যার দিকে ৪০ জনের মতো একটি দল মিছিল নিয়ে আসে। তারা হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। এ সময় ‘হাসিনার দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান, হাসিনার ফাঁসি চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়। একপর্যায়ে মঞ্চে উঠে ভাঙচুর শুরু করে। এই দলের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে থাকা কয়েকজনও ছিলেন। চেয়ার–টেবিল সব ভাঙচুর করে ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। শিল্পীদের জন্য তৈরি কক্ষসহ সবকিছু ভাঙচুর করে। ১৫ মিনিট পর তারা চলে যায়।

পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়। ঘটনাস্থলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, একটি মিছিল এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভাঙচুর করে চলে গেছে। বিষয়টা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

জানতে চাইলে পরিষদের সমন্বয়ক সুচরিত দাশ বলেন, ‘আমরা সোমবার আর পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান করব না। যারা বিভিন্ন সংগঠনের নামে অভিযোগ দিয়েছে, তারাই এই ভাঙচুর করেছে। এভাবে আর অনুষ্ঠান করা যায় না। প্রশাসন শুরু থেকে আমাদের অনুমতি দিতে গড়িমসি করেছে। অসহযোগিতা করেছে। এ কারণে আজকের ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।’

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাসাসের সদস্যসচিব ও নববর্ষ উদ্‌যাপন মঞ্চের সংগঠক মামুনুর রশিদ (শিপন) বলেন, ‘তারা হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে চায়। যারা ডিসি হিলে অনুষ্ঠান করছে, তারা দোসর। আমরা মানববন্ধন করে ডিসিকে স্মারকলিপি দিয়েছি। ভাঙচুরের বিষয়ে অবগত নই।’

জানতে চাইলে আজ রাত পৌনে ৯টার দিকে নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো.

আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের থানায় নেওয়া হয়েছে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র অন ষ ঠ ন নববর ষ স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফিলিস্তিন জাগে ফিলিস্তিন জাগে’

‘সন্ধ্যা নামে প্রলয় মাঝে, বাচ্চারা খেলে না আর, স্কুল ভেঙে গেছে বই পুড়ছে, তবু ওদের সাহসে নেই বাঁধ, ফিলিস্তিন জাগে ফিলিস্তিন জাগে’– বহু দূরের ফিলিস্তিনের নির্যাতিত শিশুদের জন্য নারায়ণগঞ্জে খেলাঘরের শিশুরা সবাই মিলে দাঁড় করিয়েছে একটি কবিতা। শনিবার বিকেলে এই কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়েই পালন করে প্রতিবাদী মানববন্ধন। সেখানে ফিলিস্তিনের নির্বিচার শিশু হত্যার, মানুষ হত্যার প্রতিবাদ জানায় তারা। 
‘ফিলিস্তিন জাগে ফিলিস্তিন জাগে’ কবিতার লাইনটি মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের মুখে রূপান্তরিত হয় স্লোগানে। পাশাপাশি উঠে আসে আরেক স্লোগান, ‘খেলাঘর চায় না, শিশুদের কান্না’। শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে খেলাঘর আসর আয়োজিত এ কর্মসূচিতে অংশ নেন নানা দলমতের মানুষ।
জেলা খেলাঘর আসরের সভাপতি জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, ‘ফিলিস্তিনি শিশুদের কান্নার রোল আমাদের হৃদয়ে গভীর কষ্ট সৃষ্টি করেছে। তাই আমরা শিশুদের নিয়ে আজ রাস্তায় দাঁড়িয়েছি এসব শিশুর কান্নার সঙ্গে চিৎকার দেওয়ার জন্য। আমরা আমেরিকার সহযোগিতায় ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছি ও অনতিবিলম্বে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি জানাচ্ছি। শুধু মুসলমানরাই নয়, কোনো মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষ এই নির্বিচারে গণহত্যা, এই ধ্বংসযজ্ঞ মেনে নিতে পারে না। এই বিশ্বকে আমরা শিশুদের বাসযোগ্য দেখতে চাই, আনন্দময় দেখতে চাই। যুদ্ধমুক্ত পৃথিবীর প্রত্যাশা করি।’
জহিরুল ইসলাম জহিরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন জেলা মহিলা পরিষদের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লক্ষ্মী চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাকিদ মুস্তাকিম শিপলু, জেলা উদীচীর সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, জেলা বাসদ সমন্বয়ক আবু নাঈম খান বিপ্লব, জেলা সিপিবি সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, ক্রান্তি খেলাঘর আসরের সভাপতি মামুন ভূঁইয়া, রূপগঞ্জ খেলাঘর আসরের সভাপতি জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানববন্ধন শেষে আসামির বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ
  • পঞ্চগড়ে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন
  • চীনের অর্থায়নে ১০০০ শয্যার হাসপাতালটি পঞ্চগড়ে স্থাপনের দাবি
  • চট্টগ্রামে ২০ সংগঠনকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানমঞ্চে তুলতে প্রশাসনের নিষেধ
  • কার্যালয়ের ভেতর আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা, বাইরে খুনের বিচার চেয়ে মানববন্ধন
  • ‘ফিলিস্তিন জাগে ফিলিস্তিন জাগে’
  • রাষ্ট্রীয় খরচে কোনো অতিথিকে হজে পাঠানো হবে না: ধর্ম উপদেষ্টা
  • আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফে আগুনের প্রতিবাদে চারুকলার সামনে মানববন্ধন
  • বাবা হত্যার বিচার দাবিতে রাস্তায় দুই শিশু