ঠাকুরগাঁওয়ে কালবৈশাখীর তাণ্ডব, ফসল ক্ষতিগ্রস্ত
Published: 13th, April 2025 GMT
ঠাকুরগাঁওয়ে কালবৈশাখীর ঝড়ের তাণ্ডব ও শিলাবৃষ্টিতে বাড়িঘর এবং ৬৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাত ৩টার দিকে কালবৈশাখীর ঝড় জেলায় আঘাত হানে। ঘণ্টাব্যাপী প্রবল বাতাস ও শিলাবৃষ্টিতে বাড়িঘরে তেমন ক্ষতি না হলেও ফসলের ক্ষেত লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।
বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠ সরেজমিন দেখা যায়, এই ঝড়ে বিশেষ করে ভুট্টা, পেঁয়াজ বীজ, আম, লিচু, পেঁপে, কলা, মরিচ, বিভিন্ন ধরনের সবজি ক্ষতি হয়েছে।
আরো পড়ুন:
‘সয়াল্যান্ডে’ ৪০০ কোটি টাকার ফলনের আশা
হবিগঞ্জের পাহাড়ে সজনের ফলনে চাষিরা লাভবান
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমতে, ঠাকুরগাঁওয়ের পাঁচটি উপজেলা মিলে ৪৬ হাজার হেক্টর ভুট্টা, ৫৪৭ হেক্টর পেঁয়াজ বীজ, সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে আম ও লিচু চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সদর উপজেলা আকচা মুন্সীপাড়া গ্রামের কৃষক মো.
ভুট্টা ও মরিচ ক্ষেত ভেঙে মাটিতে লুটিয়ে গেছে। আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়েছে। এমন অবস্থা কৃষকরা উদ্বিগ্ন ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কৃষক মো. রবিউল ইসলাম জানান, তার পেঁপের বাগানে ৪ হাজার গাছ ছিল। প্রতিটি গাছে বাঁশের খুঁটি দেওয়া থাকা সত্ত্বেও ঝড়ে বাগানের সাড়ে তিন হাজার গাছ ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। তার আশা ছিল, বাগান থেকে আরও ১০-১২ লাখ টাকা আয় করার কিন্তু সেই আশা ও স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।
বেলাল হোসেন বলেন, রাত ৩টা দিকে প্রচণ্ড ঝড় ও বাতাসসহ শিলাবৃষ্টিতে অনেকের বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে। তার থেকেও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আম, লিচু থেকে শুরু করে ভুট্টার অনেক ক্ষতি হয়েছে।
মশিউর রহমান নামে আম ও লিচু চাষি বলেন, রাতে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে আম ও লিচু ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অকল্পনীয়।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মাজেদুল ইসলাম জানান, বৃষ্টি ফসলের জন্য উপকারী হলেও ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে আর ৫-৬ দিন গেলে পেঁয়াজ বীজ কৃষকরা মাঠ থেকে তুলতে পারতেন বা বীজগুলো পরিপক্ক হতো। কিন্তু এমন সময় ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ গাছ ভেঙে পড়ে গেছে। এমন অবস্থা হয়েছে পেঁপে ও ভুট্টার ক্ষেত্রের। যদিও ভেঙে পড়া ভুট্টার গাছগুলো কৃষকেরা কর্তন করে গোখাদ্য হিসেবে বিক্রি করতে পারবে।
তিনি আরো জানান, ঝড়ে বিভিন্ন ফসলের ৬৫ হেক্টর জমি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোন ফসল কত পরিমাণে ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের ক্ষতিটা এবং কীভাবে কমানো যায়, সেই বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হবে।
ঢাকা/হিমেল/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল ঝড় ব ভ ন ন ফসল আম ও ল চ ফসল র
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের মঞ্চ ভাঙচুর, আটক ৬
চট্টগ্রাম নগরের ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা মঞ্চ, প্যান্ডেল, চেয়ার, ব্যানারসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বেশ কয়েকজন যুবক এসব সরঞ্জাম ভেঙে তছনছ করেন বলে জানান আয়োজকরা।
এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকালের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ভাঙচুরের ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিসি হিলে নববর্ষ উদযাপন পরিষদের অন্যতম সংগঠক প্রণব চৌধুরী সমকালকে বলেন, পহেলা বৈশাখের বর্ণাঢ্য আয়োজনকে ঘিরে এখানে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। সেইসঙ্গে পুরো ডিসি হিলে প্যান্ডেল তৈরিসহ নানা সাজসজ্জা করা হয়েছিল। তবে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কয়েকজন যুবক প্রবেশ করে মঞ্চ থেকে শুরু করে সবকিছু ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। বৈশাখের আগের দিন এমন ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একটি বড় ধাক্কা। এমন ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। এর প্রতিবাদে ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
বর্ষবরণের প্রস্তুতির মধ্যেই আজ রোববার ডিসি হিলে ‘সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ’ পহেলা বৈশাখের নানা আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে।
পরিষদের সমন্বয়কারী সুচরিত দাশ খোকন বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে ৪০-৫০ যুবক এসে ডিসি হিলে আমাদের অনুষ্ঠান মঞ্চে হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় প্যান্ডেলসহ মঞ্চের সামনে থাকা বেশকিছু চেয়ার। সোমবার সকাল থেকে এখানে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরুর কথা ছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মঞ্চ তৈরি থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। এখন দুর্বৃত্তদের হামলায় সবকিছুই তছনছ হয়ে গেছে। তাই এখানে আর পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আবদুল করিম বলেন, ‘মঞ্চ ভাঙচুরের বিষয়টি আমরা শুনেছি। ঘটনাস্থলে আমাদের একটি টিম আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’