সমর্থকদের গালিগালাজের জেরে বাড়ি ছাড়ছে ফোডেনের পরিবার
Published: 13th, April 2025 GMT
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সমর্থকদের অশালীন গালিগালাজের ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় বিলাসবহুল বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইংল্যান্ডের ফুটবল তারকা ফিল ফোডেনের মা, ক্লেয়ার রোল্যান্ডস। ম্যানচেস্টার ডার্বিতে তার উদ্দেশে দেওয়া কুরুচিপূর্ণ স্লোগানের পর তিনি ও তার পরিবার আর সেই বাড়িতে থাকতে চান না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
চেশায়ারের অভিজাত এলাকা প্রেস্টবুরিতে অবস্থিত বাড়িটি ফোডেন কিনেছিলেন ২০২১ সালে, প্রায় ২.
সম্প্রতি ওল্ড ট্রাফোর্ডে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে গোলশূন্য ড্র ম্যাচে ফোডেনকে লক্ষ্য করে কুরুচিকর স্লোগান দেয় ইউনাইটেড সমর্থকরা। ইনজুরির কারণে মাঠ ছাড়ার সময় তার মাকে লক্ষ্য করে অশালীন স্লোগান দেন তারা। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান ফোডেনের দাদি মেরি কিটস এবং সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা। গার্দিওলা বলেন, ‘এটি বাজে আচরণ। একজন মায়ের বিরুদ্ধে এমন ভাষা ব্যবহার করা লজ্জাজনক।’
তবে শুধু গ্যালারির কটূক্তি নয়, বিভিন্ন সময় প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিরোধেও জড়িয়েছেন ফোডেনের মা। ২০২২ সালে বাড়িতে আতশবাজি উৎসব আয়োজন করায় পুলিশে অভিযোগ আসে। কোনো আগাম ঘোষণা ছাড়াই আয়োজন করা ওই আতশবাজির শব্দে আশপাশের শিশু ও পোষা প্রাণীরা ভীত হয়ে পড়ে।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এক নাইটক্লাব থেকে ফোডেনের মা’কে হাতকড়া পরিয়ে বের করে দেয় পুলিশ। ওয়েলসের বেন্টলিজ নাইটক্লাবে এক ব্যক্তির মাথা থেকে টুপি ফেলে দিয়ে আবার তা পরানোর চেষ্টা করেন তিনি। পরে আদালতে তিনি বলেন, ‘আমি বেশি খাই না, কিন্তু খেলে পশুর মতো হয়ে যাই। এটা আমার পার্টি ট্রিক।’
২০২২ সালে একটি বক্সিং ম্যাচে ক্লেয়ারের ওপর হামলার ঘটনাও আলোচনায় আসে। ম্যানচেস্টারের এও অ্যারিনায় সিটির এক ম্যাচ শেষে ফোডেনকে হেনস্তার পর পেছনের এলাকায় তার মাকে ঘুষি মারে এক দুর্বৃত্ত। এইসব বিতর্ক, প্রতিবেশীদের বিরক্তি এবং সর্বশেষ গালিগালাজের ঘটনার পর নতুন করে চাপের মুখে পড়েছে ফোডেন পরিবার। সব মিলিয়ে প্রেস্টবুরির সেই বাড়ি এখন তাদের কাছে যেন ‘ঝামেলার কেন্দ্র’ হয়ে উঠেছে। ফলে বাড়িটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্লেয়ার রোল্যান্ডস।
ফিল ফোডেনও বর্তমানে সময় পার করছেন মাঠের বাইরে। ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে সিটির সর্বশেষ ম্যাচে স্কোয়াডেই ছিলেন না তিনি। আগামী সপ্তাহে গুডিসন পার্কে এভারটনের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাকে দলে পেতে চাইবে সিটিজেনরা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নাফিজ সরাফতসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
পদ্মা ব্যাংক থেকে ৫ কোটি টাকার ‘টাইম লোন’ নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তার অপব্যবহার ও অর্থ আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফতসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ রাকিব উদ্দিন মিনহাজ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, ঋণ নিয়ে ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মামলার অপর তিন আসামি হলেন, ঋণ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেম, পরিচালক ফারহানা মোনেম এবং পদ্মা ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও গুলশান করপোরেট শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক সাব্বির মোহাম্মদ সায়েম।
এজাহারে বলা হয়, ২০২২ সালে পদ্মা ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে আবদুল মোনেম লিমিটেডের নামে ছয় মাস মেয়াদি ৫ কোটি টাকার একটি ‘টাইম লোন’ অনুমোদন করা হয়। কিন্তু আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঋণের শর্ত ভঙ্গ করে এ অর্থ ব্যবসার মূলধন হিসেবে ব্যবহার না করে অন্য ঋণের দায় মেটাতে ব্যয় করেন। এর মাধ্যমে তাঁরা প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা করেছেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, আবদুল মোনেম লিমিটেড ২০২২ সালের ২৯ মার্চ পদ্মা ব্যাংকের গুলশান করপোরেট শাখায় একটি শর্ট নোটিশ ডিপোজিট (SND) হিসাব খুলে ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। অথচ এর আগেই ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ২৫ কোটি টাকার কম্পোজিট ঋণের জন্য আবেদন করেন। ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৮৪তম সভায় এ ঋণ অনুমোদন পায়। এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে ২০ কোটি টাকার এলসি ও ৫ কোটি টাকার টাইম লোনসহ মোট ২৫ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করা হয়।
এরপর ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর আরও একবার ৫ কোটি টাকার ছয় মাস মেয়াদি টাইম লোনের জন্য আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ৫৫তম পরিচালনা পর্ষদ সভায় (২৭ ডিসেম্বর) তা অনুমোদিত হয় এবং ২৮ ডিসেম্বর তা বিতরণ করা হয়। ঋণের শর্ত অনুযায়ী, অর্থটি গুঁড়াদুধ, কাঁচামাল, প্যাকেজিং উপকরণ ও যন্ত্রাংশ কেনার মাধ্যমে আইসক্রিম ইউনিট চালু রাখতে ব্যবহারের কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, এই অর্থ অন্য খাতে স্থানান্তর করে অন্য ঋণের দায় পরিশোধে ব্যবহার করা হয়। ঋণের নির্ধারিত পরিশোধের সময়সীমা ছিল ২০২৪ সালের জুন, তবে গ্রাহক তা সময়মতো পরিশোধ করেননি এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি।
দুদকের অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পর ২০২৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনটি সন্দেহজনক নগদ লেনদেনের মাধ্যমে ঋণের অর্থ পরিশোধ করে ঋণটি সমন্বয় করা হয়। এজাহারে আরও বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু না হলে এই অর্থ আত্মসাতের প্রকৃত সম্ভাবনা ছিল।