মডেল মেঘনা আলমের আটকাদেশ কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
Published: 13th, April 2025 GMT
মডেল মেঘনা আলমকে পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার, কারণ উল্লেখ না করে গ্রেপ্তার, ২৪ ঘন্টার বেশি গোয়েন্দা কার্যালয়ে হেফজতে রাখা প্রশ্নে রুলে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মেঘনা আলমকে দেওয়া আটাকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন। মেঘনা আলমকে আটকের প্রক্রিয়া ও আটকাদেশের বৈধতা নিয়ে তার বাবা বদরুল আলম রিট আবেদন দায়ের করেন।
গত ৯ এপ্রিল রাতে মডেল মেঘনা আলমকে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী, পর দিন ১০ এপ্রিল রাতে আদালত তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেন। তিনি কারাগারে আছেন।
সুনির্দিষ্ট কারণ না জানিয়ে মেঘনা আলমের আটকের ঘটনা নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। অপরাধে জড়ালে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার না করে তাঁকে কেন বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিতর্কিত ‘প্রিভেন্টিভ ডিটেনশন’ বা প্রতিরোধমূলক আটক করা হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এমন প্রেক্ষাপটে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) পদ থেকে রেজাউল করিম মল্লিককে গতকাল শনিবার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে মেঘনা আলমকে যে প্রক্রিয়ায় আটক করা হয়েছে, তা সঠিক হয়নি বলে আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এর আগে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার ও আটকাদেশের বৈধতা নিয়ে মেঘনার বাবা আজ রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কাজী জাহেদ ইকবাল ও প্রিয়া আহসান চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও জামিলা মমতাজ।
রুলে পরোয়ানা ছাড়া বাসা থেকে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার, কারণ না জানিয়ে গ্রেপ্তার, ডিবি কার্যালয়ে ২৪ ঘণ্টার বেশি হেফাজতে রাখা ও আইনজীবীর সুযোগ না দেওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিশেষ ক্ষমতা আইনে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে দেওয়া আটকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান,ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ ষ ক ষমত আটক দ শ ন আইন
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ’ ইউনিটে ভর্তিতে নতুন করে এমসিকিউ পরীক্ষা হবে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে (গ ইউনিট) চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষে ভর্তিতে নতুন করে এমসিকিউ (বহু নির্বাচনী প্রশ্ন) পরীক্ষা হবে।
নতুন করে এমসিকিউ পরীক্ষা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ সিদ্ধান্ত দেন।
নতুন করে এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে রিট না চালানোর কথা জানিয়ে রিট আবেদনকারী তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে (ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট, যা ‘গ’ ইউনিট নামে পরিচিত) চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০২৪-২৫) প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়। ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ভর্তিতে এমসিকিউ পরীক্ষা হয় ৬০ নম্বরের আর লিখিত পরীক্ষা হয় ৪০ নম্বরে।
তবে এমসিকিউ প্রশ্নপত্রে একাধিক ভুলের অভিযোগ তুলে সুষ্ঠু ফলাফল প্রকাশে পুনরায় পরীক্ষার নেওয়ার জন্য গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবরে আবেদন দেন ভর্তি–ইচ্ছুক এক শিক্ষার্থী। এতে ফল না পেয়ে তিনি রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৯ মার্চ হাইকোর্ট কয়েকটি বিষয়ে রুল দেন। রুলে এমসিকিউ পরীক্ষা পুনরায় নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুলে জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য স্থগিত করেন।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ ভর্তি কমিটির এক বিশেষ সভা গত ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পুনরায় ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে শুধু এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে আদালতে আবেদন করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর পুনরায় পরীক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিতে অনুমতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে আদালতে আবেদন করা হয়।
আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। রিট আবেদনকারী ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থী নিজে শুনানিতে অংশ নেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জামিলা মমতাজ।
পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আদালতে আবেদন করা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে যেন ৬০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা নতুন করে নিতে অনুমতি দেওয়া হয়। আজ বিষয়টি নিয়ে শুনানি হয়। তিনি বলেন, ‘নতুন করে পরীক্ষার দাবি যদি পূরণ হয়ে যায়, তাহলে মামলা পরিচলার কোনো প্রয়োজন নেই, শুনানিতে বলেছি। ৬০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে।’ শিশির মনির বলেন, রিট আবেদনকারী শিক্ষার্থী আদালতে কথা বলে তাঁর রিট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আদালত ঢাবি কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন, নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য। এক মাসের মধ্যে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন শিশির মনির।