বিনিয়োগ সহায়ক বাজেট চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা
Published: 13th, April 2025 GMT
অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের এবারের জাতীয় বাজেটটি যাতে ব্যবসা এবং বিনিয়োগের জন্য সহায়ক হয়। করকাঠামোযাতে সেভাবেই সাজানো হয়। সাধারণত, যারা নিয়মিত কর দেন তাদের ওপরই বারবার করের বোঝা চাপানো হয়। অন্তত আগামী বাজেটে যেন এ প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসে সরকার। যৌক্তিক করহার নির্ধারণ এবং হয়রানিমুক্ত করসেবা নিশ্চিত করা গেলে ব্যবসা–বিনিয়োগের সঙ্গে রাজস্বও বাড়বে।
আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেট সামনে রেখে আজ রোববার এক আলোচনা সভায় অর্ন্তবর্তী সরকারের কাছে এসব দাবি তুলে ধরেছেনে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। ছোট–বড় প্রায় সব খাতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে যৌথভাবে এ আয়োজন করেছে ঢাকা চেম্বার, সমকাল ও চ্যানেল– ২৪ । ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদ সভা পরিচালনা করেন। ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু ও মীর নাছির হোসেন প্রমুখ। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সমকাল সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিনিয়োগ মডেলেই এগুতে হবে সরকারকে। বিনিয়োগ ও বাণিজ্য যদি না বাড়ে তাহলে রাজস্ব আহরণ বাড়বেনা। জিডিপির অনুপাতে করের হিস্যার যে ব্যবধান সেটা কোন দিন কমবেনা। বর্তমান বাস্তবতার করুণ উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, বর্তমানে জিডিপির মাত্র শুন্য দশমিক ৪ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি ঋণ (এফডিআই)। এ বাস্তবতায় কর কাঠামো বিনিয়োগ সহায়ক হতে হবে।
আলোচনায় আবদুল আউয়াল মিন্টুও আগামী বাজেট ব্যবসা সহায়ক হওয়ার পক্ষে কথা বলেন। তিনি বলেন, এমন বাজেট চাই যাতে ব্যবসা–বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বাড়ে, উৎপাদন বাড়ে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের পণ্যকে প্রতিযোগিতামূলক করা যায়। রপ্তানি বৃদ্ধির সামর্থ্যও বৃদ্দি পায়। এরকম একটি সহায়ক পরিবেশের জন আগামী বাজেটে নীতি সহায়তা চান তারা।
মীর নাছির হোসেন বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে সরকার সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিকে কঠোর থেকে আরও কঠোর করছে। একারণে ব্যবসা ব্যয় বাড়ছে। গ্যাস–বিদুতের সরবরাহ , জ্বালানি নিরাপত্তা ও উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। কৃচ্ছতা কেবল বেসরকারি খাতের জন্য নিলেই হবেনা। সরকারের মধ্যেও কৃচ্ছতা প্রয়োজন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুরে কৃষকের জন্য বরাদ্দ সার বিক্রির চেষ্টা
ফরিদপুরে বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বরাদ্দ করা সরকারি সার বিক্রির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এ সময় স্থানীয়রা হাতেনাতে আটক করলে চেয়াম্যানের এক সহযোগী ও ভ্যানচালক সার ফেলে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও কৃষি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল থেকে ৩ বস্তা ইউরিয়া সার ও ৩ বস্তা ডিএপি সার জব্দ করে নিয়ে যায়।
সোমবার দুপুর ৩টার দিকে ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের কানাইপুর বাজারের খুচরা সার বিক্রেতা মনোরমা এন্টারপ্রাইজের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ওই দোকানে সারগুলো বিক্রির চেষ্টা করা হয়েছিল।
স্থানীয় বাবু সরদার নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ইউনুস নামে এক ব্যক্তি ভ্যানে করে সারগুলো নিয়ে আসেন। তিনি মনোরমা এন্টারপ্রাইজের সন্টুর দোকানে বিক্রির চেষ্টা করেন। এ সময় দোকানদার সার কিনতে অস্বীকার করলে আমি গিয়ে দেখি সরকারি সার। এ সময় ইউনুস দৌড়ে পালিয়ে যান। আমি পুলিশকে খবর দিই। পরে পুলিশ ও কৃষি কর্মকর্তারা সার নিয়ে যান।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি জেলা পাট অধিদপ্তর কর্তৃক প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে কানাইপুর ইউনিয়নে ২৪০ জন কৃষকের মাঝে বিতরণের তালিকা করা হয়। সম্প্রতি বরাদ্দকৃত সার ইউনিয়ন পরিষদে পাঠানো হয়। তবে এসব সার বিতরণ করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে কিছুই জানেন না সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা লতিফা আক্তার।
এসব সার বিতরণের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জেলা পাট অধিদপ্তরের উপসহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম দাবি করেন, ৬ এপ্রিল কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ২৪০ জনের মধ্যে ২০০ জনের মাঝে সার বিতরণ করা হয়েছে। প্রত্যেক কৃষকের মাঝে ৬ কেজি ইউরিয়া, ৩ টিএসপি, ৩ কেজি ডিএপি সার বিতরণ করা হয়। এছাড়া বাকি ৪০ জন কৃষক না আসায় সারগুলো পরিষদে রাখা হয়। পরবর্তীতে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মো. আলতাভ হুসাইন বলেন, আজ বন্ধের দিন থাকায় বলা যাচ্ছে না, আমার পরিষদের সার কিনা। কারণ, চাবি রয়েছে সচিবের কাছে। পরিষদ খুললে গোডাউন দেখে বলতে পারব।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে কৃষি কর্মকর্তা ও প্রশাসনকে পাঠানো হয়েছে। তারা সারগুলো জব্দ করে নিয়ে এসেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।