প্রায় এক বছর স্থগিত থাকার পর বিতর্কিত ‘রিকল’ সুবিধা আবার চালু করতে যাচ্ছে মাইক্রোসফট। উইন্ডোজ ১১ অপারেটিং সিস্টেমনির্ভর এই সুবিধা ব্যবহারকারীদের কম্পিউটার ব্যবহারের স্ক্রিনশট স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষণ করতে পারে। মাইক্রোসফটের দাবি, নতুন এ সুবিধা চালু হলে ব্যবহারকারীরা সহজেই আগে চালু করা বিভিন্ন অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের তথ্য জানতে পারবেন। শুধু তা–ই নয়, পুরোনো ছবি বা নথিও খুঁজে পাওয়া যাবে।

২০২৩ সালে প্রথম রিকল সুবিধা আনার ঘোষণা দিয়েছিল মাইক্রোসফট। সে সময় জানানো হয়, রিকল সুবিধা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কম্পিউটার বা ল্যাপটপের পর্দার স্ক্রিনশট নিতে পারে। তবে রিকল সুবিধা চালু হলে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বিঘ্নিত হতে পারে, এমন আশঙ্কা করেন প্রযুক্তিপ্রেমীরা। সমালোচনার মুখে পরীক্ষামূলকভাবে চালুর এক মাসের মধ্যেই সুবিধাটির আনুষ্ঠানিক উন্মোচন কার্যক্রম স্থগিত করে মাইক্রোসফট জানায়, উইন্ডোজ ইনসাইডার কমিউনিটির সহায়তায় আমরা এই সুবিধার গুণগত মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছি। এরপর নির্দিষ্ট কিছু ‘কোপাইলট প্লাস’ পিসির জন্য ‘উইন্ডোজ ইনসাইডার ডেভ চ্যানেল’–এ সীমিত পরিসরে পরীক্ষামূলকভাবে সুবিধাটির প্রিভিউ সংস্করণ চালু করা হয়। এবার ধাপে ধাপে ইনসাইডার ব্যবহারকারীদের জন্য রিকল সুবিধা উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাইক্রোসফট।

আরও পড়ুনমাইক্রোসফট কেন রিকল সুবিধা চালুর তারিখ বারবার পেছাচ্ছে০৪ নভেম্বর ২০২৪

রিকল সুবিধা চালুর বিষয়ে মাইক্রোসফট জানিয়েছে, ‘প্রতিদিন আমরা নানা ধরনের অ্যাপ, ওয়েবসাইট ও নথি নিয়ে কাজ করি। ফলে অনেক সময় মনে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে, কোন তথ্য কোথায় দেখা হয়েছিল। রিকল সেই অভিজ্ঞতাকে সহজ করে তুলবে। এটি একটি নতুন ধরনের অনুসন্ধানপদ্ধতি, যা কোপাইলট প্লাস পিসির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে শুধু বিষয়বস্তুর বিবরণ দিয়েই আগের যেকোনো অ্যাপ, ওয়েবসাইট, ছবি বা ডকুমেন্ট পুনরায় খুঁজে পাওয়ার সুযোগ করে দেবে। রিকল সুবিধা ব্যবহারের আগে ব্যবহারকারীকে নিজে থেকে ‘স্ন্যাপশট’ সংরক্ষণের জন্য অনুমতি দিতে হবে। সেই সঙ্গে ‘উইন্ডোজ হ্যালো’ সুবিধা সক্রিয় করতে হবে। এর ফলে শুধু ব্যবহারকারীরাই নিজেদের সংরক্ষিত তথ্যের প্রবেশাধিকার পাবেন।’

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, উইন্ডোজ ১১–এর বিল্ড ২৬১০০.

৩৯০২ সংস্করণ থেকে শুরু হবে রিকল সুবিধার উন্মোচন কার্যক্রম। ধাপে ধাপে এটি ইনসাইডার ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছে যাবে। এরপর তা কোপাইলট প্লাস পিসির অন্যান্য ব্যবহারকারীর জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

সূত্র: বিজিআর

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র কল স ব ধ উইন ড জ ব যবহ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে: টিউলিপ

বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি ও ও সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আপনারা বুঝবেন যে, এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারকে কোনো প্রসঙ্গ বা মন্তব্যের মাধ্যমে আমি বিশেষ গুরুত্ব দিতে পারি না। এটা পুরোপুরি আমাকে হয়রানি করার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। এমন কোনো প্রমাণ নেই যে আমি ভুল কিছু করেছি।’ খবর-বিবিসি

বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে সোমবার লন্ডনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষগুলোর কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। পুরোটা সময় তারা মিডিয়া ট্রায়াল চালিয়েছে। আমার আইনজীবীরা উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছিলেন। তবে তারা কখনও এর জবাব দেয়নি।’

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা তিনটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা পৃথক তিন মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে রোববার এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব। আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল কিনা, সে-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত। ১০ কাঠা প্লট নেওয়ার অন্য অভিযোগে শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের একজন সহকারী পরিচালক। মামলায় শেখ হাসিনা, টিউলিপসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। 

এর আগে জানুয়ারির মাঝামাঝিতে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ছিলেন। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে।

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপের খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কের বিষয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠায় টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

সম্প্রতি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে। এরপর নিজের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগকে তদন্তের আহ্বান জানান টিউলিপ। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস।

টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেখানে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস তার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি। কেয়ার স্টারমার অফিসিয়াল চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিককে বলেন, ‘আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার সময় এটা পরিষ্কার করতে চাই যে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস আমাকে আশ্বস্ত করেছেন- তিনি আপনার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি এবং আর্থিক অসঙ্গতির কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ