ঝালকাঠিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে যুবদল নেতাকে মারধরের অভিযোগ
Published: 13th, April 2025 GMT
ঝালকাঠির রাজাপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদককে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
আজ রোববার সকালে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন মঠবাড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হালিম গাজী। এ সময় তিনি বলেন, রাজাপুর উপজেলা বিএনপির দলীয় পদ স্থগিত হওয়া সাধারণ সম্পাদক নাসিম আকন ও তাঁর সহযোগীরা তাঁকে মারধর করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হালিম গাজী বলেন, গত শুক্রবার উপজেলার মঠবাড়ি মাহামুদিয়া মাদ্রাসা মাঠে ইউনিয়ন যুবদলের মতবিনিময় সভায় তিনি বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তখন মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে তাঁকে লাঞ্ছিত করে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তাঁকে মাদ্রাসার একটি কক্ষে দীর্ঘক্ষণ আটকে রেখে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেন উপজেলা বিএনপির দলীয় পদ স্থগিত হওয়া সাধারণ সম্পাদক নাসিম আকন ও তাঁর সহযোগীরা। ওই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।
হালিম গাজী আরও বলেন, রফিকুল ইসলাম মারধর ও হুমকির বিষয়ে অবগত ছিলেন। মাদ্রাসার কক্ষে নিয়ে মারধরের ঘটনা তাৎক্ষণিক রফিকুল ইসলামকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি এ ঘটনায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার পরিবর্তে নাসিম আকনের পক্ষে অবস্থান নেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিভাগীয় সাংগঠনিক এবং জেলা বিএনপির নেতাদের কাছে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন হালিম গাজী।
এসব অভিযোগের বিষয়ে নাসিম আকন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এ ধরনের কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এমন অভিযোগ করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন স ম আকন ব এনপ র ম রধর য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
বেলীর অভাবের ঘরে আলো হয়ে এলো ফুটফুটে ছেলে
স্বামী বাকপ্রতিবন্ধী, তাই কাজে নিতে চাননা কেউ। কখনও কাজ মেলে কখনও মেলে না। বেলী আক্তারের সংসারে তাই অভাব। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হয়। এই অভাবের সংসারে নববর্ষের ভোরে তার ঘরে আলো হয়ে এসেছে এক নতুন মুখ। ফুটফুটে ছেলে সন্তান জন্ম দিয়েছেন তিনি। আনন্দের এই সময়ও বেলীর দুশ্চিন্তা! স্বামী সোহেল রানা কাজের সন্ধানে তখন অনেক দূরে, সিলেটে। অন্যদিকে, গত সোমবার মারা গেছেন বেলীর মা।
সোমবার ভোর ৫টায় ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ছেলে সন্তান জন্ম দেন বেলী। হাসপাতালে তখন চিকিৎসক ছিলেন না। আয়াদের চেষ্টায় তার নরমাল ডেলিভারি হয়।
২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সোহেল ও বেলীর বিয়ে হয়। সোহেলের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কিসমত চামেশ্বরী গ্রামে। আর বেলীর বাড়ি একই উপজেলার রাজগাঁও গ্রামে।
রোববার রাত ২ টার দিকে বেলীর প্রসব ব্যথা ওঠে। দ্রুত তাকে ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে নেন স্বজনরা। স্বজনরা জানান, হাসপাতালে তখন চিকিৎসক ছিলেন না। আয়াদের চেষ্টায় তার নরমাল ডেলিভারি হয়। এটি তার প্রথম সন্তান।
‘সোহেল রানা কথা বলতে পারে না। অভাবের কারণে টাকার জন্য দেশের এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়ান তিনি। এমনকি প্রথম সন্তানের বাবা হয়েও স্ত্রী-সন্তানের পাশে থাকার সৌভাগ্য হয়নি তার। কাজের খোঁজে সিলেটে আছেন তিনি। তবে অন্যের মোবাইলে ভিডিও কলে তার ছেলে সন্তানের মুখ দেখে অনেক খুশি হয়েছেন। খুশিতে কান্না করে ফেলেছে সোহেল, বলেন সোহেলের ছোটভাই মিন্টু।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বেলীর মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। গম্ভীর হয়ে রয়েছেন। মুখে হাসি নেই। শারীরের অবস্থাও তেমন ভালো না।
বেলী জানান, এই সময় স্বামী পাশে না থাকায় খারাপ লাগছে। তাছাড়া কয়েকদিন আগে তার মা মারা গেছেন। কষ্ট লাগছে, নাতির মুখ তিনি দেখে যেতে পারলেন না।
বেলী বলেন, 'কিছু খেতে মন চাইলেও টাকার অভাবে খেতে পারিনি। দুই বেলা ভাতই ঠিকমতো জোটে না!'
তবে বাচ্চাকে অভাব বুঝতে দেবেন না বলে জানান তিনি। বেলী বলেন, 'ছেলেকে পড়ালেখা করাব, ডাক্তার বানাবো। আমার অভাবের সংসারে সেই এখন আলো।’
সোহেল রানার বাবা খাদেমুল ইসলাম বলেন, 'জন্মের পর থেকে সোহেল কথা বলতে পারে না। সংসারে অভাব থাকায় ছোট থেকে অন্যের বাড়িতে কাজ করত। এলাকায় কাজ না থাকলে অন্য জেলায় যেত।'
তিনি বলেন, 'বছরের প্রথম দিনে নাতিকে কোলে নিয়ে আনন্দ লাগছে। সোহেল ভিডিও কলে ছেলেকে দেখেছে। বাড়িতে থাকলে অনেক খুশি হতো।'
নাতির জন্য সবার কাছে দোয়া চান সোহেলের মা সালেহা বেগম।
বেলীর দাদী ফাতেমা বেওয়া বলেন, ‘চার ভাই-বোনের মধ্যে বেলী সবার ছোট। আমার নাতনির ছেলে হওয়ায় আমরা খুব খুশি। কয়েকদিন আগে বেলীর মা মারা যাওয়ায় আমি এখন তার বাড়িতে আছি। তাদের দেখাশুনা করছি।’
ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রকিবুল আলম চয়ন জানান, সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বেলী আক্তার ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'বাংলা বছরের প্রথম দিন সন্তানের মা হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। মা-সন্তান সুস্থ্ রয়েছে।'