চারুকলায় আগুন দেওয়া ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ
Published: 13th, April 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রা উদযাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফে আগুন দেওয়া ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তবে এখনও তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেন, “আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফে আগুন দিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় জড়িতকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। দ্রুতই তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।”
আজ রমনার বটমূলে নিরাপত্তা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এসব কথা বলেন।
কমিশনার বলেন, “চারুকলার ঘটনার রহস্য উদঘাটনে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। খুব সন্নিকটে পৌঁছে গেছি। আশা করছি, আগামীকালের মধ্যে একটি সুখবর দিতে পারবো। অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ।”
তিনি বলেন, “বর্ষবরণ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্কসহ পুরো ঢাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পোশাক পরিহিত পুলিশের সঙ্গে সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা ঢাকার প্রধান সড়ক থেকে অলি গলিতে নজরদারি করছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। নগরবাসীকে সহযোগিতা করারও অনুরোধ করছি।” বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কোনো ধরনের হুমকি নেই বলেও তিনি জানান।
শনিবার ভোরে চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রা উদ্যাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফ আগুনে পুড়ে যায়। এর মধ্যে একটি ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ও আরেকটি শান্তির পায়রা। গতকাল দুপুরেই এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
ঢাকা/এমআর/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আজ সকাল ৯টায় শুরু ঢাবির বর্ষবরণ ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হয়েছে বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ কর্মসূচি। ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে বের হবে ঐতিহ্যবাহী ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামীকাল সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ বের করা হবে। সকাল ৮টা থেকে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি চলবে।
এতে বলা হয়, শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র, দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা শুধু নীলক্ষেত ও পলাশী মোড় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। শোভাযাত্রা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য প্রবেশ পথ ও সংলগ্ন সড়ক বন্ধ থাকবে। শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য রক্ষার্থে আশপাশ দিয়ে শোভাযাত্রায় প্রবেশ করা যাবে না। নিরাপত্তার স্বার্থে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের নিজ নিজ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পহেলা বৈশাখ উদযাপন নিয়ে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুদিনের ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা অব্যাহত রেখে অধিকতর অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য লোক-ঐতিহ্য ও ২৪-এর চেতনাকে ধারণ করে আরও বড় পরিসরে এবং বৈচিত্র্যপূর্ণভাবে এ বছর শোভাযাত্রায় সর্বজনীন অংশগ্রহণের আয়োজন করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শোভাযাত্রায় এ বছর ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিরা অংশ নেবেন। এই বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় এ বছর থাকবে সাতটি বড় মোটিফ, সাতটি মাঝারি মোটিফ এবং সাতটি ছোট মোটিফ।
ঢাবির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে চারুকলা অনুষদ কর্তৃক প্রস্তুত করা মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা চলাকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সামনের রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেইট, চারুকলা অনুষদের সামনে ছবির হাটের গেট এবং বাংলা একাডেমির সামনের রমনা কালী মন্দির সংলগ্ন গেট বন্ধ থাকবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ক্যাম্পাসে নববর্ষের সব ধরনের অনুষ্ঠান আগামীকাল বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে। ৫টার পর কোনোভাবেই প্রবেশ করা যাবে না, শুধু বের হওয়া যাবে। নববর্ষ উপলক্ষ্যে আজ রোববার সন্ধ্যা ৭টার পর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না।
নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের যানবাহন চালানো যাবে না এবং মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরত কোনো ব্যক্তি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের জন্য শুধুমাত্র নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন গেট ও পলাশী মোড় সংলগ্ন গেট ব্যবহার করতে পারবেন।
ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেল্প ডেস্ক, কন্ট্রোল রুম এবং অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প থাকবে। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠ সংলগ্ন এলাকা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকা, দোয়েল চত্বরের আশে-পাশের এলাকা ও কার্জন হল এলাকায় মোবাইল পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হবে।
নববর্ষ উপলক্ষ্যে নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।