প্রতিবেশ বলতে বোঝায়, শহরে বা গ্রামে নিজের আশপাশে গড়ে ওঠা ঘরবাড়ি। আর সেই বাড়িঘরের বাসিন্দারা হলেন পরস্পরের প্রতিবেশী।
ইসলাম প্রতিবেশীর জন্য অধিকার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষ যেখানেই বসবাস কিংবা অবস্থান করুক, প্রত্যেকের প্রতিবেশী আছে। থাকেই। মানব সমাজে একজন প্রতিবেশী অন্য প্রতিবেশীর সংলগ্ন হয়ে থাকেন। সকাল-সন্ধ্যা কর্মস্থলে যাওয়ার সময় এবং ফেরার সময় যেমন তাদের সাক্ষাৎ হয়, তেমনি নামাজের সময় মহল্লার মসজিদে বা অন্যান্য ক্ষেত্রেও তাদের সঙ্গে দেখা হয়। প্রয়োজনের মুহূর্তে তাৎক্ষণিক সহায়তার জন্য, আপদে-বিপদ মোকাবিলার জন্য প্রতিবেশী থাকেন সবচেয়ে কাছের মানুষ হিসেবে।
এ-কারণে ইসলাম প্রতিবেশীর জন্য সুনির্ধারিত অধিকার বাতলে দিয়েছে। রাসুল (সা.
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে উত্তম বন্ধু সে, যে তার বন্ধুর কাছে উত্তম। আর আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ভালো প্রতিবেশী সে, যে তার প্রতিবেশীর কাছে ভালো। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১,৯৪৪)
বিভিন্ন হাদিসের বর্ণনা থেকে প্রতিবেশীর সঙ্গে আচরণ সম্পর্কিত ধারণা পাওয়া যায় যে, প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে, তাদের কষ্ট দেওয়া যাবে না এবং তাদের দেওয়া কষ্ট সহ্য করে নিলে আল্লাহ তার বিনিময়ে সওয়াব দান করবেন।
আরও পড়ুনমুসা (আ.)–এর কাছে মেয়ে বিয়ে দিলেন যে নবী১১ ডিসেম্বর ২০২৪উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নোবিপ্রবির উপাসনালয় ভাঙচুর
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় উপাসনালয়ের অভ্যন্তরে গর্ভগৃহের গ্লাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় উপাসনালয়ে পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ, প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান, কেন্দ্রীয় উপাসনালয়ের কমিটির সভাপতি অধ্যাপক দিব্যদুতি সরকার প্রমুখ।
আরো পড়ুন:
সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন নোবিপ্রবি উপাচার্য
নতুন চুক্তি করতে তুরস্ক সফরে নোবিপ্রবি উপাচার্য
কেন্দ্রীয় উপাসনালয়ের কমিটির সভাপতি অধ্যাপক দিব্যদুতি সরকার বলেন, “এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। অনতিবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট দাবি জানাই। এটি একমাত্র ত্রিধর্মী উপাসনালয়, যেখানে হিন্দু,বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী,কর্মকর্তা, কর্মচারী নিজ নিজ ধর্মচর্চা করে থাকেন।”
তিনি বলেন, “উপাসনালয়ের নিরাপত্তায় অনতিবিলম্বে নিরাপত্তা বেষ্টনী স্থাপন করা হোক। মন্দিরে সিসিটিভি ও সার্বক্ষণিক আনসার সদস্য নিয়োজিত করার দাবি জানাই। এছাড়াও মন্দিরে সার্বক্ষণিক পুরোহিত ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োজিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করে।”
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ বলেন, “এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিদ্রুত মামলা করা হবে। এ ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রশাসন দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবে।”
তিনি বলেন, “ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ধর্মের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবস্থান করেন। প্রত্যেকে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে।প্রশাসন এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। কেন্দ্রীয় উপাসনালয়ে সিসিটিভি লাগানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উপাসনালয়ের নিরাপত্তা সার্বক্ষণিক আনসার নিয়োজিত করা হয়েছে। উপাসনালয়ের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দ্রতসময়ের মধ্যে মেরামতে ব্যবস্থা নিবে প্রশাসন। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করবে।”
উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক বলেন, “বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। নোবিপ্রবিতে কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতার স্থান দেওয়া হবে না। এ ঘটনায় আমরা আইনগত ও প্রশাসনিক সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতোমধ্যে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।”
তিনি বলেন, “স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরামর্শ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাজ করছে। ভবিষ্যতে যদি কেউ এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে ক্যাম্পাস বা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তাদের নোবিপ্রবিতে স্থান হবে না, বাংলাদেশেও স্থান হবে না।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে মন্দির পরিষ্কার করতে গিয়ে গর্ভগৃহের তালা খুলে মেঝেতে ভাঙা কাঁচের টুকরো দেখতে পান শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আনসার ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী