স্মার্টফোন ও কম্পিউটারকে নতুন শুল্ক থেকে অব্যাহতি দিলেন ট্রাম্প
Published: 13th, April 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং আরো কিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইসকে ‘পারস্পরিক’ শুল্ক থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। এর মধ্য চীন থেকে আমদানি করা এসব পণ্যেও নতুন শুল্ক কার্যকর হবে না। চীন থেকে পণ্য আমদানিতে সম্প্রতি ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বেশিরভাগ দেশের ওপর ট্রাম্প যে ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, সেই শুল্ক এবং চীনের ওপর আরোপিত উচ্চ হারের ‘পারস্পরিক’ শুল্কের আওতার বাইরে থাকবে এসব পণ্য।
আরো পড়ুন:
পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের ইতিবাচক আলোচনা
পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের দূতের ৪ ঘণ্টা বৈঠক
এই পদক্ষেপটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করছিল যে, পণ্যের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যেতে পারে। কারণ অনেক ডিভাইসই চীনে তৈরি হয়।
চীনের ওপর ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্কে এটাই প্রথম বড় ধরনের ছাড়। একজন বাণিজ্য বিশ্লেষক একে 'পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া পরিস্থিতি' বলে উল্লেখ করেছেন।
শনিবার রাতে মিয়ামি সফরের সময় ট্রাম্প বলেন, আগামী সপ্তাহের শুরুতে তিনি ছাড়ের বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানাবেন।
এই ছাড়ের মধ্যে সেমিকন্ডাক্টর, সোলার সেল, মেমোরি কার্ডসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং উপাদানও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের প্রযুক্তি গবেষণার বৈশ্বিক প্রধান ড্যান আইভস এক্স পোস্টে বলেছেন, “প্রযুক্তি বিনিয়োগকারীদের জন্য শুল্ক ছাড় হচ্ছে স্বপ্নের মতো। চীনা শুল্কের ক্ষেত্রে স্মার্টফোন, চিপ বাদ দেওয়া একটি গেইম-চেঞ্জার পরিস্থিতি।”
অ্যাপল, এনভিডিয়া, মাইক্রোসফটের মতো বড় প্রযুক্তি কোম্পানি এবং বিশাল প্রযুক্তি খাত এই সপ্তাহান্তে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, চীন থেকে কারখানা যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে নেওয়ার জন্য কোম্পানিগুলোকে আরো সময় দিতে এই ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর নির্ভর করে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি যেমন: সেমিকন্ডাক্টর, চিপ, স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ উৎপাদন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের নির্দেশে এসব কোম্পানি এখন দ্রুত তাদের উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।”
যুক্তরাষ্ট্র আইফোনের অন্যতম প্রধান বাজার। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর অ্যাপলের মোট স্মার্টফোন বিক্রির অর্ধেকের বেশি বিক্রি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য অ্যাপলের যেসব আইফোন তৈরি করা হয়, সেগুলোর প্রায় ৮০ শতাংশ প্রস্তুত করা হয় চীনে। বাকি ২০ শতাংশ তৈরি করা হয় ভারতে।
স্যামসাং-এর মতো অ্যাপলও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের উপর নির্ভরতা কমাতে নিজেদের সরবরাহে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছে। এদিকে চীনের পর ভারত ও ভিয়েতনাম ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ম্যানুফ্যাকচারিং কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে।
শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর অ্যাপল ভারতে তৈরি ডিভাইসের উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র অ য পল র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
হুমকি না থাকলেও বর্ষবরণে সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
উৎসবমুখর পরিবেশে সারা দেশে পালিত হচ্ছে বাংলা নববর্ষ। এ উৎসবকে ঘিরে কোনো ধরনের হুমকি না থাকলেও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী রাইজিংবিডিকে এ তথ্য জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা বটমূলসহ পুরো ঢাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকার প্রধান সড়ক থেকে অলি গলিতেও গোয়েন্দা নজরদারি করছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।”
এদিকে, প্রতিবারের মতো এবারও নববর্ষে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে সারা দেশে র্যাবের সব সদস্য নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় কাজ করছেন।
সকালে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “র্যাব সদর দপ্তরে কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হচ্ছে।”
তিনি জানান, র্যাব সারা দেশে ২২৪টি পিকআপ টহল, ১২২টি মোটরসাইকেল টহলসহ সর্বমোট ৩৪৬টি টহল ও সাদা পোশাকে ৪১৩ জন সহ সর্বমোট ২৪৪৯ জন র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোন উগ্রবাদী গোষ্ঠী, অন্যান্য নিষিদ্ধ সংগঠন এবং রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী কুচক্রী মহল যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে সে লক্ষ্যে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে কোনো ধরণের নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবুও আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার জগতে মনিটরিং বৃদ্ধির মাধ্যমে নাশকতাকারীদের যেকোনো ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে প্রস্তুত রয়েছে র্যাব।”
ভার্চুয়াল জগতে নববর্ষকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের গুজব, উস্কানিমূলক তথ্য, মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য র্যাব সাইবার মনিটরিং টিম নজরদারি অব্যাহত রেখেছে বলেও তিনি জানান।
ঢাকা/এমআর/ইভা