Prothomalo:
2025-04-14@03:42:31 GMT

মেক্সিকান বাটারকাপ ট্রি

Published: 13th, April 2025 GMT

সূচিশিল্পী ও ফ্যাশন ডিজাইনার আমিনুল ইসলামের ঝিনাইদহের গাছবাড়িতে গিয়েছিলাম গত বছরের মার্চে। সেখানে প্রায় আড়াই শ গাছে টপিয়ারি রীতির এক অনন্য শৈলীর উদ্যান রচনা করেছেন তিনি। উদ্যানের এই শিল্পমাধ্যম আমাদের মুগ্ধ করল। বাগানের প্রবেশমুখেই ছোট্ট একটি অংশে এর অবস্থান। পুরো বাগানেই শিল্পবোধ আর ভালোবাসার অপূর্ব সমন্বয় লক্ষ করা যায়। মাত্র ১৩ বছরের ব্যবধানে আমিনুল ইসলাম এই উদ্যানে ৫০০ প্রজাতির প্রায় ১০ হাজার উদ্ভিদের সমাবেশ ঘটিয়েছেন।

বাড়িভর্তি গাছগুলো দেখতে দেখতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামল। ভোরে ঘুম ভাঙল বিচিত্র পাখিদের সুমধুর কলতানে। ভোরের স্নিগ্ধতা গায়ে মেখে বারান্দায় এসে দাঁড়াই। আশপাশের গাছগুলোতে চোখ রাখি। হঠাৎ হলুদ রঙের একগুচ্ছ ফুলে চোখ আটকে গেল। গাছে কোনো পাতা নেই। শুধু কিছু ফুল আর কলি। অচেনা ফুল। আগে কখনো দেখিনি। পরে বই দেখে নিশ্চিত হই, এটি মেক্সিকান বাটারকাপ ট্রি। কোথাও কোথাও ব্রাজিলিয়ান রোজ বা ওয়াইল্ড কটন নামেও পরিচিত।

সম্প্রতি ফুলটি আবার দেখি মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রামকৃষ্ণদী গ্রামে। সেখানে কাজী গার্ডেনে গাছটি রোপণ করেন বৃক্ষপ্রেমী ও প্রকৌশলী কাজী কামাল উদ্দিন ইকরাম।

মেক্সিকান বাটারকাপ মাঝারি আকৃতির পাতাঝরা গাছ (Cochlospermum vitifolium)। ৫ থেকে ১২ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। কাণ্ডের ব্যাস ৫ থেকে ১০ সেন্টিমিটার। স্বল্প শাখা-প্রশাখা সূক্ষ্মভাবে মখমল-লোমশবিশিষ্ট। পাতা ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে, ৩ থেকে ৫ পত্রী। কিনারা প্রায় সম্পূর্ণ এবং নিচে মধ্যশিরাবিশিষ্ট, ওপরের পিঠ চকচকে এবং লোমহীন, নিচের পিঠ কিছুটা ফ্যাকাশে।

ফুলগুলো উজ্জ্বল হলুদ, একাকী এবং বড়, ১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত চওড়া। দেখতে অনেকটা গোলাপের মতো হলেও একই পরিবারভুক্ত নয়। এই গাছ পশ্চিম মেক্সিকো থেকে মধ্য আমেরিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর অংশ, ইকুয়েডর, পেরু, বলিভিয়া, ব্রাজিল, গায়ানা এবং ত্রিনিদাদ পর্যন্ত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে জন্মে। মেক্সিকোতে এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার মিটার পর্যন্ত উষ্ণ, আধা-উষ্ণ এবং নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় লাগানো হয়। সাধারণত টিলা, ম্যানগ্রোভ প্রান্ত, তৃণভূমি, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় পর্ণমোচী বা উপ-পর্ণমোচী বন, বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদের বন, সমতল বা পাহাড় এমনকি পাইন বনের ধারও এই উদ্ভিদের জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।

মেক্সিকান বাটারকাপ ফুল দেখতে অনেকটা গোলাপের মতো হলেও একই পরিবারভুক্ত নয়.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চুরির অপবাদ দেওয়ায় শরীরে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা, দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে

কুমিল্লার চান্দিনায় চুরির অপবাদ দেওয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার এক চালক শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চান্দিনা উপজেলা সদরের সরকারি হাসপাতালসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মো. সবুজ নামের ওই চালককে চান্দিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, আগুনে সুবজের শরীরের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সবুজ চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা ইউনিয়নের গড়ামারা গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চান্দিনা উপজেলা সদরের বেলাশহর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চান্দিনা সদরের হাসপাতাল সড়কের ইউনুছ মিয়ার অটোরিকশা গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে সবুজসহ তিনজন ওই গ্যারেজে তাঁদের অটোরিকশা রাখেন। পালাক্রমে তাঁরা তিনজন পাহারাও দেন। প্রায় চার মাস আগে এক রাতে পাহারার দায়িত্ব ছিলেন সবুজ। ওই দিন রাত আনুমানিক দুইটার দিকে গ্যারেজে তালা দিয়ে সবুজ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যান। ওই সময় চোরচক্র দুটি অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন ওই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মানিক নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়। সেদিন রাতেই পুলিশ মানিককে ছেড়ে দেয়। পরে স্থানীয় কয়েকজন মাতবর সবুজকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু সবুজ জানান, তিনি ওই রায় মানেন না এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার ক্ষমতাও তাঁর নেই।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় কয়েকজন মাতবরের প্ররোচনায় সালাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি সবুজকে আটক করে তাঁর অটোরিকশা নিয়ে যান। এ সময় তাঁকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে চাপ দেওয়া হয়। একপর্যায়ে সে প্রকাশ্যে শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

সুবজের স্ত্রী খুশি আক্তার বলেন, ‘মাতবররা চোর ধরে ছেড়ে দিছে আর আমার স্বামীরে চুরির অপবাদ দিয়ে জরিমানা করেছে। আমার স্বামী চোর আখ্যা দেওয়ার এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গরিবের জন্য আইন নাই, বিচার নাই। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

গতকাল রাতে চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবেদ উল ইসলাম বলেন, ‘অটোরিকশা চুরির ঘটনায় সময় মানিক, সাইফুল ও নাজমুল নামের তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা হয়। ওই চুরির ঘটনায় সবুজকে দায়ী করে চাপ সৃষ্টি করলে সে অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জেনেছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ